টিকটকের ভিডিও বানাতে ক্যামেরার জন্য ফাঁদে ফেলে যেভাবে ফটোগ্রাফার নুরুলকে হত্যা করা হয়
Published: 21st, May 2025 GMT
তরুণদের এই দলটি মূলত মুঠোফোনে বিভিন্ন ভিডিও ধারণ করে সেটি টিকটকে পোস্ট করে। আরও ভালো মানের ভিডিও করার জন্য তাদের একটি উন্নত ক্যামেরা প্রয়োজন ছিল। এ জন্য তারা উন্নত মানের ক্যামেরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। তাই ফেসবুকে ফটোগ্রাফার নুরুল ইসলামের পেজ ঘুরে তাঁকে লক্ষ্যবস্তু বানায়। তারপর বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তোলার জন্য নুরুল ইসলামকে অনুরোধ জানানো হয়। নুরুল রাজি হওয়ার পর তরুণেরা বিকাশে ৫০০ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করে। পরদিন সন্ধ্যায় তাঁকে একই মুঠোফোন নম্বর থেকে যোগাযোগ করে ধানমন্ডির শংকর চৌরাস্তায় আসতে বলা হয়। এরপর তাঁকে কুপিয়ে হত্যার পর দুটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় তারা।
ঢাকার হাজারীবাগের জাফরাবাদ এলাকায় এই হত্যার ঘটনাটি ঘটে ১৬ মে সন্ধ্যায়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা ও ময়মনসিংহ এলাকা থেকে ১০ তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।
ফটোগ্রাফার নুরুল ইসলাম হত্যার সর্বশেষ অবস্থা জানাতে আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মাসুদ এ কথাগুলো বলেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তরুণদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নুরুল ইসলামের কাছ থেকে উন্নত মানের ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নেওয়া। নুরুল ইসলাম তাঁর সহকারীকে (ইমন) নিয়ে রিকশায় করে যখন জাফরাবাদে যান, তখন তরুণদের দলটি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ইমন রিকশা থেকে নেমে দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। আর নুরুল ইসলাম ক্যামেরাটি দিতে চাননি। এ সময় তরুণদের দলটি তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নেয়।
নিহত আলোকচিত্রী নুর ইসলাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঈশ্বরদীতে সংঘর্ষের ঘটনায় জামিন পেলেন জামায়াত প্রার্থী তালেব
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া মামলায় জামিন পেয়েছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলসহ ৩২ নেতাকর্মী।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা আমলী আদালত-২ এ হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন তারা। সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট মো. তরিকুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত
কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ৩
পাবনা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জামায়াতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ খান এহিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়। মামলায় জামায়াতে জেলা আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়। আজ সোমবার দুপুরে মামলার সব আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।”
জামিন পাওয়ার পর পাবনা জামায়াত প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, “আমাদের আইনজীবীরা সত্য উদঘাটন করেছেন। তারা কোর্টকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি করার জন্য একজন এমপি প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। অসংখ্য গাড়ি ভাঙা হয়েছে, গুলি করা হয়েছে। আমাদের অনেক ভাইকে আহত করা হয়েছে।” এই মামলা দ্রুত প্রত্যাহার দাবি জানান তিনি।
গত ২৭ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি গ্রামে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। জামায়াতের দাবি, হামলার সময় ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং প্রায় ৪০টি মোটরসাইকেল লুট করে নিয়ে যায় বিএনপির কর্মীরা।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে জামায়াত ও বিএনপি। এর মধ্যে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধার ছেলে বাঁধন হাসান আলিমের করা মামলায় পাবনা-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ৩২ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।
অপরদিকে, ঈশ্বরদী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে একই থানায় ৩৮ জন বিএনপির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধাকে। এই মামলায় ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ