জাতীয় দলের পেসার নাহিদ রানা কিছুদিন আগে পাকিস্তানে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন। সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরলেও, সেই অভিজ্ঞতায় তিনি মানসিকভাবে ‘ট্রমাটাইজড’। তাই জাতীয় দলের সঙ্গে আবার পাকিস্তান সফরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানিয়েছেন, পিএসএল থেকে ফেরার সময়কার অভিজ্ঞতার কারণেই পাকিস্তানে যেতে অনিচ্ছুক নাহিদ।

মিরপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল আবেদীন বলেন, “যে ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে নাহিদ রানা ও রিশাদকে, তা যদি কাউকে ট্রমাটাইজ করে, তাহলে তাকে দোষ দেওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণেই সম্ভবত ও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, কিছুটা অস্থিরতা থাকতেই পারে, সেটিই হয়তো তার বিবেচনায় এসেছে। যেহেতু নাহিদ রানা আগেও ওখানে ছিল, স্বাভাবিকভাবেই অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেটিই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিতে তাকে প্রভাবিত করেছে।”

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানে পাঁচ দিনে বাংলাদেশের তিন টি-টোয়েন্টি

বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের দল ঘোষণা, নেই বাবর-শাহিন-রিজওয়ান

নাহিদ না গেলেও, একই সফরে তার সঙ্গে থাকা রিশাদ হোসেন পাকিস্তানে যাচ্ছেন। রিশাদকে নিয়ে বলতে গিয়ে নাজমুল আবেদীন বলেন, “রিশাদও শুরুতে দ্বিধায় ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আমাদের প্রধান কোচ নিজে যাচ্ছেন — সেটি হয়তো অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করেছে অন্যভাবে চিন্তা করতে এবং দলের সঙ্গে যেতে।”

খেলোয়াড়দের অনেকের মধ্যেই কিছুটা অস্বস্তি ছিল বলে জানিয়েছেন নাজমুল আবেদীন। মোস্তাফিজুর রহমান আইপিএল খেলতে ভারতে আছেন এবং সেখান থেকেই দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।

বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং কোচ জেমস প্যামেন্ট এবং স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ ন্যাথান কেলি পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাজমুল আবেদীন বলেন, “অন্য দুজন (কেলি ও প্যামেন্ট) এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হতে চান না। তারা এই ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে চায় — এটিই তাদের সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান কারণ।”

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ২৫ মে লাহোর যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ২৮ মে, ৩০ মে ও ১ জুন অনুষ্ঠিত হবে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

নাহিদের বদলি হিসেবে কাউকে দলে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিসিবির এই পরিচালক।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা: সেনাপ্রধান

মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বুধবার সকালে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় (অফিসার্স অ্যাড্রেস) মব ভায়োলেন্স, সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন, অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কারসহ নানা প্রশ্নের উত্তর দেন সেনাপ্রধান। এ সময় তিনি এ কথা জানান। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ বিষয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। পরে যোগাযোগ করা হলে আইএসপিআর কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানায়।  

ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত এ সভায় ঢাকার বাইরের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত সূত্রগুলো জানায়, অফিসার্স অ্যাড্রেসে প্রথমে সেনাপ্রধান বক্তব্য রাখেন। এরপর বিভিন্ন ইউনিট থেকে যেসব কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন তাদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন সেনাপ্রধান। 

সভায় শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। আগামী  ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিরলস ভূমিকা ও প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন সেনাপ্রধান। সেনা কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও আনুগত্য বজায় রাখারও আহ্বান জানান তিনি।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে মানবিক করিডোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে। এটি হতে হবে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। করিডোরের ব্যাপারে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়ও এখানে যুক্ত।  

সেনাপ্রধান বলেন, আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তাঁকে ও বাহিনীকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। 

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর– এমন কোনো কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনও যুক্ত হবে না।  কাউকে তা করতেও দেওয়া হবে না। এই বাস্তবতায় সব পর্যায়ের সেনাসদস্যকে নিরপেক্ষ থাকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। আগামীতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান। 

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব। সামনে ঈদ। মানুষ যেন নিরাপদে ঈদ উদযাপন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতে হবে। 

বাংলাদেশ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলা হয়নি। আমাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। 

নির্যাতিতদের অধিকারের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন সেনাপ্রধান। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্যের পর এক ঘণ্টাব্যাপী প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। একজন কর্মকর্তা বিভিন্ন অভিযোগে বরখাস্ত সেনাসদস্যদের অপরাধের বিষয়গুলো আইএসপিআরের মাধ্যমে প্রকাশ করার কথা জানান।  

বন্দর নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল ওয়াকার বলেন, এখানে স্থানীয় মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামত প্রয়োজন হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমে। সংস্কার নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে– এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ