দেশের ৮০ শতাংশ বাজার দখল করে আছে দেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজ
Published: 21st, May 2025 GMT
প্রথম আলো:
বর্তমানে ফ্রিজের বাজারে দেশি ও বিদেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে প্রতিযোগিতা কেমন?
জুলহক হোসাইন: দেশি–বিদেশি দুই ধরনের ব্র্যান্ডের গ্রাহকই বাংলাদেশে আছেন। তবে দেশি ব্র্যান্ড বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে।
প্রথম আলো:ক্রেতারা সাধারণত কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করে দেশি বা বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য বেছে নেন?
জুলহক হোসাইন: আমাদের দেশের ক্রেতারা ফ্রিজ কেনার সময় যে বিষয়গুলো বিবেচনা করেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, ফ্রিজের ভেতরের স্পেস বা জায়গা কতটুকু, খাবার কত দিন ফ্রেশ থাকবে আর দামটা সাধ্যের মধ্যে আছে কি না।
প্রথম আলো:দাম ও প্রযুক্তির দিক থেকে দেশি ও বিদেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজের মধ্যে পার্থক্য কী?
জুলহক হোসাইন: প্রযুক্তির দিক থেকে দেশি ফ্রিজগুলো বিদেশি ফ্রিজের চেয়ে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই; বরং বিদেশি ফ্রিজগুলোর অধিকাংশই তৈরি হয় আমাদের দেশের চাহিদা বিবেচনা না করে। অন্যদিকে আমরা যারা দেশে ফ্রিজ তৈরি করছি, যেমন কনকা—নিজেদের প্রয়োজন ও চাহিদার বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখে উন্নত মানের প্রযুক্তি সংযোজন করা হচ্ছে এবং দামও ক্রেতার সাধ্যের মধ্যে রাখা হচ্ছে।
প্রথম আলো:কোন ধরনের ফিচার বা সুবিধা বিদেশি ফ্রিজে পাওয়া যায়, যা সাধারণত দেশি ফ্রিজে থাকে না?
জুলহক হোসাইন: বর্তমানে আমাদের দেশে যে ফ্রিজগুলো তৈরি হচ্ছে, সেগুলোর ফিচার বিদেশি ফ্রিজের সঙ্গে তাল মিলিয়েই তৈরি হচ্ছে; বরং চাহিদা বিবেচনায় দেশি ফ্রিজগুলো অনেক দিক থেকেই এগিয়ে।
প্রথম আলো:দেশি ফ্রিজে বিক্রয়োত্তর সেবার ক্ষেত্রে কোন সুবিধাগুলো বেশি পাওয়া যায়?
জুলহক হোসাইন: দেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজে বিক্রয়োত্তর সেবা নিয়ে তেমন কোনো ভোগান্তি নেই। কারণ, এসব পণ্য দেশেই তৈরি হয়, তাই যেকোনো সমস্যা হলে দ্রুত সমাধান দেওয়া যায়। অন্যদিকে বিদেশি ফ্রিজে অনেক সময় পার্টসের অভাবে গ্রাহকদের দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়।
অত্যাধুনিক ফিচার ও নান্দনিক ডিজাইনের কারণে ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে কনকা রেফ্রিজারেটর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল
এছাড়াও পড়ুন:
আমাকে মেয়র ঘোষণা করায় বিচারককে হুমকি দিয়েছিলেন এক উপদেষ্টা: ইশরাক
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের ফল বাতিল করে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে মেয়র ঘোষণার পর আদালতের বিচারককে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
তিনি বলেন, ‘নিম্ন আদালত থেকে যখন রায়টি হয় তখনই সরকারের একজন উপদেষ্টা জজ সাহেবকে ফোন করেন। কেন এই রায়টি দেওয়া হলো তা জানতে চেয়ে বিচারককে এক ধরনের হুমকি প্রদান করে। যেহেতু অফিশিয়াল প্রমাণ নাই এ কারণে এতদিন সবাইকে কিছু বলি নাই। কিন্তু পরবর্তীতে এরকম রিপোর্ট পেয়েছি।’
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার প্রবেশমুখ কাকরাইল মসজিদ মোড়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ইশরাক হোসেন।
ডিএসসিসির মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে মৎস্য ভবনে অবস্থান করা সমর্থকরা সন্ধ্যার পর চলে গেলেও কাকরাইলের সড়কে এখনও আছেন বাকিরা। সন্ধ্যার পর সমর্থকদের সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন এই বিএনপি নেতা। মধ্যরাতেও বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা।
ইশরাক হোসেন বলেন, রায়টি নির্বাচন কমিশনে পাঠানোর পর তাদের বিজ্ঞ আইনজীবী প্যানেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। তারপর পুরো কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া যেতে পারে। আমরা শুনেছি উপদেষ্টাদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ ফোন করে চাপ প্রয়োগ করেছে ফাইলটি যেন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে যখন গেল তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখলো এখানে মতামত দিলে আমার পক্ষেই দিতে হবে; বিপক্ষে দেওয়ার সুযোগ নেই। যার কারণে আইন মন্ত্রণালয় কালক্ষেপণ করলো মতামত দিল না। তখন নির্বাচন কমিশনের যে ১০ দিনের সময়সীমা, তার মধ্যে তারা গেজেট প্রকাশ করল। এরপর নির্বাচন কমিশন, আইন মন্ত্রণালয়সহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আমি যাতে শপথ নিতে না পারি, তাতে তারা হস্তক্ষেপ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা—আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে ইশরাক বলেন, এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জনগণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
এই উপদেষ্টা পরিষদ বহাল থাকা অবস্থায় সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সঠিক নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন ইশরাক। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদকে রদবদল করতে হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে আদালতের রায় পাওয়ার পর থেকে পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ করতে গিয়ে এখানে প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান সরকার পুরোপুরি নিরপেক্ষ নন। এখানে বিভিন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন, যারা বিশেষত বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ করছেন এবং আমাদের বাধাগ্রস্ত করছেন। এ রকম একটি রাজনৈতিক মনোভাবসম্পন্ন অথবা একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি সফট কর্নার রয়েছে এ রকম যদি একটি সরকার থাকে, তাদের অধীনে কোনো দিনও নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে, উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে তারা তাদের দলে গিয়ে রাজনীতি করুক, সংগঠন করুক, তাদের স্বাগতম, কোনো সমস্যা নাই।
এর আগে সন্ধ্যায় ইশরাক বলেন, এই সরকারের মধ্যে নতুন দলের কয়েকজনের রয়ে গেছে। এই দলের প্রতি আমাদের অনেকে আশাবাদ ছিল। তাদের দু’জন উপদেষ্টা এই সরকারে থেকে অনেক কিছুতে হস্তক্ষেপ করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাকে মেয়র হিসেবে আদালতের দেওয়া রায়ের ওপর তারা হস্তক্ষেপ করছে। এখনই স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করছি। তাদের সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত পরিচয় নেই, কোনো শত্রুতা নেই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করে সরকার। অন্যদিকে চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে গত সিটি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি।