চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

বুধবার (২১ মে) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন চবির নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল আদন নুসরাত বলেন, “নারী যে অধিকার পাচ্ছে, তা আপনারা নিশ্চিত করতে পারছেন না, কোর্টে দীর্ঘসূত্রিতা কমছে না, সম্পত্তিতে নারী অধিকার বুঝে নিতে গেলে তাকে নেতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। এসব নিয়ে আপনারা গঠনমূলক ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু দেখা গেছে, গঠনমূলক ভূমিকা না রেখে আপনারা ধ্বংসাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আপনারা কী নারীর অধিকার চান, নাকি শুধু ধর্মকে নারীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চান?”

আরো পড়ুন:

১৯ বছর পর বোদা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন 

জেলা প্রশাসক পদায়নে ৩ কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ 
একটি মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ: নওগাঁর ডিসি

তিনি বলেন, “নারী সংস্কার কমিশনের মতে, ধর্ম নারীর প্রতি বৈষম্য করছে। তাই ধর্মীয় আইনের পাশাপাশি তারা সিভিল ‘ল’-ও চাচ্ছেন। একই পরিবারের দুইজন সন্তানের মাঝে একজন সিভিল ‘ল’ আরেকজন ইসলামী আইনে সম্পদের ভাগ চাইলে আপনি কীভাবে সমাধান করবেন? যে দেশে প্রচলিত আইনে নারী তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইতে গেলে নেতিবাচকভাবে নেওয়া হয়, সঠিক বাস্তবায়ন নেই, সে দেশে এই ধরনের ধ্বংসাত্মক আইন কেনো?”

তিনি আরো বলেন, “একজন নারী শুধু তার পিতা থেকেই সম্পত্তি পান না, বরং স্বামী, ভাই এমনকি সন্তানসহ অন্যান্যদের কাছ থেকেও পান। তাই আমরা উত্তরাধিকারে নারীর সমান ভাগ চাই না। বরং সঠিক যে অধিকার ইসলাম নারীদের দিয়েছে, সেটিই চাই।”

সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নওশিন নাওয়াল ফাতিমা বলেন, “সংস্কার কমিশনে শব্দের লুকোচুরিতে ট্রান্সউইমেনকেও নারী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের ষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি মৈত্রী যাত্রার আড়ালে এসব ট্রান্সজেন্ডারকে আমরা সক্রিয় হতে দেখেছি। ট্রান্সজেন্ডারদের স্বীকৃতি নারীর প্রতি চরম অবমাননার শামিল। জুলাইয়ের বাংলাদেশে এমন কিছু বাস্তবায়ন আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না।”

দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামসুন্নাহার মিতুল বলেন, “নারী সংস্কার কমিশনের এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখা উচিত, যেখানে নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রকৃত ইনসাফ বিদ্যমান থাকবে। কিন্তু উত্তরাধিকার আইনে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিকতা, যৌনকর্মীদের শ্রমিক স্বীকৃতি প্রদান, ম্যারিটাল রেইপ আইন, ট্রান্সজেন্ডার নারীদের স্বীকৃতির কৌশল অবলম্বন প্রভৃতি প্রস্তাবনা বাঙালি মুসলিমদের মূল্যবোধ ও চিন্তার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।”

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “তাদের এই প্রস্তাবিত মডেল কি আমাদের দেশের প্রথা, সংস্কৃতি, সামাজিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস ইত্যাদির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? এ ক্ষেত্রে তাদের কোনো ডেটা বা রিসার্চ ফাইন্ডিংস আছে কি?”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

যশোর ডিসি অফিসে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সাহায্য চাওয়া নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড

যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা চাইতে গিয়ে কর্মচারীদের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তি। কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পক্ষ নিলে কর্মচারীরা পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটকে রাখেন। পরে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম অভিভাবকদের ডেকে তাঁদের হাতে শিক্ষার্থীদের তুলে দিয়ে বিষয়টি সমাধান করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে আজ বুধবার দুপুরে। প্রতিবন্ধী ওই ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম (৪৫)। তাঁর বাড়ি যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া এলাকায়। তাঁর পক্ষ নিয়ে আটক হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ, মুসলিম একাডেমি ও যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানির দিন ছিল। এ সময় শারীরিক প্রতিবন্ধী মনিরুল ক্রাচে ভর দিয়ে আর্থিক সহায়তা চাইতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) অফিসকক্ষের সামনে যান। এ সময় অফিস সহকারী বাবুল আক্তার মনিরুলকে জানিয়ে দেন, ‘স্যার মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন। পরে আসেন।’ এ সময় মনিরুল বিরক্ত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে কিছু কটুকথা বলেন। তখন বাবুল ওই ব্যক্তির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে মনিরুল হাতে থাকা ক্রাচ দিয়ে বাবুলকে আঘাত করেন। অন্য একজন কর্মচারী এগিয়ে গিয়ে মনিরুলকে জাপটে ধরলে তাঁর হাত কামড়ে দেন।

এ সময় ওই চত্বরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী বসে গল্প করছিল। হট্টগোল দেখে তারা প্রতিবন্ধী মনিরুলের পক্ষ নিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে কথা–কাটাকাটিতে জড়ায়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নেজারত শাখায় গিয়ে লাঠিসোঁটা দিয়ে টেবিলে আঘাত করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঁচজনকে নেজারত শাখায় আটকে রাখেন কর্মচারীরা। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছিলেন ওই চত্বরে। তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম অভিভাবকদের ডেকে মুচলেকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি বুধবার বিভিন্ন বিষয়ে গণশুনানি হয়। ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি গণশুনানিতে আসেন। তিনি সহায়তা চাইলে কর্মচারী তাঁকে একটু পরে আসতে বলেন। তখন ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে ক্রাচ দিয়ে এক কর্মচারীকে আঘাত করেন। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী মব করে কর্মচারীদের ওপর হামলা করে। পরে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকে তাদের অভিভাবকদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। গণশুনানির দিনে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রায়ই ঘটে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

নেজারত শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিদুজ্জামান বলেন, ‘১০-১৫ জন শিক্ষার্থী আমাদের কক্ষে হামলা চালায়। তাদের মধ্যে একজনের হাতে বাঁশ ছিল। সে আমাদের কক্ষের দরজা ও জানালায় আঘাত করে।’

আটক হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী জানায়, তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে থাকার সময় দেখে অসহায় এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে কয়েকজন ধরে মারধর করছেন। এগিয়ে গিয়ে জানতে পারে, যাঁরা মারছেন তাঁরা জেলা প্রশাসকের কর্মচারী। তখন এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন। এ জন্য আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, দুজনের স্থায়ী বহিস্কার বহাল
  • গরমেও কেন নাক বন্ধ থাকে
  • নারী কমিশন নিয়ে গালাগাল আলোচনাকে খারাপ দিকে নিয়ে গেছে: ফরহাদ মজহার
  • সিলেটে বিএনপি নেতার ফোনে আ.লীগের সাবেক মেয়রের ‘কল’, ফেসবুকে সমালোচনা
  • যশোর ডিসি অফিসে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সাহায্য চাওয়া নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড
  • সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে: ফখরুল
  • সাতক্ষীরায় সাবেক এমপি লায়লা পারভীন কারাগারে
  • কুষ্টিয়ায় সাবেক যুবদল নেতার পরিত্যক্ত ঘরে মিলল অস্ত্র
  • সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে: মির্জা ফখরুল