মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান জরুরি: সারা হোসেন
Published: 21st, May 2025 GMT
‘মব সন্ত্রাসের’ মতো ঘটনা এখন আর নতুন কিছু নয়। অনেক মাস ধরেই এ ধরনের অপরাধ দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতাহীন মানুষ, নারী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ—বিভিন্ন গোষ্ঠী এসব সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এটি উদ্বেগজনক। আমরা একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। নানা ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে আছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা দাবি করার অধিকার রয়েছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা আগের চেয়ে কিছুটা সীমিত হতে পারে, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া জরুরি যে তারা কোনোভাবেই ‘মব সন্ত্রাসকে’ সমর্থন করে না। আমরা এটি শুনতে চাই, সরকার মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে এসব অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে জনসমক্ষে উপস্থাপন করা উচিত। ন্যূনতম জবাবদিহির ব্যবস্থা না থাকলে বিচারবহির্ভূত আচরণের সংস্কৃতি আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে। একই সঙ্গে আজ অবধি যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেসব বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়েও পরিষ্কারভাবে বলা উচিত।
গণ-অভ্যুত্থানের প্রায় ১০ মাস হতে চললেও হয়রানিমূলক গ্রেপ্তার-মামলার খবর গণমাধ্যমে প্রায়ই দেখছি। এগুলো উদ্বেগজনক। অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার ক্ষেত্রে আমরা দেখলাম, তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে আবার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জামিন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই অল্প সময়ে একবার তাঁকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো। এ ধরনের ঘটনায় যদি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে মনে হবে কোনো ক্ষেত্রে টনক নড়ে আর কোনো ক্ষেত্রে হয়রানি চলতেই থাকে। এতে বোঝা যায় না, সবার জন্য একই মানদণ্ড প্রযোজ্য হচ্ছে কি না।
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু যেভাবে হয়রানিমূলক মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে, তাতে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে যে বিচারব্যবস্থা আসলে কী নিয়ে ব্যস্ত? বিচারপ্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীদের মতামত ও অংশগ্রহণ করা যেমন জরুরি, তেমনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ বন্ধ করাও সমানভাবে প্রয়োজন।
আমরা ক্রান্তিকালীন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এটি আমলে নিয়ে এই সংকটময় সময়ে সরকারের উচিত জনসাধারণকে স্পষ্টভাবে জানানো, বর্তমানে কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে এবং সামনে কী হবে। কিন্তু সরকারের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগে স্বচ্ছতায় ঘাটতি আছে বলেই মনে হচ্ছে। মানুষের মধ্যে যে আশঙ্কা-সংশয়, সেগুলোকে সরাসরি স্বীকার করে জনগণকে জানানো দরকার। অভিযোগ ও উদ্বেগ জানানোর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য কাঠামোও থাকা জরুরি।
লেখক: সারা হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অভিযানে আটকের পর হ্যান্ডকাপসহ পালাল ২ যুবক
বরিশাল নগরীতে আটকের পর হ্যান্ডকাপ পরা অবস্থায় পালিয়েছেন দুই যুবক। গতকাল বুধবার বিকেল ৩টার দিকে নগরের ভাটিখানা সাহাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে পুলিশ পলাতকদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু করে। তবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তাদের আটক করা যায়নি।
পলাতক যুবকরা হলেন- মিরাজ ইসলাম ও রাসেল।
কাউনিয়া থানার সহকারী কমিশনার মো. মশিয়ার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মাদক বিরোধী অভিযানে পাঁচজনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে দুজন হ্যান্ডকাপসহ পালিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হবে।
জানা গেছে, নগরীর সাহাপাড়া তালুকদার বাড়ি এলাকা থেকে মাদকসহ নাসির, মামুন, আল-আমিন, মিরাজ ও রাসেল নামক পাঁচজনকে আটক করা হয়। দুজনকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে পুলিশের মোবাইল টিমের হাতে দেওয়া হয়। অভিযানকারী দল অপর তিনজনকে নিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিল। পেছনে মোবাইল টিমের সঙ্গে থাকা হ্যান্ডকাপ পরা মিরাজ ও রাসেল কৌশলে পালিয়ে যান।