রাজশাহীতে ব্যক্তিমালিকানার ২৪টি গরু হাটে নেওয়ার সময় জব্দ করে কাস্টমস অফিসে সোপর্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে গরুর মালিক ও হাট ইজারাদাররা রাজশাহী বিজিবি অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তারা রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে গরু মালিকদের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে বিজিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে। গরুগুলো যে দেশি, তার প্রমাণ দেখাতে না পেরে ফিরে যান।

গরুর ব্যবসায়ী ও হাট ইজারাদাররা জানান, বুধবার সকালে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে তারা বিভিন্ন গ্রাম ও হাট থেকে গরু কিনে ছাড়পত্রসহ চারটি যানবাহনে করে যাচ্ছিলেন। রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগধানী, বাগসারা ও দুয়ারী এলাকায় বিজিবি অভিযান চালিয়ে গরুগুলো জব্দ করে। ২৪টি গরু বিজিবির সদরদপ্তরে রাখা হয়েছে। এ খবর পেয়ে ব্যবসায়ীরা দুপুরের দিকে জড়ো হন বিজিবির সদরদপ্তরে। তাদের সঙ্গে হাটের বিভিন্ন পর্যায়ের ইজারাদার ও অন্য গরু ব্যবসায়ীরাও যোগ দেন। তারা সেখানে স্লোগান দেন। পরে বিজিবির সদস্যরা তাদের মহাসড়ক ছেড়ে দিতে বলেন। এক পর্যায়ে তারা রাস্তা ছেড়ে দেন।

গরু ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম জানান, সকালে পবার দুয়ারী মোড় দিয়ে তানোর থেকে সিটি হাটে গরু আনছিলেন। তাদের গাড়িতে আটটি গরু ছিল। গরুগুলো তারা তানোরের বিভিন্ন গ্রামের চাষিদের কাছ থেকে কিনেছেন। ছোট বাছুর হাট থেকে কিনে বাড়িতে লালনপালন করে বড় করেছেন। সেগুলো ভারতীয় বলে জব্দ করেছে বিজিবি।
 
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজশাহী বিজিবির অধিনায়ক লে.

কর্নেল হাসিবুল হকের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে সাড়া মেলেনি। বিজিবির মুখপাত্রের নম্বরে ফোন করলে একজন হাবিলদার রিসিভ করেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, এগুলো ভারতীয় গরু। দেখেই চেনা যায়। ভুয়া কাগজ বানিয়ে হাটে তোলা হয়েছিল। পরে সিটি হাট সভাপতি শওকত আলী, ইজারাদার মামুন মুরাদ পারভেজ ও রুহুল আলম টুনু এসে সিইও স্যারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা দেশি গরুর পক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তাই ফিরে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, গরুগুলো ভারত থেকে চোরাই পথে আনা। জব্দ করা গরুগুলো আইন মেনে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইজ র দ র ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে অব্যহতি পাওয়া এসআইদের মানববন্ধন

চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেছেন ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ (ক্যাডেট) উপ-পরিদর্শকরা (এসআই)।

আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে পুলিশ সদরদপ্তরের সামনের সড়কের এক পাশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়। মানববন্ধন শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। স্লোগানের মধ্যে ছিল—‘এক বছরের পরিশ্রম, বৃথা কেন জানতে চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই, চাকরি পুনর্বহাল চাই’, ‘রাষ্ট্রের বোঝা নয়, সেবক হতে চাই’, ‘বেতন ছাড়া ৩৬৫ দিন, আমার চাকরি ফিরিয়ে দিন’, ‘লাল সবুজের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, প্রশিক্ষণরত অবস্থায় গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যে ‘অযৌক্তিক’ কারণ দেখিয়ে চার ধাপে ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তাদের দেওয়া হয়নি। চাকরি ফিরে পেতে তারা গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি স্থগিত করছিলেন। সে সময় দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দাবি মানা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা আবার আন্দোলনে নেমেছেন।

অব্যাহতি পাওয়া রুবেল চন্দ্র দাস বলেন, ‘অযৌক্তিক কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ছয় মাস ধরে আমরা দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু আমাদের কথা কেউ শুনছে না। সচিবের পক্ষ আমাদের আশ্বাস দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছি। এ জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টারের সামনে এসেছি, যাতে আইজিপি আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করেন।’

অব্যাহতি পাওয়া আরেক এসআই রকিবুল হাসান বলেন, ‘চাকরি না থাকায় পরিবার নিয়ে বিপাকে আছি। এখন আমাদের দেশের সেবা করার কথা, কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। তাই আমরা চাকরি ফিরে পেতে আইজিপি মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে চার ধাপে ৪০তম ব্যাচের ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নাশতা না খেয়ে হট্টগোল, প্রশিক্ষকের আদেশ না শোনা, অমনোযোগিতার মতো কারণ দেখানো হয়। অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকে তাঁরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে অব্যহতি পাওয়া এসআইদের মানববন্ধন