Samakal:
2025-07-07@00:33:10 GMT

পানির তোড়ে ভেঙে গেল সড়ক

Published: 21st, May 2025 GMT

পানির তোড়ে ভেঙে গেল সড়ক

পানির তোড়ে হিলি-ঘোড়াঘাট সড়কে নির্মাণাধীন সেতুর তিনটি বিকল্প রাস্তা ভেঙে পড়ায় দু’দিন ধরে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বাস-ট্রাকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াতকারীদের।

হাকিমপুর উপজেলার জালালপুর তুলসীগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতু, বাওনা সেতু ও ডুগডুগির হাট সেতুর পাশের সড়ক ভেঙে এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

সড়ক ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে ঠিকাদারকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, হিলি-ঘোড়াঘাট সড়ক প্রশস্তকরণসহ ২৯টি সেতু পুনর্নির্মাণ কাজ চলছে। ঠিকাদার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে মাটি ভরাট করে সেতুগুলোর বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করেছেন। টানা বৃষ্টির কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি বের হতে না পেরে কৃষকের বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে। ধান বাঁচাতে উপায় না পেয়ে রাস্তার কিছু অংশ কেটে দেওয়া হয়। পানির তীব্র গতির করণে রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে।

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বৃষ্টি ও কৃষকের ওপর দায় চাপিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন। তিনি বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানি নেমে যেতে পারেনি। এতে ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। ক্ষুব্ধ কৃষকরা বিকল্প রাস্তা ভেঙে দেওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এদিকে সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। বিকল্প গ্রামীণ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে ১০ মিনিটের গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগছে ১ ঘণ্টারও বেশি। সেখানেও যানজটের পাশাপাশি ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ভাড়া গুনতে হচ্ছে তিনগুণ।

বাংলা হিলি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার মহিমা জানায়, তার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব তিন কিলোমিটার। প্রতিদিন স্কুলে আসতে ১০ টাকা অটো ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু জালালপুর সেতুর পাশের রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় মোল্লাবাজার দিয়ে অটোতে আসতে হয়েছে। এতে ১৫ মিনিটের রাস্তা আসতে ১ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। আর ভাড়া গুনতে হয়েছে ৩০ টাকা।

দিনাজপুর বাস-মোটর শ্রমিক পরিবহন ইউনিয়নের হাকিমপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন বলেন, ঠিকাদার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে মাটি ভরাট করে বিকল্প রাস্তা তৈরি করেছে। বর্ষায় সেই  রাস্তা ভেঙে গেছে। এর দায় ঠিকাদার, সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারেনা। তিনি আরও বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। দু’দিন হলো বাস চলাচল বন্ধ। শ্রমিকদের না খেয়ে থাকার উপক্রম। 

রাউতার গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন চার বিঘা বোরো ধান চাষ করেছিলেন। ফলন ভালো হয়েছে। সপ্তাহ খানেক পর ফসল ঘরে তুলবেন এমন আশা ছিল তাঁর। কিন্তু সেতুর পাশের রাস্তায় পানি জমে ধান তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় জানান, ফসল বাঁচাতে জালালপুর সেতুর সামনের রাস্তার সামান্য অংশ কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানির গতি তীব্রতার কারণে সেটি এখন অনেকটা ভেঙে গেছে। ঠিকাদার ও সওজ কর্তৃপক্ষকে সমস্যা সমাধানে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আনিছুর রহমান জানান, অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো স্থান ভেঙে গেছে, আবার কোনো কোনো স্থানে কৃষকরা নিজেরাই ভেঙে দিয়েছে। তবে ভাঙা বিকল্প রাস্তাগুলোতে অস্থায়ী বেইলি সেতু স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) উপ-প্রকৌশলী তাওহিদ-উর রহমান জানান, খবর পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সড়কটি পরিদর্শন করা হয়েছে। ঠিকাদারকে অস্থায়ী সেতু নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন পানির স্রোত বেশি থাকায় কাজ শুরু করতে সময় লাগছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব কল প র স ত ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে নৌপরিবহন উপদেষ্টাকে অবাঞ্ছিতের ঘোষণায় শোকজ, পরে ক্ষমা প্রার্থনা

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে চট্টগ্রাম বন্দরে অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর ক্ষমা চেয়েছেন সাবেক সিবিএ নেতা হুমায়ুন কবীর। 

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হয়ে গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দর অকশন শেড সংলগ্ন শ্রমিক দলের কার্যালয়ে এক কর্মীসভায় ওই সাবেক সিবিএ নেতা উপদেষ্টাকে নিয়ে এমন অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেন। তবে পরে এমন বক্তব্য ভুলবশত, অনিচ্ছাকৃত এবং অজ্ঞতাবশত বলে উল্লেখ করেন তিনি। এমন অসৌজন্যমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করে উপদেষ্টার কাছে এক কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন হুমায়ুন কবীর। 

ওই সাবেক সিবিএ নেতার এমন বক্তব্যের কারণ জানতে চেয়ে গত ১ জুলাই  কারণ দর্শানো নোটিশ ইস্যু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে তাকে এর উত্তর জানানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে নোটিশের জবাবে হুমায়ুন কবীর ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

মো. হুমায়ুন কবীর চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও পরিদর্শন বিভাগের সুপারিন্টেনডেন্ট অডিট হিসেবে কর্মরত। তিনি চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের (সাবেক সিবিএ) প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। এনসিটি বিদেশিদের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। সর্বশেষ এক কর্মসূচিতে উপদেষ্টাকে নিয়ে বক্তব্যের মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ