ধারদেনায় ডুবতে বসেছেন সমুদ্রগামী জেলেরা
Published: 21st, May 2025 GMT
সাগরে মাছ ধরার ওপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এর এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারি খাদ্য সহায়তার চাল পাননি লক্ষ্মীপুরের জেলেরা। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চার উপজেলায় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২০ হাজার ১৫ জন। তাদের জন্য ১ হাজার ১২০ টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতায় তা হাতে না পৌঁছায় চরম অনিশ্চয়তা ও কষ্টে দিন পার করছেন এসব জেলে।
বুধবার জেলার রায়পুর উপজেলার চরবংশী, সদর উপজেলার চর রমণীমোহন, কমলনগরের চর লরেন্স, পাটোয়ারিরহাট, মাতাব্বরহাট ও নাসিরগঞ্জ; রামগতির চর আলেকজান্ডার ও বিবিরহাট ঘুরে দেখা গেছে, সাগরে নামতে না পারায় অলস বসে আছেন শত শত জেলে।
কেউ কেউ ফিশিং বোট থেকে জালসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ বোট মেরামত করছেন। সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা মেনেই তীরে ফিরে এসেছেন। এখন মাছ ধরতে না পারায় তাদের ঘরে চালও নেই। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতি বছরই নিষেধাজ্ঞার সময় তারা খাদ্য সহায়তা পান। এ বছর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে ১৫ এপ্রিল। এর এক মাস সাত দিন হলেও তাদের ঘরে পৌঁছায়নি সরকারি চাল।
এমন অবস্থায় তিন ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে ধারদেনায় ডুবতে বসেছেন চর লরেন্সের আবু সাঈদ (৪৫)। তিনি বলেন, ‘জেলে কার্ড আছে, নামও আছে তালিকায়; কিন্তু চাল পাই না। সরকার যে সহায়তার কথা বলে, তা কবে আসবে আমরা জানি না। ধারদেনা করে সংসার চালাই। তাও আর কত?’
‘সরকারের কাছ থেকে এখনও কিছুই পাইনি। ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে। বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছি না।’ বলতে বলতে একই এলাকার জেলে মো.
নিষেধাজ্ঞার ৫৮ দিনের মধ্যে ৩৫ দিনের বেশি পার হয়েছে; কিন্তু কিছুই জুটল না।’
হারুন মাঝি নামের আরেক জেলে বলেন, আগে বন্ধের কয়েক দিনের মধ্যেই চাল পেতেন। এখন ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার অর্ধেকের বেশি কেটে গেছে। এখনও কিছুই পাননি। খুব কষ্টে জীবন কাটাচ্ছেন। সঙ্গে জেলে আজগর মাঝি যোগ করেন, ঈদ আসছে সামনে। হাতেও কোনো টাকা নেই।
সরকার যদি দ্রুত চাল না দেয়, তাহলে না খেয়ে মরতে হবে– বলেন কমলনগরের জেলে সিরাজ মাঝি। কিন্তু কবে সে চাল পাবেন, সে খবরও নেই কারও কাছে। সব জেলেকেই তাঁর মতো সংসার চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলেও জানান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর ও সদরে সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২০ হাজার ১৫ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৭ হাজার ৮৬০ জনের বাড়িই রামগতিতে। এ ছাড়া কমলনগরের ১ হাজার ৮১৫ জন, রায়পুরে ২২০ জন ও সদরে ১২০ জন আছেন তালিকায়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, জেলেদের জন্য এবার ১ হাজার ১২০ টন খাদ্য সহায়তা বরাদ্দ হয়েছে। কিছু প্রশাসনিক কারণে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। ঈদুল আজহার আগেই বিতরণের আশা করছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাহরাইনের প্রতি বাংলাদেশিদের জন্যে ভিসা চালুর অনুরোধ
ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমিকসহ বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা সুবিধা পুনরায় চালু করতে বাহরাইনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
উপদেষ্টা দু’দেশের জনগণের সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ভিসা পুনরায় চালুর এ অনুরোধ জানান।
বাহরাইনে ২১তম আইআইএসএস মানামা সংলাপের ফাঁকে শনিবার (১ নভেম্বর) দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন খালিফা আল ফাদেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন তিনি। এ সময়ে ভিসা পুনরায় চালুর অনুরোধটি জানান উপদেষ্টা।
রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে তৌহিদ হোসেন কমিউনিটির কল্যাণ নিশ্চিত এবং সামাজিক সম্পর্ক মজবুতের লক্ষ্যে বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ‘ফ্যামিলি ভিসা’ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করারও অনুরোধ জানান।
বাহরাইনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির অর্থনীতিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, তার দেশের সরকার ধাপে ধাপে ভিসা সুবিধা পুনরায় চালুর জন্য কাজ করছে।
বৈঠকে উভয়ে দু’দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তরে একটি চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।
তৌহিদ হোসেন ২১তম মানামা সংলাপের অধিবেশনের পাশপাশি আরো কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এসব আয়োজনে বিশ্ব নেতা, বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নীতি নির্ধারকরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করবেন।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা