পেটের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের চারপাশে বাড়তি চর্বি জমা হয় অনেকেরই। এই মেদকে বলা হয় ভিসেরাল ফ্যাট। শরীরের অন্যান্য অংশের মেদের চেয়ে ভিসেরাল ফ্যাট বেশি ক্ষতিকর। উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-ডায়াবেটিস, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ এবং স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি বাড়ে ভিসেরাল ফ্যাটের কারণে। ভিসেরাল ফ্যাট এবং পেটের চামড়ার নিচে জমা হওয়া মেদ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় কোমরের মাপ থেকে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.

মো. মতলেবুর রহমান

কোমরের মাপ কত হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে

স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে কোমরের মাপ কত থাকা ভালো, তা জানা প্রয়োজন নারী-পুরুষ সবারই। এশীয় দেশগুলোর পুরুষদের কোমরের মাপ থাকা উচিত ৩৫ দশমিক ৫ ইঞ্চির কম। আর এশীয় নারীদের কোমরের মাপ থাকা উচিত ৩১ দশমিক ৫ ইঞ্চির কম। বাঙালি নারী-পুরুষের কোমরের মাপ যদি আদর্শ এই মাপের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। এ রকম হলে জীবনধারার পরিবর্তনের প্রতি মনোযোগী হওয়া খুবই জরুরি। তবে যাঁদের দেহ সুমো কুস্তিগিরদের মতো বেশ বিরাট, তাঁদের ক্ষেত্রে আদর্শ মাপ আরেকটু বেশি ধরা হয়। কারণ, তাঁদের দেহটাই বড়সড়, সেই হিসাব করেই তাঁদের জন্য কোমরের মাপ আলাদা ধরা হয়। গড়পড়তা বাঙালির জন্য আবার এই হিসাব প্রযোজ্য নয়।

আরও পড়ুনওজন কমলেও ভুঁড়ি কেন কমে না ১৯ এপ্রিল ২০২৫আরও জানা প্রয়োজন নিতম্বের মাপ

স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্ণয়ের আরেক পরিমাপক হলো কোমরের মাপ এবং নিতম্বের মাপের অনুপাত (ওয়েস্ট-টু-হিপ রেশিও)। সহজভাবে বলা যায়, কোমরের মাপকে নিতম্বের মাপ দিয়ে ভাগ করলে যে সংখ্যা পাবেন, সেটিই হলো এই অনুপাত। এশীয় পুরুষের ক্ষেত্রে এই মাপ দশমিক ৯৫-এর মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এশীয় নারীর জন্য সংখ্যাটি দশমিক ৮৫-এর মধ্যে থাকতে হয়।

যেভাবে মাপবেন

কোমর ও নিতম্বের মাপ কীভাবে নিতে হয়, তা জানা না থাকলে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন না। জেনে নিন মাপ নেওয়ার নিয়ম।

এই দুটি মাপই নিতে হয় দাঁড়ানো অবস্থায় এবং মাপ নেওয়ার সময় দেহ শিথিল রাখতে হয়। খেয়াল রাখুন, মাপ নেওয়ার সময় মাপের ফিতাটি যাতে ভাঁজ হয়ে কিংবা বেঁকে না যায়। ফিতাটি যাতে আঁটসাঁট হয়েও না থাকে, আবার ঢিলা হয়েও না থাকে।

কোমরের মাপ নিতে হয় কোমরের সবচেয়ে সরু অংশে। প্রশ্ন হলো, কোমরের সবচেয়ে সরু অংশ কোনটা? এর জন্য প্রথমে পিঠে হাত দিয়ে পাঁজরের সবচেয়ে নিচের হাড়ের অবস্থানটি অনুভব করার চেষ্টা করুন। এরপর আঙুলের সাহায্যে খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন হিপ বোন বা কোমরের হাড়ের সবচেয়ে ওপরের দিকের অংশটি। এই দুটির মাঝামাঝি অবস্থানেই আপনার কোমর সবচেয়ে সরু। বিকল্প হিসেবে আপনি একটা লম্বা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখলেও বুঝতে পারবেন, কোমরের কোন অংশটা সবচেয়ে সরু।

কোমরের মাপ নিতে হয় স্বাভাবিকভাবে নিশ্বাস ছাড়ার পর। শ্বাস গ্রহণের পর মাপ নিলে কিংবা মাপ নেওয়ার সময় পেটের পেশি টান টান করে রাখলে সঠিক মাপ পাবেন না।

নিতম্বের মাপ নিতে হয় নিতম্বের সবচেয়ে চওড়া অংশ বরাবর।

আরও পড়ুনরাতের যেসব অভ্যাসে ওজন কমবে০১ মে ২০২৫এমনকি ওজন ঠিক থাকলেও…

উচ্চতা অনুযায়ী ওজনের হিসাব-নিকাশ করা হয় বডি মাস ইনডেক্সের (বিএমআই) মাধ্যমে। এশীয় নারী ও পুরুষের জন্য বিএমআই ২৩ বা তার বেশি হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। বিএমআই কম থাকলেও যদি কোমরের মাপ বেশি হয় কিংবা বেশি থাকে ওয়েস্ট-টু-হিপ রেশিও, তাহলে আপনি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন বলে ধরে নিন।

ঝুঁকি কমাতে কী করবেন

কোমরের মাপ কমাতে স্বাস্থ্যকর জীবনধারার বিকল্প নেই। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শরীরচর্চার প্রতি মনোযোগী হোন। সাইকেল চালানো এবং হুলা হুপ ঘোরানোর মতো ব্যায়ামে বেশ উপকার পাবেন। দৌড়, সাঁতার ও দড়িলাফও ভালো ব্যায়াম।

আরও পড়ুনকাঁচা আম খেয়েও ওজন বাড়ছে না তো?২০ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন তম ব র ম প র সবচ য় র জন য দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

২ কেজির ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়

সারাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে যখন হইচই তখন জেলেরা ভুগছেন ইলিশ সংকটে আর ক্রেতারা হতাশ দাম নিয়ে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামের এক জেলের জালে ধরা পড়লো ২ কেজির এক ইলিশ যা বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়। 

রোববার বিকেলে উপজেলার আশাখালী মাছ বাজারে ২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটিকে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন জেলে। মাছটি কেনেন বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম।

জেলে জামাল মাতুব্বর বলেন, গত কালকে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে আজকে আবহাওয়া খারাপ হওয়া তীরে চলে এসেছি৷ ইলিশ মাছ কম তবে একটি ইলিশ আমি ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যে কারণে কম মাছ পেলেও খুব ভালো লাগছে। এর চেয়েও বড় ইলিশ সমুদ্রে পাওয়া যায় তবে এখন দাম অনেক হওয়ায় যা দাম এসেছে তাতে পুষিয়ে যায় আমাদের।

বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, গত ১১ জুন ৬০ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর কয়েকবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারছেন না। তবে আজকে জেলে জামাল একটি মাছ প্রায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এটা তার জন্য অনেক আনন্দের। মাছটি আমি কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছি।

উপজেলার বেশ কয়েকটি মাছের বাজারে কথা বলে জানা যায়, ইলিশ সংকট হওয়ায় তার দাম আকাশচুম্বী। আজকে এক কেজির উপরের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৬০ দিনের অবরোধ সঠিকভাবে পালন হওয়ায় সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ঠিক হলে মাছের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে আর দামও নাগালে চলে আসবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ