কাতারের কাছ থেকে একটি বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ গ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। এখন পেন্টাগন এটির উন্নয়ন করবে।

উড়োজাহাজটিতে উপযুক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ও প্রেসিডেন্ট যাতে এতে নির্বাহী কাজ পরিচালনা করতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় উন্নয়নকাজের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এটি ব্যবহার করবেন, এমনটাই বলেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক মুখপাত্র।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিমানবাহিনীকে উড়োজাহাজটি সংস্কারের পরিকল্পনা শুরু করতে বলেছেন। আমরা সেটি করতে প্রস্তুত।ট্রয় মিঙ্ক, মার্কিন বিমানবাহিনীর সেক্রেটারি

গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে পেন্টাগনের প্রধান মুখপাত্র শন পারনেল বলেন, ‘সব সরকারি নিয়মকানুন অনুসরণ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাতারের কাছ থেকে একটি বোয়িং ৭৪৭ গ্রহণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পরিবহনে ব্যবহৃত উড়োজাহাজে যে ধরনের যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থা, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা থাকা দরকার, সেটি নিশ্চিত করতে প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর কাজ করবে।’

যদিও এ আলোচনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একজন দাবি করেছেন, এ উড়োজাহাজ–সংক্রান্ত চুক্তি এখনো চূড়ান্ত হয়নি, আইনি দলের মধ্যে আলোচনা চলছে।

ট্রাম্প প্রশাসন কাতারের কাছ থেকে উড়োজাহাজটি কিনেছে কি না, সে বিষয়ে শন পারনেল কোনো তথ্য দেননি। তিনি এ বিষয়ে আর কিছু জানার থাকলে মার্কিন বিমানবাহিনীর কাছে প্রশ্ন করতে বলেন।

সিএনএন এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ওয়াশিংটনে কাতারের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

পেন্টাগন কাতারের কাছ থেকে উড়োজাহাজ গ্রহণের ঘোষণা দেওয়ার পর গতকাল সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীকে কাতার একটি উড়োজাহাজ দিচ্ছে। এটি একটি দারুণ বিষয়।’

যদিও এ আলোচনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একজন দাবি করেছেন, চুক্তি এখনো চূড়ান্ত হয়নি, আইনি দলের মধ্যে আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে গত সোমবার কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল থানি ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘উড়োজাহাজ–সংক্রান্ত বিষয়টি দুই দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া লেনদেনের অংশ, যা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও আইন মেনে করা হয়েছে। এটি সেই সহযোগিতার অংশ, যা আমরা দশক ধরে একসঙ্গে করে আসছি।’

পরদিন গত মঙ্গলবার মার্কিন বিমানবাহিনীর সেক্রেটারি ট্রয় মিঙ্ক ও চিফ অব স্টাফ ডেভিড আলভিন আইনপ্রণেতাদের বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ বিমানবাহিনীকে উড়োজাহাজটি সংস্কারের পরিকল্পনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। মিঙ্ক বলেন, ‘আমরা সেটি করতে প্রস্তুত।’

আরও পড়ুনকাতারের কাছ থেকে উড়োজাহাজ ‘উপহারের’ প্রস্তাব পাওয়ার ট্রাম্পের দাবি কি সত্য২০ মে ২০২৫

বিমানবাহিনীর এক মুখপাত্র সিএনএনকে বলেছেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, একটি বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজকে প্রেসিডেন্টকে বহনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে বিমানবাহিনী একটি চুক্তি অনুমোদন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ চুক্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য।’

চলতি মাসের শুরুতে প্রথম কাতারের কাছ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের একটি উড়োজাহাজ পাওয়ার খবর প্রকাশ পায়, যা তুমুল রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দেয়। নীতিগত কারণে ডেমোক্রেটিক ও কয়েকজন প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতা এ বিষয়ে সম্ভাব্য চুক্তির বিরোধিতা করেছেন।

উড়োজাহাজ–সংক্রান্ত বিষয়টি দুই দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া একটি লেনদেনের অংশ, যা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও আইনগতভাবে করা হয়েছে। এটি সেই সহযোগিতার অংশ, যা আমরা দশক ধরে একসঙ্গে করে আসছি।মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল থানি, কাতারের প্রধানমন্ত্রী

ট্রাম্প বারবার উড়োজাহাজটিকে ‘এয়ারফোর্স ওয়ান’–এর সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে তুলে ধরেছেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি একে কাতারের দেওয়া ‘উপহার, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তবে সোমবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ পাওয়ার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে ট্রাম্প প্রশাসনই প্রথম কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।

ট্রাম্প জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রেসিডেন্টকে পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত সরকারি উড়োজাহাজটি বদলে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেটি পুরোনো হয়ে গেছে। এ জন্য বিমানবাহিনী মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু নতুন একটি উড়োজাহাজ সরবরাহ করতে বোয়িং দুই বছর সময় চায় বলে জানান কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুনআমি এমন একটা প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার মতো লোক নই: ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫

হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন দ্রুতই বিকল্প উড়োজাহাজ পেতে চাইছিল, যে কারণে বিমানবাহিনী থেকে সম্ভাব্য বিকল্পের খোঁজ চলছিল। সেই সময় ট্রাম্প তাঁর মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফকে সম্ভাব্য যথাযথ উড়োজাহাজের একটি তালিকা খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেন।

চলতি মাসের শুরুতে প্রথম কাতারের কাছ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের একটি উড়োজাহাজ পাওয়ার খবর প্রকাশ পায়, যা তুমুল রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নীতিগত কারণে ডেমোক্রেটিক ও কয়েকজন প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতা সম্ভাব্য ওই চুক্তির বিরোধিতা করেছেন।

সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিমানবাহিনী যোগাযোগ করার পর বোয়িং কর্তৃপক্ষ মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের তাদের এমন কয়েকটি গ্রাহক দেশের তালিকা দেয়, যাদের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী উড়োজাহাজ পাওয়া ও অন্তর্বর্তী সময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। বোয়িংয়ের দেওয়া তালিকায় কাতারও ছিল।

হোয়াইট হাউসের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আরও বলেন, হোয়াইট হাউস এ প্রস্তাবের পক্ষে আছে জানার পর পেন্টাগন কাতারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। শুরুর দিকের এই কথাবার্তা এগিয়ে নিতে সহায়তা করেন স্টিভ উইটকফ।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কাতারের কাছ থেকে কি ট্রাম্প উড়োজাহাজ উপহার নিতে পারেন১৬ মে ২০২৫

তবে শুরুতে বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষ ভেবেছিল, কাতারের সঙ্গে যেকোনো লেনদেন হবে উড়োজাহাজ বিক্রির মাধ্যমে, উপহার হিসেবে নয়, এমনটাই বলেছেন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা।

ট্রাম্প প্রশাসনকে কাতারের এ উড়োজাহাজ হস্তান্তর কতটা নৈতিক ও আইনগতভাবে বৈধ, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এর বাইরে আরেকটি দেশের কাছ থেকে, তা সে যত মিত্রদেশই হোক না কেন, তাদের পুরোনো উড়োজাহাজে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও যোগাযোগ সরঞ্জাম স্থাপন এবং সেটির উন্নয়ন করা বিরাট ঝক্কির কাজ বটে।

এ নিয়ে বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা সিএনএনকে বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ করতে দুই বছর সময় লেগে যেতে পারে এবং এতে উড়োজাহাজটির প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি খরচ হতে পারে।

এ নিয়ে বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা সিএনএনকে বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ করতে দুই বছর লেগে যেতে পারে এবং এতে উড়োজাহাজটির প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি খরচ হতে পারে।

উড়োজাহাজটির উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোকে সেটির মূল কাঠামো পর্যন্ত খুলে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দিয়ে নতুনভাবে তৈরি করতে হতে পারে।

আরও পড়ুনউড়োজাহাজ কেউ বিনা মূল্যে দেয় না, বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা অবশ্যই থাকে: হিলারি ক্লিনটন১৭ মে ২০২৫আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যে লাখো কোটি ডলারের চুক্তি সই১৫ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র য গ য গ কর স এনএনক প রস ত র প রক র র পর বল ছ ন ন র এক কর ছ ন উপহ র গ রহণ র একট ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

শুল্ক নিয়ে ১২টি দেশকে চিঠি দিচ্ছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে পাল্টা শুল্ক আরোপ ঠেকাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে জোর কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু দেশ আলোচনায় এগিয়েছে। কিছু দেশের ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত শুল্কের পরিমাণ উল্লেখ করে ১২ দেশকে চিঠি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিঠিগুলোয় সই করেছেন। আগামী সোমবার সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো হবে। তবে কোন কোন দেশ চিঠি পাচ্ছে, তা উল্লেখ করেননি ট্রাম্প। সোমবার বিষয়টি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বাণিজ্য উপদেষ্টা গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, আগামী বুধবার ৯ জুলাই মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দফায় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠক থেকে শুল্ক নিয়ে ভালো ফল পাওয়ার আশা করছেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য রয়েছে, এমন দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ শতাংশ ভিত্তি শুল্ক আরোপ করেন তিনি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য–ঘাটতির কথা উল্লেখ করে অনেক দেশের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ববাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমঝোতার লক্ষ্যে ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করেন ট্রাম্প। ৯ জুলাই সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে।

রয়টার্স জানায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার ওয়াশিংটন থেকে নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের কাছে চিঠির বিষয়টি জানান তিনি। এদিন শুল্ক নিয়ে প্রথম ধাপে বিভিন্ন দেশকে চিঠি দেওয়া হবে বলে আগে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে পরে তারিখে পরিবর্তন করে সোমবার করা হয়।

নতুন এই শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। শুল্প নিয়ে পরিকল্পনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু চিঠিতে সই করেছি। সেগুলো সোমবার পাঠানো হবে। হয়তো ১২টি চিঠি।’ চিঠির মাধ্যমে দেশগুলোকে ১০ বা ২০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৬০ বা ৭০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প যে ৬০ বা ৭০ শতাংশ শুল্কের কথা বলেছেন, তা ২ এপ্রিল ঘোষণা করা পাল্টা শুল্কের সর্বোচ্চ পরিমাণের চেয়ে বেশি। এ থেকে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনেক দেশের আলোচনা আশানুরূপ অগ্রগতি পায়নি। যেমন জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। চুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যে এ সপ্তাহেই টোকিওর ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য আলোচনাও ‘জটিল’ পর্যায়ে রয়েছে বলে শুক্রবার সিএনএনকে জানিয়েছিলেন ইইউর একজন কূটনীতিক। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, চুক্তি নিয়ে আলোচনা ৯ জুলাইয়ের আগে শেষ না-ও হতে পারে। আর শুক্রবার ইউরোপীয় কমিশনের বাণিজ্য মুখপাত্র ওলফ গিল সিএনএনকে বলেন, আলোচনা খুবই স্পর্শকাতর পর্যায়ে রয়েছে।

শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নই নয়, ভারতসহ অনেক দেশই এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি। তাই চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময়সীমা বাড়তে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন। যেমন গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, ৯ জুলাইয়ের সময়সীমা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ নয়। আর সংবাদমাধ্যম ফক্স বিজনেসের সঙ্গে আলাপচারিতায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘শ্রমিক দিবস’–এর আগেই বাণিজ্য চুক্তির পাট চুকিয়ে নেওয়া হবে। আগামী পয়লা সেপ্টেম্বর দেশটিতে শ্রমিক দিবস পালন করা হবে।

আলোচনার জন্য ট্রাম্পের ৯০ দিনের সময়সীমা ফুরিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত শুধু যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। মে মাসে করা ওই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এ ছাড়া গাড়ি ও উড়োজাহাজের ইঞ্জিনসহ কয়েকটি খাতে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে।

ভিয়েতনামের সঙ্গেও যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি চুক্তি হয়েছে, তা এ সপ্তাহে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে ওই চুক্তিতে সই হয়েছে কি না, জানা যায়নি। এপ্রিলে ভিয়েতনাম থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৪৬ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের কথা বলেছিলেন তিনি। বর্তমানে তা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্য বিনা শুল্কে ভিয়েতনামে প্রবেশ করতে পারবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুল্ক নিয়ে ১২টি দেশকে চিঠি দিচ্ছেন ট্রাম্প