গাইবান্ধা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মো. বায়োজিদ বোস্তামি জীমকে (২৪) হত্যাচেষ্টার ঘটনার ১০ মাস পর সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মামলায় সাবেক ছয় এমপিসহ নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের জেলা-উপজেলার ৮৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে ভুক্তভোগী বায়োজিদ বোস্তামি জীম বাদি হয়ে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

আরো পড়ুন:

বৃষ্টি উপেক্ষা করে সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

১১৮ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

মামলার উল্লেখ্যযোগ্য আসামিরা হলেন, গাইবান্ধা জেলা আ.

লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাহিদ নিগার সুলতানা, গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ সরোয়ার কবির, সদর আসনের সাবেক সংসদ ও হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি, গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ এবং গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই দুপুরে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ মাঠ থেকে বায়েজিদকে জোরপূর্বক অপহরণ করে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আসিফ সরকারের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে লোহার রড, হকিস্টিক ও বাঁশের লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে রাত ১০টার দিকে গলা চেপে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।

বিষয়টি জানতে পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর গত ৪ আগস্ট বেলা ২টার দিকে গাইবান্ধা ডিসি অফিসের সামনে থেকে পুনরায় তাকে আটক করে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গেটের সামনে নিয়ে মারধর করা হয়। এসময় ৭০-৭৫টি রাবার বুলেট দিয়ে তার শরীরে গুলি ছোড়া হয়। হামলার পর হামলাকারীরা ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

মামলার বাদী গাইবান্ধা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব বায়োজিদ বোস্তামি জীম বলেন, “দুই দফায় আমার ওপর হামলা করাসহ হত্যাচেষ্টা চালায় ফ্যাসিস্ট নিষিদ্ধ ঘোষিত আ.লীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার ১০ মাস পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি। আশা করি, ন্যায়বিচার পাবো এবং পুলিশ দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করবে।”

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, “জোরপূর্বক অপহরণের পর মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় সাবেক ছয় এমপিসহ জেলা আ.লীগের সভাপতি ও অঙ্গসংগঠনের ৮৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

ঢাকা/মাসুম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য এমপ আওয় ম ল গ হত য চ ষ ট সদর থ ন ত কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

চা–বাগানের ৩৪ শতাংশ নারী শ্রমিক যৌন নির্যাতনের শিকার: গবেষণা

চা–বাগানে কাজ করা দেশের ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ নারী শ্রমিক কর্মস্থলে যৌন নির্যাতনের শিকার হন। ৩০ শতাংশ নারী শ্রমিক মৌখিক এবং ১৪ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক নির্যাতনের (গৃহে নির্যাতনসহ) শিকার হন।

সম্প্রতি পরিচালিত ‘নারী চা–শ্রমিকদের অধিকার, সেবাপ্রাপ্তিতে প্রবেশগম্যতা: বাস্তবতা ও আইনগত প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।

‘অক্সফাম ইন বাংলাদেশের’ সহযোগিতায় ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ সংগঠনের অধীন সিলেট বিভাগের ৩টি জেলার ১১টি উপজেলায় ‘স্ট্রেনদেনিং ইউমেন ভয়েসেস ইন টি গার্ডেন’ প্রকল্পের আওতায় এ গবেষণা করা হয়। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বেসরকারি ইনোভেটিভ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালট্যান্সি (আইআরসি) এ গবেষণা পরিচালনা করে। সংস্থাটির লিড কনসালট্যান্ট পলিন কুমার সাহা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।

গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ নারী কর্মক্ষেত্রকে নিরাপদ মনে করেন না। চা–বাগানে কাজ করা নারী শ্রমিকদের মধ্যে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ সহিংসতার কারণে, ১২ দশমিক ৩ শতাংশ মালিকের কাছ থেকে হুমকি, ৮ দশমিক ২ শতাংশ অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, ৪ দশমিক ১ শতাংশ চুরি এবং বাকিরা অন্যান্য কারণে কর্মক্ষেত্রকে অনিরাপদ মনে করেন।

৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেন বলে জানিয়েছেন গবেষণায় অংশ নেওয়া নারী শ্রমিকেরা।

গবেষণায় অংশ নেওয়া সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন চা–বাগানে কাজ করা ৩ শতাধিক নারী শ্রমিকের মধ্যে ২৩ জন তাঁদের ওপর হওয়া অপরাধগুলোর প্রকারভেদ বিস্তারিত জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ নারী অশ্লীল বা অপমানজনক কথা ও অঙ্গভঙ্গির শিকার হয়েছেন, এ ছাড়া ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, ২৬ দশমিক ১ শতাংশ যৌন হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী শ্রমিক অন্যান্য নির্যাতনের শিকার হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন।

গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চা–শ্রমিকেরা। ঢাকা, ২২ মে

সম্পর্কিত নিবন্ধ