সড়কের খানাখন্দে বৃষ্টির পানি, দুর্ঘটনার ঝুঁকি
Published: 19th, June 2025 GMT
মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কুর্নী-ফতেপুর সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বেপরোয়া মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করায় সড়কটি খানাখন্দে ভরে গেছে। বড় বড় গর্ত হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে দুই উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ।
সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বানের কথা শোনা গেলেও অজ্ঞাত কারণে কাজ শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন এলাকার লোকজন। জানা গেছে, ফতেপুর ও তরফপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে ১০টি গ্রামের এবং পাশের বাসাইল উপজেলার একাধিক ইউনিয়নের মানুষ মির্জাপুর উপজেলা সদরে আসেন কুর্নী-ফতেপুর সড়ক দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি খানাখন্দে পরিণত হয়ে থাকলেও অজ্ঞাত কারণে সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। সড়কের অধিকাংশ স্থানে গর্ত ও ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার কুর্নী-ফতেপুর সড়কের কুর্নী ও বহনতলী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটিতে একটু দূরে দূরে রয়েছে বড় বড় গর্ত। মাটি বোঝাই ট্রাক বেপরোয়া চলাচলের কারণে সড়কের এই অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। গর্তের মধ্যে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় যানবাহন চালকদের রাস্তার অবস্থান বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। অনেক যানবাহন গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
ভাতকুড়া গ্রামের বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে চলাচরের সময় আতঙ্কে থাকি। কখন দুর্ঘটনার কবলে পরতে হয় সেই চিন্তা নিয়ে চলতে হয়।’
কুর্নী গ্রামের বাসিন্দা মুক্তার আলী জানান, সাত থেকে আট মাস আগে সড়কটি মাপজোখ করা হলেও এখনও সংস্কার কাজ শুরু হলো না কেন বুঝতে পারছেন না তারা।
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শুভাশিষ কর্মকারের ভাষ্য, কুর্নী-ফতেপুর সড়কটি খারাপ হওয়ায় মহেড়া ইউনিয়নের ধল্যা-ছাওয়ালী রাস্তা ঘুরে তাঁকে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার হওয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল সাজ রিজন বলেন, কুর্নী-ফতেপুর সড়কটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার হওয়ার পর ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জুলাই মাসে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন সড়ক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আলফাডাঙ্গায় সড়ক কার্পেটিংয়ের পরদিন উঠে গেল বিটুমিন, এলাকাবাসীর ক্ষোভে কাজ বন্ধ
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সড়কে কার্পেটিংয়ের পরদিন বিটুমিন উঠে গেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবাসী। উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ভেন্নাতলা থেকে বেড়িরহাট বাজার সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিটুমিনসহ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কার্পেটিং করায় এ ঘটনা ঘটেছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গুণগত মান বজায় রেখেই কাজ করা হচ্ছে। সাধারণত কার্পেটিংয়ের পর ৭২ ঘণ্টা সময় দিতে হয়। এলাকাবাসী ভুল বুঝে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করছেন।
এলজিইডির উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ভেন্নাতলা থেকে বেড়িরহাট পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়কটি মেরামতে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কাজটি পায় মাহমুদ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি জুন মাসের শুরুর দিকে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত শনিবার সড়কটির ভেন্নাতলা এলাকায় ১৫০ মিটার অংশে কার্পেটিং করা হয়। পরদিন দুপুরে সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় এক মোটরসাইকেলচালক পড়ে গিয়ে আহত হন। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন সড়কের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে টান দিলে কার্পেটিং উঠে যায়। তখন সেখানে থাকা সহকারী প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারের লোকজনের কাছে বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে চান। পরে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে তাঁদের অবরুদ্ধ করে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, শুরু থেকে নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছিল। বিভিন্ন সময় ঠিকাদারকে বিষয়টি বললেও তাঁরা শোনেননি। শনিবার বিকেলে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হয়। রোববার দুপুরে সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চলাচল করলে বিভিন্ন জায়গায় দেবে গিয়ে কার্পেটিং উঠে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মেহেদি হাসান বলেন, ঘটনার সময় এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের লোক ছিলেন। বিষয়টি তাঁদের কাছে জানতে গেলে স্থানীয় লোকজনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কয়েক শ লোক জড়ো হয়ে তাঁদের অবরুদ্ধ করে কাজ বন্ধ করে দেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সহকারী প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারের লোকজন দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, সড়কের কার্পেটিংয়ের অধিকাংশ কাজ এখনো বাকি। শুরুতেই নিম্নমানের কাজ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মাহমুদ বলেন, শিডিউল অনুযায়ী সড়কের নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ সঠিক নয়। এলাকাবাসী বিষয়টি বুঝতে না পারায় ভুল–বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল। মূলত রাস্তার কার্পেটিং করার ৭২ ঘণ্টা সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী হয় না। ২৪ ঘণ্টা পরই কার্পেটিং তুলে এলাকাবাসী এ ধরনের অভিযোগ করছেন।
এলজিইডির আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী রাহাত ইসলাম বলেন, গুণগত মান বজায় রেখেই কাজটি করা হচ্ছে। স্থানীয় কিছু লোক বিষয়টি বুঝতে না পেরে ক্ষুব্ধ হন। পরে সোমবার দুপুরে তিনি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, কার্পেটিং করার পর ৭২ ঘণ্টা সময় দিতে হয়। কিন্তু সড়কটি বেশি প্রশস্ত না হওয়ায় এক পাশ দিয়ে কাজ করে অন্য পাশে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, কাজের আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি পুরো আটকে দিলেও এলাকাবাসী তা মানেননি। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে বললে তাঁরা ভুল বুঝতে পারেন। তিনি বলেন, আবহাওয়া ভালো হলেই আবার কাজ শুরু করা হবে।