বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। তবে গণতন্ত্রের বাস্তবায়ন বা গণতন্ত্রের সৌধ নির্মাণ এখনও সম্পন্ন হয়নি। এখনও অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। 

শুক্রবার দুপুরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর পক্ষ থেকে পাবনার চাটমোহর পৌর শহরের আফ্রাতপাড়ায় প্রবীণ বিএনপি নেতা আবু তাহের ওরফে তাহের ঠাকুরকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আবু তাহেরকে চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান দেন রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১৬ বছর আমাদের মূল প্রেরণা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর ভয়াবহ নির্যাতন হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনেকেই গুমের শিকার হয়েছেন। কেউ-ই মামলা থেকে রেহাই পাননি। ভয়ংকর এক ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার দুঃশাসন থেকে গত বছর ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে মুক্ত হয়েছি।

তিনি বলেন, চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ যখনই দেখেছে ড.

ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক হয়েছে, তখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নামে অসংখ্য কুৎসা ও অপপ্রচার সেখান থেকে চালু হচ্ছে। তাদের (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী) পুনর্বাসনের জন্য আজ ভারতের নীতিনির্ধারকরা নানা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তো আন্দোলনের ফসল। ১৬ বছরের নিরন্তর আন্দোলন ও জুলাই-আগস্টের রক্তঝরা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। এই পতনটাকে তারা সহ্য করতে পারছে না।

রিজভী আরও বলেন, বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক দলটি ১৬ বছর মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে, জনগণের টাকা লুট করেছে। লুট করে সে টাকা পাচার করেছে। তাদের বাড়িঘর এখন দুবাই, কানাডা, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়ায়। সেখানে তারা বেহেস্তের স্বর্গীয় সুখ লাভ করে  অবস্থান করছে। যারা বেশিদূর যেতে পারেননি তারা পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাই এই আন্দোলনের যিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষক, যিনি পুরো জাতিকে সংগঠিত করেছেন, সেই তারেক রহমানকে তারা টার্গেট করেছে। ১৬ বছর ধরে তাকে টার্গেট করে রেখেছিল। বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। তাদের যারা মেন্টর, এখন তাদের দিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এ সময় রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক সাইফ আলী খান, ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, সংগঠনটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহসভাপতি জামিল হোসেন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ১৬ বছর আম দ র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কথিত গণতন্ত্র থাকলেও আমরা বাকস্বাধীনতা হারিয়েছিলাম: তথ‌্য স‌চিব

প‌তিত ‌শেখ হা‌সিনা সরকার আম‌লে কথিত গণতন্ত্র থাকলেও বাকস্বাধীনতা ছিল না ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা।

তি‌নি ব‌লেন, “ওই সময় দেশে কথিত গণতন্ত্র থাকলেও আমরা বাকস্বাধীনতা হারিয়েছিলাম। তরুণ সমাজ তাদের ন্যায্য কথা বলতে পারেনি।”

রবিবার (৩ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অডিটরিয়ামে তথ্যচিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে সচিব বলেন, “মেধাভিত্তিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র-জনতা ত্যাগ স্বীকার করেছে। আহতদের চিকিৎসা এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।”

মাহবুবা ফারজানা ব‌লেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাহস ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সততা, দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।”

গণঅভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপেশাদার ভূমিকার কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, “তারা নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। দেশের জন্য আমাদের সন্তানদের আর যেন বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে না হয়, সে বিষয়ে আমাদের সোচ্চার হতে হবে।”

“গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, প্রশাসনের জবাবদিহিতা এবং ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে সততা, নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারলে দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা জঞ্জাল দূর করা সম্ভব,” ব‌লেও ম‌নে ক‌রেন তি‌নি।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফায়জুল হক, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম বক্তৃতা দেন।

এর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।অনুষ্ঠান শেষে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির এ অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনীতি-সমাজ ও সংস্কৃতির আকাঙ্ক্ষা
  • বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার সিদ্ধান্তের নিন্দায় যুক্তরাষ্ট্র
  • ফিরে দেখা আমাদের জুলাই বিপ্লব
  • ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
  • জুলাই গণ–অভ্যুত্থান কোনো দলীয় নয়, জাতীয় বিবেকের জাগরণ: আনিসুল ইসলাম ও মুজিবুল হক
  • দেশে আবার একটা অস্থিরতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
  • ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ: সো ফার সো গুড
  • কথিত গণতন্ত্র থাকলেও আমরা বাকস্বাধীনতা হারিয়েছিলাম: তথ‌্য স‌চিব
  • ইসরায়েলকে অস্ত্র দেবে না কানাডা
  • হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূস একটি কথাও বলেননি: মেজর (অব.) হাফিজ