জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের গতকাল শুক্রবারের বৈঠক পরিণত হয়েছিল এক উত্তপ্ত বাদানুবাদে। ইরান ও ইসরায়েল, তাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য দায় চাপাতে থাকে। বৈঠকে এ যুদ্ধ বন্ধ করা ও কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানানো হলেও কীভাবে এগোনো উচিত, সে বিষয়ে পরিষদ কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।

দশকের পর দশক ধরে সীমিত পরিসরে, সরাসরি ও ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে দ্বন্দ্ব চলার পর গত সপ্তাহে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সংঘাত শুরু হয়। ইসরায়েলের অভিযোগ, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, যা তাদের জন্য হুমকি। তাই আত্মরক্ষায় ইসরায়েল ইরানে বিমান হামলা চালিয়েছে। জবাবে ইরানও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা এখনো চলছে।

বৈঠকে দেওয়া বক্তৃতায় জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি ইসরায়েল ও এর মিত্রদের তেহরানে আগ্রাসনের সমর্থনে ‘অতর্কিত হামলা ও অস্তিত্বের হুমকি’র (ইরানের তরফে) যুক্তিকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের অজুহাত’ বলে বর্ণনা করেন।
আমির সাঈদ ইসরায়েলকে এমন একটি দেশ হিসেবে আখ্যা দেন, যারা নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে ও অন্যান্য দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করে। বক্তব্যের সময় ইসরায়েলি হামলায় নিহত শিশুদের ছবি তুলে ধরেন তিনি।

বৈঠকে দেওয়া বক্তৃতায় জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি ইসরায়েল ও এর মিত্রদের তেহরানে আগ্রাসনের সমর্থনে ‘অতর্কিত হামলা ও অস্তিত্বের হুমকি’র (ইরানের তরফে) যুক্তিকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের অজুহাত’ বলে বর্ণনা করেন।

জবাবে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, ইরান ‘ভুক্তভোগী সেজে নাটক করছে’। তিনি ইরাভানিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা কী করে আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে এমন একটি পরিকল্পনার পরিণতি থেকে রক্ষা চাওয়ার সাহস করেন, যে পরিকল্পনা গণহত্যার জন্য তৈরি?’

ব্যক্তিগত আক্রমণ ও দোষারোপে ভরা বৈঠকটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইরান ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে চলমান আলোচনা কোনো অগ্রগতি ছাড়াই মুলতবি হয়ে গেছে। এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে গঠনমূলক আলোচনা সম্ভব নয়।

নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা মূলত লড়াই বন্ধ করা ও সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজার পক্ষে মত দেন। তবে আলোচনা গড়ায় কে দায়ী, তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিতর্কে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘে ইসরায়েলের স্থায়ী প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন। ২০ জুন ২০২৫, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

বার্সাকে খুব মিস করেন মেসি, ইউরোপিয়ান ক্যারিয়ারটা কাটাতে চেয়েছিলেন বার্সাতেই

গত রোববার গভীর রাতে পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ যখন ঘুমিয়ে, লিওনেল মেসির পা পড়েছিল আলোঝলমলে ক্যাম্প ন্যুর ঘাসে। এটি এমন মুহূর্ত, যার জন্য মেসি অপেক্ষায় ছিলেন চার বছর। সেই মুহূর্ত মেসিকে মনে করিয়ে দিয়েছে অসংখ্য পুরোনো স্মৃতি, অর্জন ও বেদনার গল্প।

মেসির ক্যাম্প ন্যু ভ্রমণের সময় সংবাদমাধ্যমের কোনো ক্যামেরা ছিল না, ছিল না আনুষ্ঠানিক আয়োজনও। কিন্তু সেই ফেরায় ছিল গভীর আবেগ, যা শুধু মেসিকেই নয়, স্পর্শ করেছে বার্সেলোনার কোটি কোটি সমর্থককেও। ক্যাম্প ন্যু থেকে ফিরে আবেগঘন এক বার্তাও দেন মেসি। যেখানে প্রকাশ পেয়েছে ক্যাম্প ন্যুতে তাঁর ফেরার আকাঙ্ক্ষাও।

মেসি সেই একই আকাঙ্ক্ষার কথা আরও খোলাসা করে বলেছেন স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্তকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে। বার্সেলোনা এখনো তাঁর হৃদয়ে—সে কথা বলেছেন এই আলাপচারিতায়। এর পাশাপাশি মেসি জানিয়েছেন, তিনি ও তাঁর পরিবার স্পেনের এ শহর নিয়ে নিয়মিতই কথা বলেন।

আরও পড়ুনক্যাম্প ন্যুতে ফিরে আবেগাপ্লুত মেসি, কী লিখেছেন ইনস্টাগ্রামে১০ নভেম্বর ২০২৫

বার্সেলোনাকে কতটা মিস করেন তা জানাতে গিয়ে মেসি বলেছেন, ‘আমরা বার্সেলোনাকে খুব মিস করি। আমার সন্তানেরা, আমার স্ত্রী আর আমি সব সময়ই আবার সেখানে বসবাস করার কথা বলি। আমাদের সেখানে বাড়ি আছে, সবকিছু আছে। তাই ঠিক এটাই আমরা চাই।’

একই সাক্ষাৎকারে ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে যাওয়ার দিন কী অনুভব করবেন, তা মেসি কল্পনা করেছিলেন এভাবে, ‘(সংস্কার করা) নতুন স্টেডিয়ামে ফিরে যাওয়া অদ্ভুত লাগবে…এ জায়গার সব স্মৃতি মনে পড়ে খুব আবেগপ্রবণ অনুভূতি হবে।’ মজার ব্যাপার হচ্ছে, মেসি জানতেন না যে সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার আগেই তাঁর সংস্কার করা ক্যাম্প ন্যু দেখার অভিজ্ঞতা হবে।

বার্সেলোনা ক্লাব ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর কেঁদে ফেলেছিলেন লিওনেল মেসি

সম্পর্কিত নিবন্ধ