জেন-জি বিদ্রোহ: এশিয়ায় ফিরছে আরব বসন্ত?
Published: 21st, September 2025 GMT
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃত ভূখণ্ডে এক নতুন ‘ভিজ্যুয়াল ব্যাকরণে’ প্রতিরোধ রচিত হচ্ছে। এটি এখন আর কোনো লুকোনো বা আড়ালে চলা সংগ্রাম নয়; বরং একেবারে লাইভস্ট্রিম হয়ে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের সামনে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।
এখানে বিপ্লবের চিত্রনাট্য যাঁরা লিখছেন, তাঁরা কোনো পেশাদার বিপ্লবী নন। তাঁরা সেই সব সাধারণ তরুণ-তরুণী, যাঁদের আর হারানোর কিছু নেই। তাঁদের আন্দোলনের ছবি আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে। আমরা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে শয়নকক্ষের খাটে শুয়ে থাকা প্রতিবাদকারীদের সেলফি তুলতে দেখেছি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ঢুকে পড়া উল্লসিত জনতার একই ছবি দেখেছি। আমরা নেপালের পার্লামেন্ট ভবন জ্বলতে থাকা আগুন দেখেছি।
এ সবই জেনারেশন জেড বা জেন-জির হতাশা, বঞ্চনা ও ক্ষোভের ভাষা। এখানে বিদ্রোহ এক প্রবল বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে।
গত বছর বাংলাদেশে, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায় আর অতিসম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া ও নেপালে তরুণেরা ক্ষমতার ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছেন। কোথাও তাঁরা শাসকদের উৎখাত করেছেন, কোথাও–বা গদি নড়িয়ে দিয়েছেন। এতগুলো দেশে একসঙ্গে এমন দৃশ্য কি নিছক কাকতালীয়? মোটেও না। এর পেছনে রয়েছে একটি বড় বৈশ্বিক প্রবণতা—সংগঠিত বামপন্থী ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পতন। যে আন্দোলনগুলো একসময় দুর্নীতি, বৈষম্য ও দমননীতির বিরুদ্ধে তরুণদের পাশে দাঁড়াত, আজ তারা ছিন্নভিন্ন, দুর্বল কিংবা অস্তিত্ব হারানোর পথে।
এশিয়ার একেক দেশে সামাজিক চুক্তি ভেঙে পড়েছে নানা কারণে। এর পেছনে কোথাও ভয়াবহ বেকারত্ব, কোথাও দুর্নীতিগ্রস্ত ও দমনমূলক অভিজাত শ্রেণি, কোথাও তীব্র অর্থনৈতিক সংকট, আবার কোথাও ধনী-গরিবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য কাজ করেছে। অথচ এসবের বিরুদ্ধে যে প্রগতিশীল শক্তি একসময় সোচ্চার ছিল, তারা এখন এতটাই অকার্যকর যে তরুণদের কাছে তারা আর কোনো বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প হয়ে উঠতে পারছে না। ফলে রাগান্বিত তরুণদের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে তাঁদের স্মার্টফোন।
জেন-জি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে রাজনীতির পরিপূরক হিসেবে নয়, রাজনীতির কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে দেখছে। তারা বুঝে গেছে, পুরোনো আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। তাই তারা নতুন কিছু গড়ে তুলছে। তারা বিকেন্দ্রীভূত, কিন্তু ভয়ংকর কার্যকর। তারা নিজেদের কণ্ঠ খুঁজে পেয়েছে। আর যারা ক্ষমতায় আছে, যদি এই কণ্ঠকে উপেক্ষা করে, তবে সেই উপেক্ষা তাদের জন্যই এক ভয়ানক বিপদ হয়ে উঠবে।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন তাঁদের মিছিল ও আন্দোলনের সমন্বয়ের হাতিয়ার। তবে এর ভেতরে কোনো দৃঢ় নেতৃত্ব নেই, নেই কোনো সুসংহত মতাদর্শ, নেই কোনো স্পষ্ট বিপ্লব-পরবর্তী স্বপ্নের রূপরেখা। তবু এই শূন্যতার মধ্যেই গড়ে উঠছে এক নতুন বাস্তবতা। এটি যেন এশিয়ায় আরব বসন্তের পুনর্জন্ম।
শ্রীলঙ্কায় যখন লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি ও বৈদেশিক ঋণের খেলাপি অবস্থায় লাখো মানুষ খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ কিনতে অক্ষম হয়ে পড়ে, তখনই আমরা রাজাপক্ষে পরিবারতন্ত্রের পতন ঘটতে দেখলাম। বাংলাদেশে যুব বেকারত্ব আর চাকরির কোটাব্যবস্থা (যা শাসক আওয়ামী লীগের সমর্থকদের পক্ষে বলে মনে করা হতো) সরকার পতনের মূল কারণ হয়ে ওঠে। ইন্দোনেশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং শ্রম অধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষাকে খর্ব করা আইন আগুনে ঘি ঢালে। তা শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ সহিংসতায় বিস্ফোরিত হয়। নেপালেও একই ধরনের বিষাক্ত সমীকরণ তৈরি হয়। সেখানে পুলিশের গুলিতে প্রতিবাদকারীদের মৃত্যু দেশকে রাজনৈতিক শূন্যতার দিকে ঠেলে দেয় এবং প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে বাধ্য করে।
এই জনক্ষোভ যখন বিস্ফোরিত হয়, তখন তা সরাসরি গিয়ে আঘাত করে পার্লামেন্ট ভবন, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ কিংবা রাজনীতিবিদদের বাড়ির মতো ক্ষমতার প্রতীকগুলোর ওপর। ডিজিটাল সংহতির মাধ্যমেই এই আন্দোলনগুলো সংগঠিত হয়।
তরুণদের এই প্রতিবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে এক নতুন তাৎপর্য দিয়েছে। অনেকে মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেবল ডানপন্থী ইকো-চেম্বার ও বিভাজনের জায়গা। কিন্তু বাস্তবে এখানে জন্ম নিচ্ছে বিরোধী প্রতিষ্ঠান ও দুর্নীতিবিরোধী এক প্রবল তরঙ্গ। এটি জেন-জিকে একত্র করছে। তবে সমস্যাটা হলো এ অঞ্চলে উদারবাদী রাজনীতির ভয়াবহ ভগ্নদশার কারণে তরুণেরা কোনো ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব পাচ্ছেন না।
ইন্দোনেশিয়ায় সুহার্তোর শাসন (১৯৬৭-১৯৯৮) বামপন্থাকে নির্মূল করে দিয়েছিল। সেই ব্যবস্থা আজও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। নেপালের সাবেক মাওবাদীরা রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধ করে ক্ষমতায় এসে জড়িয়ে পড়েছে সেই একই দুর্নীতিতে, যা কিনা তারা একসময় ধ্বংস করার শপথ নিয়েছিল। শ্রীলঙ্কায় জাতিগত সংকীর্ণতা বামপন্থাকে গ্রাস করেছে। আর বাংলাদেশে বামপন্থা প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।
এক দশকের বেশি আগে টুইটার ছিল আরব বসন্তের চালিকা শক্তি। আজকের এশিয়ায় সেই জায়গা নিয়েছে ইনস্টাগ্রাম ও টিকটক। প্রায়ই জেন-জিকে খাটো করে বলা হয়, তারা দুর্বল, ঝুঁকি নিতে ভয় পায় আর রিল-দুনিয়ার মধ্যে আটকে পড়েছে। অথচ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিদ্রোহগুলো তার সম্পূর্ণ উল্টো প্রমাণ হাজির করছে। আদতে এই প্রজন্ম বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়; বরং সোশ্যাল মিডিয়াকে তারা রূপান্তর করেছে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রে।
প্রতিটি ক্ষেত্রে লক্ষ করলে দেখা যাবে, প্রথম থেকেই আন্দোলন সহিংস হয়নি। রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নই আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। আন্দোলনকারীরা বুঝতে শিখেছেন, শুধু অর্থনৈতিক স্বস্তি বা রাজনৈতিক সংস্কার নয়, রাষ্ট্রীয় সহিংসতার জবাবদিহিও তাঁদের দাবির অংশ হতে হবে।
নেপালে আন্দোলনের শুরুটা ছিল উৎসবমুখর ও নির্দোষ। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীরা নিজেরাই ভেবেছিলেন, আন্দোলন শেষে তাঁরা জায়গাটা পরিষ্কার করে দেবেন। কিন্তু সেই পরিবেশ একমুহূর্তেই বদলে যায়, যখন পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকতে চাওয়া প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশেও রাষ্ট্রীয় সহিংসতাই আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
ইন্দোনেশিয়ায় আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তখনই, যখন তরুণ ডেলিভারি কর্মী আফফান কুরনিয়াওয়ান পুলিশের দমন অভিযানে এক সাঁজোয়া গাড়ির চাপায় মারা যান। ইতিহাসে এর অনুরূপ উদাহরণ আছে। ২০১০ সালে তিউনিসিয়ার তরুণ ফেরিওয়ালা মোহাম্মদ বুয়াজিজি তাঁর পণ্য পুলিশ কেড়ে নেওয়ায় আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। সেই আগুনই পুরো আরব বিশ্বকে গ্রাস করেছিল।
ইন্টারনেট সেন্সরশিপও পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। নেপালে যখন #নেপবেবি হ্যাশট্যাগ ভাইরাল হয়ে অভিজাতদের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিকে প্রকাশ্যে আনল, তখন সরকার অনলাইন সমালোচনাকে প্রাণঘাতী হুমকি হিসেবে দেখল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে তারা ভেবেছিল তরুণদের রাগ দমন করবে। কিন্তু বাস্তবে তরুণেরা আরও বেশি বিদ্রোহী হয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন।
তবে আরব বসন্তের শেষ পরিণতি এক সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটি হলো আশার জোয়ার থেকে ধ্বংসস্তূপে গড়িয়ে পড়া। আজকের এশিয়ার বিদ্রোহেরও একই পরিণতি ঘটতে পারে। কারণ, ক্ষোভ জিইয়ে রাখার মতো পরিস্থিতি এখনো বিদ্যমান। যদি তরুণদের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্য বামপন্থী বা প্রগতিশীল বিকল্প তৈরি না হয়, তাহলে সামনে অপেক্ষা করছে আরও ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা—ক্ষোভ, সামরিক অভ্যুত্থান, সাম্প্রদায়িক সংঘাত।
তবু এবার কিছু আলাদা। জেন-জি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে রাজনীতির পরিপূরক হিসেবে নয়, রাজনীতির কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে দেখছে। তারা বুঝে গেছে, পুরোনো আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। তাই তারা নতুন কিছু গড়ে তুলছে। তারা বিকেন্দ্রীভূত, কিন্তু ভয়ংকর কার্যকর। তারা নিজেদের কণ্ঠ খুঁজে পেয়েছে। আর যারা ক্ষমতায় আছে, যদি এই কণ্ঠকে উপেক্ষা করে, তবে সেই উপেক্ষা তাদের জন্যই এক ভয়ানক বিপদ হয়ে উঠবে।
● মীনা কান্ডাসামি ভারতের চেন্নাইভিত্তিক লেখক
নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া অনুবাদ: সারফুদ্দিন আহমেদ
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আরব বসন ত ইন দ ন শ য় র জন ত র ব মপন থ উপ ক ষ ক ষমত আরব ব
এছাড়াও পড়ুন:
দর্শক–সংকটে বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ আবারও বন্ধ ঘোষণা
আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’। দর্শক–সংকটে লোকসানের কারণে সিনেমা হলটি বন্ধ ঘোষণা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালিক আর এম ইউনুস রুবেল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি বন্ধের কথা জানান।
ফেসবুকে আর এম ইউনুস লেখেন, ‘১৯৭৪ সালের কোরবানির ঈদে যাত্রা শুরু করা মধুবন নানা চড়াই–উতরাই পেরিয়েছে। “ডাকু মনসুর” সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করা মধুবনে হাউসফুল চলেছে উত্তমকুমার ও মালা সিনহা অভিনীত “পৃথিবী আমারে চায়”, “গোপী গাইন বাঘা বাইন”, “সূর্যকন্যা”, “সীমানা পেরিয়ে”, “বসুন্ধরা”, “নাগ নাগীনি”, “লাইলী মজনু”, “রসের বাঈদানী”, “গোলাপী এখন ট্রেনে”, “সুজন সখী”সহ দর্শকনন্দিত বহু সিনেমা। এরপর নানা সংকটে ২০০৬ সালে মধুবন প্রথম বন্ধ হয়। ২০১৪ সালে মধুবন পুনরায় চালু হয়। ২০২১ সালে নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করে মধুবন। মধুবন সিনেপ্লেক্সকে টিকিয়ে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। কারণ, এর প্রতিটি ইটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমার বাবার হাতের ছোঁয়া, পরিবারের আবেগ ও অনুভূতি।’
প্রেক্ষাগৃহ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর ‘বাজি’ সিনেমা প্রদর্শনের মাধ্যমে নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করে মধুবন সিনেপ্লেক্স। ৩৩৬ আসন নিয়ে নতুন করে যাত্রা শুরু করা মধুবন রীতিমতো দর্শকজোয়ারে ভাসতে থাকে। প্রদর্শন ব্যবসায় রীতিমতো বাজিমাত করে ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’, ‘প্রিয়তমা’, ‘তুফান’, ‘রাজকুমার’, ‘বরবাদ’ সিনেমা। ব্যবসাসফল হয়েছে হিন্দি সিনেমা ‘জওয়ান’ ও ‘পাঠান’। সব শেষ ‘তান্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনকালে দর্শক সামাল দিতে নিয়মিত শো ছাড়াও মধ্যরাতে শো চালাতে হয়েছে। এরপর ভালো ছবি মুক্তি না পাওয়ায় দর্শকের অভাবে হলটির প্রদর্শন ব্যবসায় ছন্দপতন ঘটে।
বগুড়া জেলাজুড়ে একসময় সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ৩৮। তবে জেলাটি সিনেমার সেই জৌলুশ হারিয়েছে অনেক দিন। ভাঙা পড়েছে ৩১টি হল। শহরে ২টিসহ পুরো জেলায় মোটে ৭টি সিনেমা হল টিকে আছে। শুধু জেলা শহরেই একসময় ১০টি প্রেক্ষাগৃহ ছিল। সবশেষ শহরে চালু ছিল মধুবন সিনেপ্লেক্স ও সোনিয়া হল।
আরও পড়ুনআজ ‘বাজি’ দিয়ে নতুন করে মধুবন সিনেপ্লেক্সের যাত্রা শুরু১৫ অক্টোবর ২০২১একে একে বন্ধ হয়ে গেছে শহরের সাতমাথায় অবস্থিত মাধু ও মেট্রো সিনেমা, মেরিনা টকিজ, কবি নজরুল ইসলাম সড়কে উত্তরা টকিজ, চারমাথায় বীথি সিনেমা, জাহাঙ্গীরাবাদ ক্যান্টনমেন্টে সেনা অডিটরিয়াম, মাঝিরা ক্যান্টনমেন্টে উল্লাস সিনেমা হল, চক সূত্রাপুর মাসুম সিনেমা হল এবং বনানী সিনেমা হল। সর্বশেষ বন্ধ হয়েছে বাম্বি সিনেমা হল। মাধু, মেট্রো ও মেরিনা ভেঙে বহুতল শপিং সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।
মধুবন সিনেপ্লেক্সের মালিক আর এম ইউনুস রুবেল বলেন, কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, রক্ষণাবেক্ষণে গড়ে প্রতি মাসে খরচ দুই লাখ টাকা। গত ঈদুল আজহায় শাকিব খান অভিনীত ‘তান্ডব’ সিনেমার পর ভালো ছবি না থাকায় দর্শক নেই। ধুঁকে ধুঁকে চলছিল সিনেপ্লেক্সটি। ছবি চালিয়েও খরচ ওঠেনি। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। ঋণ করে কর্মচারীদের বেতন শোধ করতে হয়েছে। এভাবে মাসের পর মাস লোকসান গুনতে গুনতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য মধুবন সিনেপ্লেক্স বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। এরপর নির্বাচিত সরকার বিদেশি সিনেমা আমদানির উদ্যোগ নিলে চালু করবেন।