যৌথ অভিযানে ইরানের শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
Published: 21st, June 2025 GMT
সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে যৌথ অভিযানে ইরানের শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে তেহরান জানিয়েছে, হুমকির মুখে থাকা অবস্থায় তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করবে না।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতিতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ইরানের কোম শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় ইরানি বিপ্লবী গার্ডের বিদেশি শাখা কুদস ফোর্সের ফিলিস্তিন কর্পসের নেতৃত্বদানকারী সাইদ ইজাদি নিহত হয়েছেন। তাকে হত্যার ঘটনাকে ‘ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিমান বাহিনীর জন্য একটি বড় অর্জন’ বলে অভিহিত করেছে তেলআবিব। খবর রয়টার্সের।
কাৎজ ওই বিবৃতিতে বলেন, সাইদ ইজাদি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামলার আগে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে অর্থায়ন ও সামরিক সহযোগিতা করেছেন। গাজায় যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল মূলত ওই সময়ই।
ইরানি মিডিয়া বলছে, দেশটির বিপ্লবী গার্ড জানিয়েছে যে খোরামাবাদে হামলায় তাদের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা সাইদ ইজাদির নাম উল্লেখ করেনি।
শনিবার ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েল কোমে একটি ভবনে হামলা চালিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সেখানে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম নুর নিউজ জানিয়েছে, ১৩ জুন ইসরায়েল তাদের আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইরানে কমপক্ষে ৪৩০ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
তেলআবিবের দাবি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে ছিল। যদিও ইরান বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে রোগীর ভিড়, মুখে নেই মাস্ক
গত বুধবার সকাল ৮টা। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর জটলা। সবাই চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করছেন। কারও মুখে মাস্ক নেই। আবার যে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে এবং চিকিৎসকরা যে সবাইকে মাস্ক পরে বাইরে বেরুতে বলেছেন, সে ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা নেই।
লক্ষ্মীপুর জেলায় ইতোমধ্যে ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও ওই রোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই কর্তৃপক্ষের। নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেই কিটের। আক্রান্তরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা হলেও সবার নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে ছয়জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আক্রান্তরা বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন ছয়জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে পৃথক কর্নার, নমুনা পরীক্ষা কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিরও কোনো উদ্যোগ নেই। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সীমিত তদারকির কারণে ঝুঁকিতে রয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ। আক্রান্ত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর শরীরে জ্বর ছিল না, তবে প্রচণ্ড কাশি ছিল। আরও ছিল বুক ব্যথা, মাথা ব্যথা ও গলা ব্যথা। এসব উপসর্গের কারণে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য কিট বা প্রয়োজনীয় উপকরণ গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পৌঁছায়নি। ফলে জেলাভিত্তিক নমুনা পরীক্ষা বা চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. অরূপ পাল বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য কিটসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। রোগীরা মূলত ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত হচ্ছেন।’
এদিকে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কিছু সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হলেও তা খুবই সীমিত। দুইদিন মাইকিং করা হয়েছে, এরপর আর কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা চোখে পড়েনি। জনসচেতনতা তৈরিতে ঘাটতি রয়েছে, মানুষজনের মধ্যে এখনও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না।
জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে যেহেতু নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা ঢাকা থেকে হচ্ছে, তাই স্থানীয় পর্যায়ে শনাক্তে কিছুটা সময় লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই শরীর ব্যথা নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তার নমুনা পাঠানো হয় ঢাকায় এবং সেখান থেকেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাকি আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও একইভাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’