জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ শিক্ষক ও ১৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
Published: 22nd, June 2025 GMT
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আরও ২০ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন শিক্ষক এবং ১৯ জন কর্মকর্তা। কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ-রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।
শনিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের সিন্ডিকেটের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, যেসব কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রশাসনিক পদে থেকে রাজনৈতিক আনুগত্য দেখিয়েছেন কিংবা সরাসরি দলীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক প্রভাবে নানা সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তার চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে আইনগত কোনো বাধা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেন আর কোনো রাজনৈতিক প্রভাবের জায়গা না হয়, সে জন্য কঠোর সিদ্ধান্তের পথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সিন্ডিকেট যাদের অবসর প্রদান করেছে, তারা হলেন অধ্যাপক (ইতিহাস) ড. আবু মো. ইকবাল রুমী শাহ্; উপ-রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ, সরকার মোহাম্মদ এরশাদ, মাহাবুবা খানম, নাদিরা বেগম, মো. মামুনুর রশিদ, সুব্রত সাহা, মনজু সরকার, মো. শাহাজামাল, মো. ওয়াজিয়ার রহমান ও মো. রাফিজ আলী খান; উপপরিচালক মো. আব্দুর রাকিব, মো. সুলতান উদ্দিন, মো. আসাদুজ্জামান খান ও সাকিল আহম্মেদ; সহকারী রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রাকিব, আফরোজ আহমেদ বর্ণা ও মাহফুজা খাতুন; সহকারী পরিচালক এ কে এম সেলিম রেজা এবং সেকশন অফিসার মানিক চক্রবর্তী।
সিন্ডিকেট সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, ড. মো. নূরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ ড. এ টি এম জাফরুল আযম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম তালুকদার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রারসহ সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট দুই দফায় ২৯ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। সর্বশেষ ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ৯ জন কর্মকর্তাকে ২৫ বছর চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় অবসরে পাঠানো হয়। তারও আগে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ২৬৫তম সিন্ডিকেট সভায় ২০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে একই বিধি অনুযায়ী বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ক র চ লক সহক র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদলের কর্মী নিহত, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
পঞ্চগড়ে ছুরিকাঘাতে জাবেদ উমর (১৮) নামের ছাত্রদলের একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত আটটার দিকে শহরের সিনেমা হল মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
নিহত জাবেদ উমর ওরফে জয় পঞ্চগড় পৌরসভার পুরাতন ক্যাম্প এলাকার জহিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি পঞ্চগড় বাজারে একটি ফলের দোকানের ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি পঞ্চগড় পৌর ছাত্রদলের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। এ ঘটনার জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে রাতে শহরে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় লোকজন।
পুলিশ জানিয়েছে, পূর্বশত্রুতার জেরে ওই তরুণকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এ ঘটনায় পঞ্চগড় পৌরসভার নতুনবস্তি-খালপাড়া এলাকার দুই তরুণ জড়িত বলে অভিযোগ ওঠেছে।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাত আটটার পর পঞ্চগড় বাজারের সিনেমা হল মার্কেটে কয়েকজন তরুণ জটলা করে কথা-কাটাকাটি করছিলেন। একপর্যায়ে জাবেদ উমরের পেটে ছুরি মেরে পালিয়ে যান কয়েকজন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাপতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। তবে রংপুরে নেওয়ার পথেই জাবেদ উমরের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাঁর লাশ নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ করেন।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শইমী ইমতিয়াজ গতকাল রাতে বলেন, ‘আমরা রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাই, সিনেমা হল মার্কেট এলাকায় জয় (জাবেদ উমর) নামে একজন তরুণ ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। রংপুর মেডিকেলে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে আল আমিন ও পারভেজ নামের দুজন তরুণের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।’
শইমী ইমতিয়াজ আরও বলেন, ‘মৃত্যুর পর ওই তরুণের লাশ বাড়িতে নেওয়া হয়েছিল। দ্রুততম সময়ে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।’