সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা-মধ্যনগর সড়কের পাশে নওধার গ্রামে সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাড়ি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টানা তিনবার এমপি হওয়ার পরও নিজ বাড়িতে যাওয়ার সড়কটি চলাচলের উপযোগী করে যেতে পারেননি তিনি। 
ধর্মপাশা-মধ্যনগর সড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ঠাসা। ফলে প্রতিদিনই এ সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা।
সম্প্রতি সড়কটি সরেজমিন পরিদর্শনের সময় কথা হয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে। এ সময় এমপি রতনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে সৈয়দপুর গ্রামের ব্যবসায়ী রতন মিয়া বলেন, রতন টানা ১৫ বছর এমপি থাকার পরও তাঁর নিজ বাড়ি যাওয়ার সড়কে নির্বিঘ্নে চলাচলের মতো ব্যবস্থা হয়নি।
পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জিয়া উদ্দিন জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য বারবার এমপির রতনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তারা। কিন্তু এতে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অধীনে থাকা ধর্মপাশা-মধ্যনগর সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। ২০১৫ সালের ১১ আগস্ট সুনামগঞ্জ সওজের যাবতীয় কার্যক্রম নেত্রকোনা সওজের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকে ধর্মপাশা উপজেলার সওজের সব কার্যক্রম নেত্রকোনা সওজের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।
২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ধর্মপাশা কংস সেতুর উত্তর পাশ থেকে মধ্যনগরের পিঁপাড়াকান্দা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ করা হয়। দুর্বল কাজের কারণে কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গলইখালী থেকে মধ্যনগর পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থান ভাঙনের কবলে পড়ে হাওরে বিলীন হয়েছিল। বন্যাও ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়কটি। গত বছর গাছতলা বাজার থেকে মধ্যনগর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হলেও ধর্মপাশা থেকে গাছতলা বাজার পর্যন্ত বাকি অর্ধেক সড়ক সংস্কার হয়নি। কোথাও কোথাও সড়কটি ভেঙে সরু হয়ে গেছে। ফলে যানবাহন পাশ কাটাতে গিয়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। এ সড়কের বিজয় ২৪ চত্বর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-সংলগ্ন এলাকা, সৈয়দপুর ও মাটিকাটা গ্রামের সামনে এবং বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ও সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের সামনে সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় গর্তের। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। এতে নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে।
বাদশাগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সাকিন শাহ বলেন, এ সড়কের ওপর সুনামগঞ্জের কর্তৃত্ব নেই। ফলে সড়কটি অবহেলার শিকার। যা কাম্য নয়। 
বৌলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন রশিদ ও থানুরা পাছাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন, জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, ঢাকা-মোহনগঞ্জ রুট ব্যবহার করে যেসব পর্যটক টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করেন, তাদের বাধ্য হয়ে এ সড়ক দিয়েই যেতে হয়। ফলে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। 
ধর্মপাশা ইউএনও জনি রায় আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, জরুরি কাজে মাঝেমধ্যে এই সড়ক দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু ভাঙাচোরা আর খানাখন্দের কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয়। দ্রুত এ সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত। 
নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল নূর সালেহীন বলেন, সড়কটির বাকি অংশ সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগীয় মেরামতের অংশ হিসেবে সড়কের খানাখন্দ দ্রুত মেরামত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক ন ত রক ন র সড়ক র সওজ র এ সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

আজ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস

আজ ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তন হয়। পরে ওই বছরের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনার জেরে সেনাবাহিনীতে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান। খন্দকার মোশতাক সরকারকে উৎখাতে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে ৩ নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থান হয়। এরপর গৃহবন্দি করা হয় মুক্তিযুদ্ধের বীরউত্তম সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। দেশ সরকারহীন হয়ে পড়ে।

খন্দকার মোশতাকের কাছ থেকে পদোন্নতি আদায় করে নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন খালেদ মোশাররফ। এরই ধারাবাহিকতায় ৬ নভেম্বর রাতে জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে সৈনিকরা। জাসদ নেতা কর্নেল আবু তাহেরের অনুগত বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা এ সময় জেনারেল জিয়াকে সমর্থন জানিয়ে দলটির অনুসৃত বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করে। তবে জিয়াউর রহমান সে পথে না গিয়ে সরকার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। ৭ নভেম্বরের পর তিনি সামরিক শাসক থেকে রাজনীতিকে পরিণত হন।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে সিপাহী জনতা রাজপথে নেমে এসেছিলো জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।’’

জনগণের সমর্থনের কারণে জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বরের বিপ্লবে মহানায়কে পরিণত হন— বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি ওই বিবিৃতিতে আরও বলেন, ‘‘ সিপাহী-জনতার এই বিপ্লবের সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। ৭ নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্নৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছি।’’

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ