তিনি পরিচিত ছিলেন ইমাম মুহিউদ্দিন আবু জাকারিয়া আন-নববি নামে। তবে তাঁর পুরো নাম ইয়াহিয়া ইবনে শারাফ ইবনে মুরি ইবনে হাসান। তাঁর ডাকনাম আবু জাকারিয়া (জাকারিয়ার বাবা), মূল নাম ইয়াহিয়া আর উপাধি মুহিউদ্দিন (দীনকে জীবনদানকারী)। তাঁর জীবন শুধু একজন আলেমের গল্প নয়; বরং একটি আদর্শ।
৬৩১ হিজরি সনে সিরিয়ার হাওরান অঞ্চলের নবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণেই তাঁকে নববি বা নবার অধিবাসী বলা হয়।
কৈশরেই কোরআনের প্রতি তার ভালোবাসা জন্মায়। ইয়াসিন ইবনে ইউসুফ আল-মারাকিশি বর্ণনা করেন, ‘১০ বছরের নববিকে দেখেছি, সহপাঠীরা তাঁকে জোর করে খেলতে নিয়ে যেত, কিন্তু তিনি কাঁদতে কাঁদতে পালিয়ে কোরআন পড়তেন। আমি তাঁর শিক্ষককে বলেছিলাম, এই শিশু একদিন তাঁর যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম হবে।’ (তাজুদ্দিন আস-সুবকি, তাবাকাতুশ শাফিইয়্যা আল-কুবরা, ৮/৩৯৬, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৯৯২)
এ ঘটনা তাঁর জীবনের ভিত্তি গড়ে দেয়। কৈশোরে পৌঁছেই তিনি কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেন এবং ইলমের পথে যাত্রা শুরু করেন।
আরও পড়ুনউত্তম ব্যবসায়ী হওয়ার নববি কৌশল০৯ জুন ২০২৫১০ বছরের নববিকে দেখেছি, সহপাঠীরা তাঁকে জোর করে খেলতে নিয়ে যেত, কিন্তু তিনি কাঁদতে কাঁদতে পালিয়ে কোরআন পড়তেন।তাজুদ্দিন আস-সুবকি, তাবাকাতুশ শাফিইয়্যা আল-কুবরাঅক্লান্ত জ্ঞান সাধনাসিরিয়ার দামেস্কে পৌঁছে ইমাম নববি শামের (লেভান্ট) প্রখ্যাত মুফতি তাজুদ্দিন আল-ফাজারির কাছে শাফিঈ ফিকহ শিক্ষা শুরু করেন। তিনি মুহাম্মদ ইবনে আহমদ আল-মাকদিসি, ইসমাঈল ইবনে ইবরাহিম ইবনে আবিল ইয়াসার, আহমদ ইবনে আবদুদ দাইম প্রমুখ আলেমদের কাছে হাদিস ও বিভিন্ন শাস্ত্রে জ্ঞানার্জন করেন। (আল-জাবআন, আল-ইমাম আন-নাবাবি: হায়াতুহু ওয়া আসারুহু, পৃ.
তিনি দিনরাত ইলমের পেছনে সময় ব্যয় করতেন। পথচলার সময়ও তিনি মুখস্থ বিদ্যা আওড়ানোতে মগ্ন থাকতেন। ইমাম জাহাবি বলেন, ‘তিনি ছয় বছর ধরে এভাবে জ্ঞানার্জন করেন, তারপর লেখালেখি, শিক্ষাদান এবং সমাজের কল্যাণে কাজ শুরু করেন।’ (জাহাবি, সিয়ার আলাম আন-নুবালা, ২০/২৪৯, মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ১৯৮৩)
তাঁর এই নিষ্ঠা তাঁকে তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ আলেমদের একজন করে তোলে।
তাকওয়া ও সত্যনিষ্ঠাইমাম নববির জীবন ছিল তাকওয়া ও সত্যনিষ্ঠার এক জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি ছিলেন গম্ভীর, হাসি–তামাশায় অনীহা প্রকাশ করতেন এবং সত্য কথা বলতে কখনো ভয় পেতেন না। তিনি শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, তাঁদের নসিহত করতেন।
তিনি দিনে মাত্র একবার রাতে খাবার গ্রহণ করতেন এবং কারও কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করতেন না। ইবনে কাসির বলেন, ‘তিনি ছিলেন জ্ঞান, আমল ও খোদাভীতির এক অপূর্ব সমন্বয়। তাঁর সময়ে বা তাঁর আগে তাঁর মতো ব্যক্তিত্ব আর ছিল না।’ (আস-সাখাভি, আল-মানহাল আল-আযব আর-রবি ফি তারজামাতিন নববি, পৃ. ৪৩, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ২০০৫)
তাঁর এই জীবনধারা তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
আরও পড়ুনকোরআনের প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি২৬ মে ২০২৫দামেস্কের প্রাচীন উমুবি মসজিদ, যেখানে ইমাম নববি প্রথম জ্ঞান শেখার উদ্দেশ্যে যানউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিউ ইয়র্ক-এর ফাস্ট লেডি ‘রামা দুয়াজি’
আমেরিকান রাজনীতিবিদ নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির প্রিয়তমা স্ত্রী রামা দুয়াজি। যার ব্যক্তিত্ব নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। জোহরান মামদানির সঙ্গে এই শিল্পীর হিঞ্জ ডেটিং অ্যাপেই পরিচয়। ২০২৪ সালের অক্টোবরে মেয়র পদে প্রার্থিতা ঘোষণার ঠিক আগে তারা বাগদান সারেন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে লোয়ার ম্যানহাটনে তাদের বিয়ে হয়।
রামা দামাস্কে জন্মগ্রহণকারী একজন সিরিয়ান চিত্রকর এবং অ্যানিমেটর যিনি বর্তমানে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে থাকেন। তিনি ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে communication design -এ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং নিউ ইয়র্ক সিটির স্কুল অফ ভিজ্যুয়াল আর্টস থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
আরো পড়ুন:
রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো
সকালে গোসল করার উপকারিতা
দুয়াজির ইনস্টাগ্রামে দৃষ্টি দিলেই দেখা যায়- মধ্যপ্রাচ্যের নারী ও ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা তার শিল্পকর্ম-এর অন্যতম উপকরণ। ব্যক্তিগত জীবনকে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব একটা প্রচার করেন নারামা দুওয়াজি একজন প্রতিভার শক্তিধর ব্যক্তিত্ব। বিমূর্ত আত্ম-প্রতিকৃতি, মধ্যপ্রাচ্যের দুর্দশার রাজনৈতিক চিত্র তার শিল্পে স্থান পায়। প্রতিটি কাজ তার আবেগ এবং মনের অবস্থা প্রতিফলিত করে।
তারচিত্রকল্পগুলো প্রায়শই একরঙা রঙে উপস্থাপন করা, তার ছবি এবং অ্যানিমেশনগুলি সৃজনশীল এবং স্বাধীনতার একটি শক্তিশালী অনুভূতি ধারণ করে।
সূত্র: লাইফস্টাইল এশিয়া
ঢাকা/লিপি