Prothomalo:
2025-08-08@00:33:56 GMT

কে ছিলেন ইমাম নববি

Published: 23rd, June 2025 GMT

তিনি পরিচিত ছিলেন ইমাম মুহিউদ্দিন আবু জাকারিয়া আন-নববি নামে। তবে তাঁর পুরো নাম ইয়াহিয়া ইবনে শারাফ ইবনে মুরি ইবনে হাসান। তাঁর ডাকনাম আবু জাকারিয়া (জাকারিয়ার বাবা), মূল নাম ইয়াহিয়া আর উপাধি মুহিউদ্দিন (দীনকে জীবনদানকারী)। তাঁর জীবন শুধু একজন আলেমের গল্প নয়; বরং একটি আদর্শ।

৬৩১ হিজরি সনে সিরিয়ার হাওরান অঞ্চলের নবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণেই তাঁকে নববি বা নবার অধিবাসী বলা হয়।

কৈশরেই কোরআনের প্রতি তার ভালোবাসা জন্মায়। ইয়াসিন ইবনে ইউসুফ আল-মারাকিশি বর্ণনা করেন, ‘১০ বছরের নববিকে দেখেছি, সহপাঠীরা তাঁকে জোর করে খেলতে নিয়ে যেত, কিন্তু তিনি কাঁদতে কাঁদতে পালিয়ে কোরআন পড়তেন। আমি তাঁর শিক্ষককে বলেছিলাম, এই শিশু একদিন তাঁর যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম হবে।’ (তাজুদ্দিন আস-সুবকি, তাবাকাতুশ শাফিইয়্যা আল-কুবরা, ৮/৩৯৬, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৯৯২)

এ ঘটনা তাঁর জীবনের ভিত্তি গড়ে দেয়। কৈশোরে পৌঁছেই তিনি কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেন এবং ইলমের পথে যাত্রা শুরু করেন।

আরও পড়ুনউত্তম ব্যবসায়ী হওয়ার নববি কৌশল০৯ জুন ২০২৫১০ বছরের নববিকে দেখেছি, সহপাঠীরা তাঁকে জোর করে খেলতে নিয়ে যেত, কিন্তু তিনি কাঁদতে কাঁদতে পালিয়ে কোরআন পড়তেন।তাজুদ্দিন আস-সুবকি, তাবাকাতুশ শাফিইয়্যা আল-কুবরাঅক্লান্ত জ্ঞান সাধনা

সিরিয়ার দামেস্কে পৌঁছে ইমাম নববি শামের (লেভান্ট) প্রখ্যাত মুফতি তাজুদ্দিন আল-ফাজারির কাছে শাফিঈ ফিকহ শিক্ষা শুরু করেন। তিনি মুহাম্মদ ইবনে আহমদ আল-মাকদিসি, ইসমাঈল ইবনে ইবরাহিম ইবনে আবিল ইয়াসার, আহমদ ইবনে আবদুদ দাইম প্রমুখ আলেমদের কাছে হাদিস ও বিভিন্ন শাস্ত্রে জ্ঞানার্জন করেন। (আল-জাবআন, আল-ইমাম আন-নাবাবি: হায়াতুহু ওয়া আসারুহু, পৃ.

৮, দারুল মা’আরিফ, ২০০৭)

তিনি দিনরাত ইলমের পেছনে সময় ব্যয় করতেন। পথচলার সময়ও তিনি মুখস্থ বিদ্যা আওড়ানোতে মগ্ন থাকতেন। ইমাম জাহাবি বলেন, ‘তিনি ছয় বছর ধরে এভাবে জ্ঞানার্জন করেন, তারপর লেখালেখি, শিক্ষাদান এবং সমাজের কল্যাণে কাজ শুরু করেন।’ (জাহাবি, সিয়ার আলাম আন-নুবালা, ২০/২৪৯, মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ১৯৮৩)

তাঁর এই নিষ্ঠা তাঁকে তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ আলেমদের একজন করে তোলে।

তাকওয়া ও সত্যনিষ্ঠা

ইমাম নববির জীবন ছিল তাকওয়া ও সত্যনিষ্ঠার এক জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি ছিলেন গম্ভীর, হাসি–তামাশায় অনীহা প্রকাশ করতেন এবং সত্য কথা বলতে কখনো ভয় পেতেন না। তিনি শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, তাঁদের নসিহত করতেন।

তিনি দিনে মাত্র একবার রাতে খাবার গ্রহণ করতেন এবং কারও কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করতেন না। ইবনে কাসির বলেন, ‘তিনি ছিলেন জ্ঞান, আমল ও খোদাভীতির এক অপূর্ব সমন্বয়। তাঁর সময়ে বা তাঁর আগে তাঁর মতো ব্যক্তিত্ব আর ছিল না।’ (আস-সাখাভি, আল-মানহাল আল-আযব আর-রবি ফি তারজামাতিন নববি, পৃ. ৪৩, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ২০০৫)

তাঁর এই জীবনধারা তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

আরও পড়ুনকোরআনের প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি২৬ মে ২০২৫দামেস্কের প্রাচীন উমুবি মসজিদ, যেখানে ইমাম নববি প্রথম জ্ঞান শেখার উদ্দেশ্যে যান

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: করত ন ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

মোদির অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ালো

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের ধারণা ছিল ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের বিশাল বাজারকে কোনোভাবেই এড়াতে পারবেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় বড় ধরনের ছাড় দিতে তারা প্রস্তুত ছিলেন না। এর পরিণতিতে ভারতের ওপর ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্কের খড়গ নেমে এসেছে। বুধবার রয়টার্স এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভারতীয় কর্মকর্তাদের পাঁচ দফা বাণিজ্য আলোচনার হয়েছিল। সর্বশেষ আলোচনার পরে ভারতীয় কর্মকর্তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি অনুকূল চুক্তি নিশ্চিত করার ব্যাপারে এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, তারা গণমাধ্যমে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন- শুল্ক ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করা যেতে পারে। ভারতীয় কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন, ট্রাম্প ১ আগস্টের সময়সীমার কয়েক সপ্তাহ আগে নিজেই চুক্তিটি ঘোষণা করবেন। কিন্তু ঘোষণাটি কখনো আসেনি।

শেষ পর্যন্ত ৩০ জুলাই ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার অপরাধে তিনি ভারতের ওপর আরো শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন। বুধবার তিনি ভারতের ওপর আরো ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে ভারতের ওপর আরোপিত মোট মার্কিন শুল্কের পরিমাণ হলো ৫০ শতাংশ।

উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক ভুল বিচার, ভুলবার্তা এবং তিক্ততার মিশ্রণ বিশ্বের বৃহত্তম ও পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চুক্তিটি ভেঙে দিয়েছে, যাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১৯০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন সফর করেছিলেন। ওই সময় মোদি ও ট্রাম্প ২০২৫ সালের শরৎকালের মধ্যে একটি চুক্তি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণেরও বেশি করে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে সম্মত হন। ৪৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি পূরণের জন্য ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত জ্বালানি কেনার এবং প্রতিরক্ষা আমদানি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা এখন স্বীকার করেছেন,  ট্রাম্প একটি ‘বড়’ আসন্ন চুক্তির কথা বলার পর ভারত অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল। তারা এটিকে একটি সংকেত হিসেবে নিয়েছিল যে, একটি অনুকূল চুক্তি হাতে আসছে। এরপর নয়াদিল্লি তার অবস্থান কঠোর করে, বিশেষ করে কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের উপর।

জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে আলোচনায় জড়িত একজন ভারতীয় কর্মকর্তা বলেছিলেন, “আমরা দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৪০ কোটি মানুষের বাজারকে উপেক্ষা করতে পারে না।”

হোয়াইট হাউসের কাছে এটি অগ্রহণযোগ্য ছিল। 

আলোচনার সাথে পরিচিত ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি সূত্র বলেছেন, “ট্রাম্প বৃহত্তর বাজারে প্রবেশ সুবিধা, বিনিয়োগ ও বৃহৎ ক্রয়ের মাধ্যমে একটি শিরোনাম-আকর্ষণীয় ঘোষণা চেয়েছিলেন।”

একজন ভারতীয় কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, নয়াদিল্লি অন্যদের প্রস্তাবের সাথে মেলে না।

উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ কোরিয়া ট্রাম্পের ১ আগস্টের সময়সীমার ঠিক আগে একটি চুক্তি করে। তারা ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ, জ্বালানি আমদানি এবং চাল ও গরুর মাংসের উপর ছাড় দিয়ে ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ হার নিশ্চিত করে।

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ও লবিস্ট মার্ক লিনস্কট বলেন, “এক পর্যায়ে উভয় পক্ষই চুক্তি স্বাক্ষরের খুব কাছাকাছি ছিল। অনুপস্থিত উপাদানটি ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের লাইন।”

আলোচনায় জড়িত একজন ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোদি ফোন করতে পারতেন না, কারণ ট্রাম্পের সাথে একতরফা কথোপকথন অন্য পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেছেন।

তবে, অন্য তিনজন ভারতীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে মধ্যস্থতা করার বিষয়ে ট্রাম্পের বারবার মন্তব্য আলোচনাকে আরো চাপে ফেলেছে। এটি মোদিকে শেষ পর্যায়ে ফোন না করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

এই কর্মকর্তাদের এক জন বলেছেন, “পাকিস্তান সম্পর্কে ট্রাম্পের মন্তব্য ভালোভাবে গ্রহণ করা হয়নি। আদর্শভাবে, ভারতের উচিত ছিল মার্কিন ভূমিকা স্বীকার করা এবং চূড়ান্ত কলটি আমাদেরই ছিল তা স্পষ্ট করে দেওয়া।”

ভারতীয় সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দুর্বল বিচারবুদ্ধির কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেছেন, “ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, জাপান এবং ইইউর সাথে আমেরিকার আরো ভালো চুক্তি হওয়ার পর আমাদের প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক সহায়তার অভাব ছিল। আমরা এখন এমন একটি সংকটের মধ্যে আছি যা এড়ানো যেত।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজমেরী বেগমের দুটি কিডনিই বিকল, চান সহায়তা
  • কুয়েত থেকে হুইলচেয়ারে ফিরছেন কর্মক্ষমতা হারানো প্রবাসীরা
  • হৃতিকের ছেলেকে পাপারাজ্জিদের তাড়া, ভিডিও ভাইরাল
  • ‘ট্রাম্প-মোদি ব্রোমান্স’ সত্ত্বেও ভারত–মার্কিন সম্পর্ক তলানিতে কেন, সামনে কী
  • সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও নারী কেন ন্যায্য হিস্যা পাবে না
  • টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
  • পঞ্চগড়ে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদলের কর্মী নিহত, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • এখানে অযোগ্যরা তেল দেওয়া ছাড়া জায়গা তৈরি করতে পারে না
  • ঢাবিতে বিক্ষোভে মেয়েদের ভিডিও করার সময় কলেজছাত্র আটক
  • মোদির অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ালো