সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ, শনিবার থেকে তিন ধাপে কর্মবিরতি
Published: 24th, June 2025 GMT
সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সিলেট জেলা পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ সময় দাবি পূরণ না হলে সব পাথর কোয়ারিতে কর্মবিরতি, পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহনে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
কর্মসূচিতে তিনটি ধাপে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে ২৮ জুন (শনিবার) সিলেটের সব পাথর কোয়ারি থেকে লোড-আনলোড পয়েন্টে মালিক-শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি। দাবি পূরণ না হলে ৩০ জুন থেকে সিলেটের সব পণ্য পরিবহনের মালিক-শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি ও ২ জুলাই থেকে সিলেটে জেলার সব ধরনের পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহনে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরিতি।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল করে নগরের চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হন। পরে সেখানে বিভিন্ন ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরে বেলা দেড়টায় চৌহাট্টা এলাকা থেকে বন্দরবাজার মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল জলিল। সিলেটের বিমানবন্দর থানা পাথর ব্যবসায়ী ও স্টোন ক্রাশার মালিক সমিতির সহসভাপতি শাব্বির আহমদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগরের আমির ফখরুল ইসলাম, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, জাতীয় নাগরিক পার্টি সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দীন সাহান, যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে মেজর (অব.
আরও বক্তব্য দেন জাফলং বল্লাঘাট স্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম পারভেজ, বিছনাকান্দি পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন, সিলেট সদর পাথর বালু ও স্টোন ক্রাশার মালিক সমবায় সমিতির সদস্য মন্তাজ আলী ও নাজিম উদ্দিন, সালুটিকর পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি দিলু মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি শওকত আলী, সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজির আহমদ, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ খান প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচির একপর্যায়ে সিলেটের জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়কের এক পাশ বন্ধ রাখা হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, পরিবেশের দোহায় দিয়ে পাথর উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ, তাঁদের নিকটাত্মীয়রা পাথর আমদানির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। ভিন্ন দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের গরিব মানুষকে মারার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনকোয়ারি থেকে পাথর তুললে কী ক্ষতি হয়২০ জুন ২০২৫বক্তারা আরও বলেন, দেশের বেশির ভাগ পাথর কোয়ারি লিজ দেওয়া হলেও সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি লিজ দেওয়া হচ্ছে না। কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই, কোনো বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়াই সিলেটের পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখা হয়েছে। এ জন্য সিলেটের পাথর–সংশ্লিষ্ট লাখ লাখ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। এখন স্টোন ক্রাশারগুলোর বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে গরিব অসহায় মানুষের পেটে আবার লাথি মারা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সুনামগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হওয়ার প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরে পৃথক এই কর্মসূচি পালিত হয়।
গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের পাশে যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ভর্তি হয়ে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থী স্নেহা চক্রবর্তী, সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা জাহান ওরফে খুশি ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম (৫৫) নিহত হন।
আজ সকালে সুনামগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর মোড়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে অবস্থা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এখানে ‘কথায় কথায় অবরোধ, এখন তোমার কোথায় বোধ’, ‘আর কত খুশি মরলে, প্রশাসনের টনক নড়বে’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাহিরে’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়। কর্মসূচি চলাকালে সড়কে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা ফিটনেসবিহীন যান চলাচলে বাধা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বেলা একটা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাকবিল হোসেন, জাকারিয়া নাইম, রাহাত আহমেদ, আশরাফ হোসেন; টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী হুমায়ুন আহমদ, শান্ত রায়, সুমাইয়া আক্তার, আমিন উদ্দিন, পূর্বা তালুকদার, তাহমিদা জাহান, বুশরা আক্তার প্রমুখ।
আরও পড়ুনবিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শেষে মেয়েকে তুলে দেন অটোরিকশায়, ১০ মিনিট পর পেলেন মৃত্যুর খবর১৮ ঘণ্টা আগেবক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে এখন প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ প্রশাসন, পুলিশ উদাসীন। এই সড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি চলে। অদক্ষ চালকেরা গাড়ি চালান। কিন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অথচ তুচ্ছ কোনো কিছু অজুহাত পেলেই পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্মঘট ডেকে মানুষকে ভোহান্তিতে ফেলেন। সড়কে এসব হত্যা বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থী স্নেহা, আফসানার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে একই দাবিতে মানববন্ধন করে বিশ্বজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এরপর একই স্থানে মানববন্ধন করে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা শাখা। এসব কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, নিহত শিক্ষার্থী আফসানা জাহানের মামা সাইফুল ইসলাম (ছদরুল), সাংবাদিক লতিফুর রহমান ও মাহবুবুর রহমান পীর, শিক্ষক শাহিনা চৌধুরী, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ওবায়দুল হক, উন্নয়নকর্মী সালেহিন চৌধুরী, বিশ্বজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উপদেষ্টা নুরুল হাসান আতাহের, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কর্ণ বাবু দাস প্রমুখ।
আরও পড়ুনজন্মদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, ব্যাগে ছিল সহপাঠীদের দেওয়া উপহার৪ ঘণ্টা আগেসুনামগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন। আজ দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে