ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিলেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য
Published: 25th, June 2025 GMT
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন দেশটির একজন কংগ্রেস সদস্য।
নরওয়ের নোবেল কমিটিকে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য আর্ল ‘বাডি’ কার্টার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এ মনোনয়ন দেন। খবর আরটির।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিম জেরুজালেম ও তেহরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকাটি ‘অসাধারণ ও ঐতিহাসিক।’
ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েকদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে পারমাণবিক স্থাপনায় নজিরবিহীন বিমান হামলা চালায়। এসময় ট্রাম্পের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
তবে তেহরান বলেছে, তাদের কোনো স্থাপনাই ধ্বংস হয়নি ও তাদের বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালেও দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির মূল অংশ ধ্বংস হয়নি বলে প্রাথমিক এক মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যে বলা হয়েছে। এতে কর্মসূচিটি কয়েক মাসের জন্য পেছানো হয়েছে মাত্র।
বুধবার এক এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। সিএনএন বলছে, সাতটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এই মূল্যায়ন এর আগে প্রকাশিত হয়নি।
এই মূল্যায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা। ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের যুদ্ধপরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প ওই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইসরায়েল ও ইরান আবারও একে অপরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এরপরই উভয় পক্ষকে কড়া ভাষায় তিরস্কার করেন ট্রাম্প। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এ ঘটনার পর ইসরায়েল আর নতুন করে হামলায় যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য ল য ক তর ষ ট র ন ব ল প রস ক র য ক তর ষ ট র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।
গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন