কেশবপুরের সাবেক পৌর মেয়রকে বাড়িতে গিয়ে ধাওয়া, মারধর
Published: 2nd, July 2025 GMT
যশোরের কেশবপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে ধাওয়া করে পিটুনি দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে কেশবপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলামের ভবানীপুরের বাড়ি ঘেরাও করে স্থানীয় ছাত্র–জনতা। পরে তাঁকে ঘর থেকে বেরোনোর আহ্বান জানালে তিনি ঘরের পেছন থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। তারপর লোকজন ধাওয়া করলে তিনি পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা রফিকুলকে মারধর করে। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে কেশবপুর থানায় নিয়ে যায়।
কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, রফিকুল ইসলাম সন্ত্রাসীদের গডফাদার ছিলেন। মধ্যকুল গ্রামের জামাল উদ্দিন নামের এক সন্ত্রাসীর বাড়িতে ৭ মে বোমা বিস্ফোরণ হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে। ওই জামাল বাহিনীর আশ্রয়–প্রশ্রয় দিতেন রফিকুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি গোপনে বাড়িতে থাকার খবর জানতে পেরে ছাত্র-জনতা তাঁকে পাকড়াও করে।
রফিকুল ইসলামের বড় ভাই মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ দুপুরের পরে ৫০ থেকে ৬০ জন লোক তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তাঁর ভাই বাড়িতে ছিলেন। তিনি পালিয়ে গেলে বাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাব ভাঙচুর করা হয়। তিনি বলেন, পুলিশ এসে গ্রেপ্তারের সময় লোকজন তাঁর ভাইয়ের ওপরও হামলা করে। সরকার পতনের পর থেকে রফিকুল আত্মগোপনে ছিলেন। মেয়ের এইচএসসি পরীক্ষা চলার কারণে কয়েক দিন ধরে বাড়িতে আছেন। সেই খবর জানতে পেরে বাড়ি ঘেরাও করা হয়।
কেশবপুরে বিগত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সমন্বয়কারী মিরাজ হোসেন বিশ্বাস বলেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় ক্ষমতার দাপট দেখাতেন। তিনি জামাল বাহিনী নামে একটি বাহিনী গড়ে তোলেন। তারা কেশবপুরের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করত এবং মানুষের ওপর নির্যাতন চালাত। তাদের ভয়ে এলাকার মানুষ কোনো কথা বলতে পারত না। রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এ কারণেই ছাত্র–জনতা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। তিনি দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর বাড়িতে এলে ছাত্র–জনতা গোপনে খবর পেয়ে তাঁকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হিলি বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতে জুস রপ্তানি
প্রথমবারের মতো দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে জুস রপ্তানি হয়েছে। আকিজ গ্রুপ ও হাসেম ফুড নামে দুটি কোম্পানি এসব জুস রপ্তানি করে।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ মেট্রিকটন জুস বোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান ভারতে প্রবেশ করে। ভারতের দিপালী এন্টারপ্রাইজ ও সুকন ডিংকস নামের দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব জুস আমদানি করেছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাশেদ ফেরদৌস বলেন, “গত মঙ্গলবার এই বন্দর দিয়ে প্রথম ১০টন জুস রপ্তানি হয়েছে। আজও দুটি প্রতিষ্ঠান জুস রপ্তানি করেছে। আমাদের সাথে আরো কোম্পানি যোগাযোগ করছে বিভিন্ন পণ্য আমরা রপ্তানি করব। গত দুইদিনে দুই ট্রাকে প্রায় ২০ টন অর্থাৎ ২ হাজার কার্টন জুস রপ্তানি করা হয়েছে। যার রপ্তানি মূল্য প্রায় ১৮ হাজার ডলার। এসব যাচ্ছে ভারতের কলকাতায়।”
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, “চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অর্থ বছরের শেষ পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি। তবে নতুন অর্থ বছরের প্রথমদিন থেকেই ভারতে বেশ কয়টি কোম্পানিতে জুস রপ্তানি করা হচ্ছে। এটা আমাদের দেশের জন্য নিঃসন্দেহে ভালো।”
সম্প্রতি চলতি বছরের গত ১৭ মে বেশকিছু স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয় ভারত সরকার।
তবে হিলি স্থলবন্দর সেই বিধিনিষেধ এর আওতামুক্ত থাকায় বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো এই বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে রপ্তানি করছে।
ঢাকা/মোসলেম/এস