লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি কমেছে। সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে পানি কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি কমলেও তিস্তা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় নদী পাড়ের বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে বালুভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।

গতকাল রবিবার মধ্যরাতে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি জেলার পাঁচটি উপজেলার নিচু এলাকায় প্রবেশ করায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ফলে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

মেরামতের দুই মাসেই ফের বেহাল মানিকপুর সড়ক

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম

কালীগঞ্জের ভোটমারী এলাকার কৃষক রহমত বলেন, ‍“তিস্তার পানি বাড়ায় আমাদের এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। শত শত বসতভিটা, রাস্তাঘাট এবং ফসলি জমি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গতকাল রাত থেকে আমরা নিজেরাই বস্তায় বালু ভরে নদীর ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি।”

আদিতমারীর গোবর্ধান গ্রামের কৃষক সহিদার রহমান বলেন, “নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়লেও সোমবার সকাল থেকে তা কমতে শুরু করেছে। নদীপাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন আমাদের বসতভিটা ও ফসলি জমির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, পলি জমে তিস্তার বুক ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য পানি বাড়লেই তা উপচে পড়ে। এখনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। ভাঙন নিয়ে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, সেদিকে তারা নজর রাখছেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।”

ঢাকা/নিয়াজ/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন বন দ নদ

এছাড়াও পড়ুন:

‘এক কেজি চাল আনতে মই বেয়ে দেয়াল টপকাতে হয়’

দীর্ঘ নয় মাস ধরে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ রয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ শামসুন্নাহার ও তার ছেলে সাইফুল ইসলাম দিপু। বাড়ির চারপাশে বাঁশ ও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ায় মই বেয়ে দেয়াল টপকে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের। পরিবারটির অভিযোগ, বসতভিটা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করতে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী নূরুল হুদা।

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা শামসুন্নাহার স্বামী আমিরুল ইসলাম মারা গেছেন পাঁচ বছর আগে। তখন থেকেই ছেলে সাইফুল ইসলাম দিপুকে নিয়ে এই বাড়িতে বসবাস করছেন শামসুন্নাহার। 

আরো পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

ফরিদপুরে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ, ভোগান্তি চরমে

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুইজন বাসিন্দা জানান, শামসুন্নাহারের বাড়িটি চারপাশ থেকে উঁচু বেড়ায় ঘেরা। একফোঁটা জায়গা নেই যেখান দিয়ে স্বাভাবিকভাবে বাড়িটিতে প্রবেশ করা সম্ভব। মই দিয়ে বিপজ্জনকভাবে দেয়াল টপকে বাড়িতে যাতায়াত করতে হয় মা-ছেলেকে। প্রভাবশালী মহল বাড়িটি দখল করতে পরিবারটিকে অবরুদ্ধ করেছে।

শামসুন্নাহারের অভিযোগ, “৯ মাস হলো ঘরবন্দী জীবন কাটাচ্ছি। বাড়ির চারপাশে কাঠ-বাঁশ আর কাঁটাতারের বেড়া তুলে দিয়েছে নুরুল হুদা। এক কেজি চাল আনতে মই বেয়ে দেয়াল টপকাতে হয়। রাত হলে বুক ধড়ফড় করতে থাকে, যদি বুলডোজার আসে। তিনদিন হলো ঘরে এক মুঠো চাল নেই। প্রশাসনের কাছে গেছিলাম, এতোদিনেও বিচার পেলাম না।”

শামসুন্নাহারের বাড়ির সামনে দেওয়া বাঁশের বেড়া 

শামসুন্নাহারের ছেলে সাইফুল ইসলাম দিপু বলেন, “২০০৫ সালে বাবা কষ্টের টাকায় সাড়ে তিন শতাংশ জমি কিনেছিলেন। আজকের বাজারে ওই জমির মূল্য কোটি টাকা। এ কারণেই আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। প্রতিদিন মাকে হুমকি দেওয়া হয়—বসতভিটা না ছাড়লে বুলডোজার দিয়ে চিহ্ন মুছে ফেলা হবে। মা সারা রাত জেগে থাকেন, হাঁটাহাঁটি করেন। মাঝে মধ্যে চোখে পানি ছিটিয়ে ঘুম তাড়ান তিনি।”

অভিযুক্ত নূরুল হুদাকে প্রশ্ন করলে তিনি সংক্ষিপ্ত জবাবে বলেন, “আমি কার নির্দেশে কাজ করছি, সেটা তাদের কাছ থেকে জানুন। আমার ব্যাপারে সবকিছু তাদেরই জানা।”

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবরুদ্ধ পরিবারকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে।”

ঢাকা/রফিক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘এক কেজি চাল আনতে মই বেয়ে দেয়াল টপকাতে হয়’