ঝালকাঠির সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের গুয়াটন গ্রামে তালগাছ কেটে পাঁচ শতাধিক বাবুই পাখির ছানা ও ডিম ধ্বংসের স্থানে ও সড়কের পাশে অর্ধশত তাল গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।

শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে ঝালকাঠি জেলা যুবদলের উদ্যোগে গাছের চারা রোপণ করা হয়। এ সময় জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ব রবিউল হোসেন তুহিন, সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খানসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল হোসেন তুহিন বলেন, “গত ২৭ জুন গুয়াটন এলাকার একটি তালগাছ কেটে ফেলা হয়। ওই তাল গাছে প্রায় পাঁচশতাধিক বাবুই পাখির বাচ্চা ছিল। গাছ কাটার ফলে বাচ্চাগুলো মারা যায়। জেলা যুবদলের পক্ষ থেকে ওই স্থানে অর্ধশত তাল গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে, পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্থানে গাছ লাগানো হবে।”

স্থানীয়রা জানান, গত ২৭ জুন সকালে পূর্ব গুয়াটন এলাকায় একটি তালগাছ কেটে ফেলা হয়। গাছটির শাখায় ছিল অসংখ্য বাবুই পাখির বাসা। প্রত্যেক বাসায় ডিম ও ছানা ছিল। গাছটি কাটার ফলে বাসাগুলো নিচে পড়ে ও পানিতে ডুবে যায়। এতে অধিকাংশ ছানা মারা যায় এবং ডিমগুলো নষ্ট হয়। কিছু প্রাপ্তবয়স্ক পাখি উড়ে গেলেও অধিকাংশই মারা যায়। 

এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে শেখেরহাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো.

মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ রেকর্ডের মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে মোবারেক ফকিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য বদল র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্ট লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার সংসদ ভবন: নাহিদ ইসলাম 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সংসদ ভবন। ৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদের পতন, এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পুনর্গঠন। নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কারের সুরাহা হতে হবে, বিচারের সুরাহা হতে হবে। স্বৈরতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটাতে হবে এই বাংলাদেশ থেকে। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আমরা নতুন রাজনীতি ও নতুন বন্দোবস্ত গড়ে তুলব।’ 

আজ রোববার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী মহানগরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে এক পথসভায় নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। জুলাই পদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে রাজশাহী জেলা ও মহানগর এনসিপি এ পথসভার আয়োজন করে।

জুলাই সনদের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা বলে জুলাই কেবল আবেগের বিষয়, যারা বলে জুলাইকে কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়ার প্রয়োজন নেই, তাদেরকে দেখিয়ে দিতে হবে ৩ আগস্ট। বাংলাদেশের মানুষ মুজিববাদী সংবিধানের বিরুদ্ধে একত্র হবে। জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। যারা জুলাইকে সংবিধানে জায়গা দিতে চায় না, তারা মুজিববাদের ফেরার রাস্তা তৈরি করতে চান। তারা মুজিববাদের নতুন পাহারাদার হিসেবে নিজেদেরকে ঘোষণা করেছেন। মুজিববাদের পাহারাদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

মাওলানা ভাসানী ও লংমার্চ বিষয়ে নাহিদ বলেন, ‘মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী এই রাজশাহী থেকে ফারাক্কা লংমার্চ শুরু করেছিলেন। যদি আমাদের পানির হিস্যা আমাদের বুঝে নিতে হয়, আমাদের সীমান্তকে রক্ষা করতে হয়, তাহলে আমরা আবারও লংমার্চ শুরু করব এই রাজশাহী শহর থেকে।’ 

সংবিধান সংস্কার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে নানান শক্তির ষড়যন্ত্রে সংস্কারের পথ রুদ্ধ হয়েছে। এই প্রজন্ম বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান এই দেশের মানুষকে উপহার দেবে। এই সংবিধান বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবে। এই সংবিধান ইনসাফ নিশ্চিত করবে।’ 

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘জনগণের মধ্যে আবেগ সঞ্চার হয়েছিল বিধায় জনগণ ২৪-এর অভ্যুত্থানে বুকের তাজা রক্ত রাজপথে ঢেলে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি। ওরা বলে রাজনীতিতে নাকি আবেগের জায়গা নেই। আর আমরা বলি জনগণের ন্যায় সঙ্গত আবেগ বাস্তবে রূপান্তর করাই আমাদের রাজনীতি। জনগণের চাওয়াকে ছোট করে দেখবেন না। জনগণের চাওয়াকে বাস্তবায়নের রাজনীতি এই বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে, এটাই জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে নতুন করে গড়বার জন্য সংস্কারের আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যখন মৌলিক সংস্কারের দাবিতে এক হয়ে যায় তখন একটি দলের কারণে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা কমিশনে আটকে যায়। ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবনা আটকে দিতে পারবেন, জুলাই সনদ আটকে দিতে পারবেন কিন্তু জনগণের কাছে সংস্কারের কথা এলে, জনগণ সেই সংস্কার অবশ্যই বাস্তবায়ন করে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।’ 

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, রাজশাহী মহানগর এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলীসহ প্রমুখ। 

এর আগে সন্ধ্যা ছয়টায় দিকে শহরের রেলগেট এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। পথসভায় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হয়। গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের দেখতে সড়কের দুই পাশে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ