Prothomalo:
2025-07-06@13:27:45 GMT

আইনুন নিশাতের চোখে ৫ করণীয়

Published: 6th, July 2025 GMT

অধ্যাপক আইনুন নিশাত আমার শিক্ষক। তিনি এখনো আমার শিক্ষক এবং বলতে দ্বিধা নেই যে আমাদের শিক্ষক। ১৯৪৮ সালের ২৯ এপ্রিল জন্ম তাঁর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের পড়াতেন পানিসম্পদ কৌশল। তাঁর ক্লাসের কত লেকচার আজও আমার মনে আছে। ‘গল্পগুলো আইনুন নিশাত স্যারের কাছ থেকে শোনা’ নামে আমার একটা কলাম আছে। সেখান থেকে একটু আগে বলে নিই:

আমরা বুয়েটে ছিলাম ১৯৮৩-৮৪ ব্যাচ। ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হলো। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আইনুন নিশাত ছিলেন একজন বক্তা। স্যার একটা কৌতুক বলেছিলেন। ৪০ বছর আগে শোনা সেই কৌতুক আমার আজও মনে আছে।

প্রথম আলোর অনলাইনের জন্য সম্প্রতি স্যারের একটা বড় ভিডিও ইন্টারভিউ করেছি। ‘অভিজ্ঞতার আলো’ নামের একটা নতুন অনুষ্ঠান চালু হলো ৫ জুলাই ২০২৫ থেকে। প্রতি মাসের প্রথম আর তৃতীয় শনিবারে একজন প্রাজ্ঞ নাগরিক শোনাবেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। প্রথম সাক্ষাৎকারটা অধ্যাপক আইনুন নিশাতের।

প্রেক্ষাপট ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন বৈঠক। বাংলাদেশ দলে প্রকৌশলীর সংখ্যা বেশি। ভারতীয়রা চান রাজনীতিবিদ আর আমলাদের। স্যার তখন এই কৌতুকটা শুনিয়েছিলেন। একজন চিকিৎসক, একজন প্রকৌশলী আর একজন রাজনীতিবিদের মধ্যে বাহাস হচ্ছে। কার পেশা বেশি অভিজাত? চিকিৎসক বললেন, মানুষ যখন প্রথম পৃথিবীতে এল, তখন থেকেই তো ডাক্তারি পেশার শুরু। প্রকৌশলী বললেন, মহাজগৎ আগে ছিল বিশৃঙ্খল। স্রষ্টা সেই বিশৃঙ্খল অবস্থাকে সুবিন্যস্ত করলেন, সুশৃঙ্খল করলেন। তখন থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার শুরু। শুনে রাজনীতিবিদ মিটমিট করে হাসছেন। ‘আপনি হাসছেন কেন?’ রাজনীতিবিদ বললেন, ‘আপনারা বলছেন, বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে স্রষ্টা শৃঙ্খলা বিধান করলেন। তা এই বিশৃঙ্খলাটা সৃষ্টি করেছিল কে?’

স্যারের এই কৌতুক আজও প্রাসঙ্গিক। বাংলাদেশ-ভারত পানির হিস্যা সমস্যার সমাধান হতে হবে রাজনৈতিক, আইনুন নিশাত সে রকমটাই মনে করেন।

জলবায়ু, পানি, বন্যা, নদী বিষয়ে কোনো কিছু জানতে হলে আইনুন নিশাত স্যারকে ফোন করি। তিনি সব সময় ফোন ধরেন, প্রশ্নের উত্তর দেন। অনেক সময় বিদেশে থাকেন, হয়তো গভীর রাতে তাঁর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাই। তিনি বিরক্ত হন না।

প্রথম আলোর অনলাইনের জন্য সম্প্রতি স্যারের একটা বড় ভিডিও ইন্টারভিউ করেছি। ‘অভিজ্ঞতার আলো’ নামের একটা নতুন অনুষ্ঠান চালু হলো ৫ জুলাই ২০২৫ থেকে। প্রতি মাসের প্রথম আর তৃতীয় শনিবারে একজন প্রাজ্ঞ নাগরিক শোনাবেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। প্রথম সাক্ষাৎকারটা অধ্যাপক আইনুন নিশাতের। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমাদের রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের জন্য পাঁচটা করণীয় যদি বলতেন।

তিনি রসিকতা করে বলেন, একবার সুন্দরবন পরিদর্শনের জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ জিপগাড়ি কেনার পরামর্শ দিয়েছিল। তাকে বোঝানো যাচ্ছিল না সুন্দরবন পরিদর্শন করতে হলে বোট লাগবে, জিপ নয়। নদী বোঝার জন্য তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘আমাদের ছোট নদী’ আর ‘নদী’—এই কবিতা দুটো আগে পড়ে আসতে বলেন।

এক.

তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে অ্যাডাপটেশন, খাপ খাওয়ানো। তিনি প্রশ্ন করেছেন, আমাদের পাঁচ হাজার প্রকারের ধান ছিল, কোথায় গেল?

দুই. তিনি বলেছেন, আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার ওপরে জোর দিতে হবে।

তিন. আমাদের পানি ব্যবস্থাপনার ওপরে জোর দিতে হবে। আমরা ধানখেত পানিতে ডুবিয়ে রাখি। কোনো দরকার নেই।

চার. ভূমি ব্যবহারের নীতি করতে হবে আর তা মেনে চলতে হবে। ল্যান্ড ইউজ প্ল্যান দরকার।

পাঁচ. আমাদের শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে হবে। আমরা শুধু সংখ্যার দিকে নজর দিয়েছি। শিক্ষার মান নিয়ে একদমই ভাবিনি। এবার শিক্ষার মান বাড়াতে হবে।

এর বাইরে তিনি আরও একটা বিষয়ের ওপর নজর দিতে বলেছেন। দূষণ বন্ধ করা।

আইনুন নিশাত দেশের সমস্যা সমাধানে স্থানীয় জ্ঞান আর লোকশিক্ষার ওপরে গুরুত্ব দেন। তিনি রসিকতা করে বলেন, একবার সুন্দরবন পরিদর্শনের জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ জিপগাড়ি কেনার পরামর্শ দিয়েছিল। তাকে বোঝানো যাচ্ছিল না সুন্দরবন পরিদর্শন করতে হলে বোট লাগবে, জিপ নয়। নদী বোঝার জন্য তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘আমাদের ছোট নদী’ আর ‘নদী’—এই কবিতা দুটো আগে পড়ে আসতে বলেন।

স্যার এখনো তাঁর এবং তাঁর ভাইবোনের এই পর্যন্ত আসার পেছনে মায়ের অবদানের কথা গভীর আবেগের সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, মা আমাদের হাতে ধরে অঙ্ক করিয়েছেন, ইংরেজি শিখিয়েছেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনজন যে পিএইচডি, তা মায়ের কারণেই।

স্যার বুয়েট থেকে পাস করে বুয়েটের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী। তাঁর পিতা গাজী শামসুর রহমান ছিলেন পণ্ডিত, বাগ্মী এবং সাহিত্যিক। বিচারক পিতার কাছে পেয়েছেন আদর্শবোধ আর বাগ্মিতা। মা ছিলেন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের বিএসসির শিক্ষার্থী, ম্যাট্রিকে গণিত আর উচ্চতর গণিতে লেটার মার্কস পেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন রুপার মেডেল। সেটা নিশাত স্যারের কাছে আজও আছে।

স্যার এখনো তাঁর এবং তাঁর ভাইবোনের এই পর্যন্ত আসার পেছনে মায়ের অবদানের কথা গভীর আবেগের সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, মা আমাদের হাতে ধরে অঙ্ক করিয়েছেন, ইংরেজি শিখিয়েছেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনজন যে পিএইচডি, তা মায়ের কারণেই।

আনিসুল হক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক আইন ন ন শ ত র জন ত ব দ আম দ র প র জন য ন র জন র ওপর প রথম র একট

এছাড়াও পড়ুন:

অমিতাভ বচ্চনের শুভেচ্ছাবার্তার পর জয়া আহসানের প্রতিক্রিয়া

সফল অভিনয়জীবন। গল্প, চরিত্র নির্বাচন থেকে শুরু করে অনিন্দ্য অভিনয়ের জন্য বরাবরই সাধারণ দর্শক ও চলচ্চিত্রবোদ্ধার প্রশংসা কুড়িয়ে আসছেন জয়া আহসান। এবারের ঘটনাটি শুধু এই অভিনেত্রী নন, অনেকের জন্যই ছিল চমকে দেওয়ার মতো। বলিউড শাহেনশাহখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের কাছ থেকে এলো জয়ার সিনেমার জন্য শুভেচ্ছাবার্তা।

জয়া আহসানের পাশাপাশি ভারতের আনন্দবাজারসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আসছে ১৮ জুলাই মুক্তি পাচ্ছে অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী পরিচালিত সিনেমা ‘ডিয়ার মা’। দীর্ঘ ১০ বছর পর আবার বাংলা সিনেমা নির্মাণ করেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। যে কারণে এই সিনেমাটি ঘিরে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। জোরকদমে চলছে সিনেমার প্রচার। ‘ডিয়ার মা’র মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। তাঁর সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন চন্দন রায় স্যান্যাল, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। 

যে সব বাঙালি পরিচালক বাংলা সিনেমার পাশাপাশি হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সমানভাবে সফল, তাদের মধ্যে অনিরুদ্ধ অন্যতম; যার সুবাদে মুক্তির আগে এই নির্মাতার নতুন সিনেমা নিয়ে অমিতাভ বচ্চনের কাজ থেকে এলো শুভেচ্ছাবার্তা। 

সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, প্রকাশ করা হয়েছে ‘ডিয়ার মা’ সিনমার ট্রেলার। সিনেমার পোস্ট প্রোডাকশন নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ততা তুঙ্গে পুরো টিমের। এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের নজর কাড়ে একটি পোস্ট। বলিউড মহাতারকা অমিতাভ বচ্চন নিজেই শেয়ার করেছেন ‘ডিয়ার মা’-এর ট্রেলার। এক মুহূর্তের জন্য যেন সবকিছু থমকে গিয়েছিল পরিচালক ও অভিনেত্রীর। বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, সব ঠিক দেখছেন তো? 

সিনেমার ট্রেলার শেয়ার করে অমিতাভ বচ্চন লিখেছেন, ‘টনিদা, আমার অনেক শুভেচ্ছা রইল।’ সাতসকালে এমন শুভেচ্ছায় খানিক বাকরুদ্ধ পরিচালক। পুরো টিমের কাছেই এটি বড় প্রাপ্তি বলেও মনে করেন তিনি। 

অনিরুদ্ধর কথায়, ‘এটি শুভেচ্ছা নয়, আমাদের কাছে আশীর্বাদ। পুরো টিমের জন্য খুব বড় প্রাপ্তি। এমন একজন মানুষের আশীর্বাদ পেলাম, যা সত্যিই অনুপ্রেরণার। এই আনন্দ ভাগ করার কোনো ভাষা নেই আমার। ঠিক যেন কাঁধে হাত রেখে কেউ একজন বললেন এগিয়ে যেতে। মনটা ভরে গিয়েছে।’

একই সময়ে বিমানবন্দরে বসে তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর পর এক শুভেচ্ছাবার্তা পড়ে যাচ্ছিলেন অভিনেত্রী জয়া অহসান।

তিনি বলেন, ‘আমি ভাষাহীন। এমন একজন মানুষ আমাদের সিনেমার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন এবং নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেছেন, আমি তো বলব এটি পরম পাওয়া। পাশাপাশি বাংলা সিনেমার জন্যও খুব বড় প্রাপ্তি। অমিতাভ বচ্চনের সিনেমা দেখে কত মানুষ ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের বড় হয়ে ওঠা তাঁকে দেখে। তিনি তো মেগাস্টার। আজ সেই মানুষটা আমার কাজের জন্য আশীর্বাদ করছেন, এটি যে কত বড় আনন্দের বলে বোঝাতে পারব না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্ধু ভুলিনি তোমায়, ভুলতেও পারবো না: হানিফ সংকেত
  • মাতৃত্ব ও মানসিক সুস্থতার গল্প বললেন অ্যাড্রিয়েন বায়লন-হাউটন
  • পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আলাদা বাজেট জরুরি
  • ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় গুম-হত্যা ছিল স্বাভাবিক ঘটনা
  • জুলাই আন্দোলনকারীদের দেশ ছাড়তে বলা শিক্ষকদের পদোন্নতি, ক্ষুব্ধ শ
  • করোনায় একজনের মৃত্যু, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৯৪
  • করোনায় আরো এক মৃত্যু, শনাক্ত ৬
  • অমিতাভ বচ্চনের শুভেচ্ছাবার্তার পর জয়া আহসানের প্রতিক্রিয়া
  • অদৃশ্য গল্পের পথ ধরে অভিযাত্রা