Prothomalo:
2025-11-07@05:16:33 GMT

শক্ত আইনি ব্যবস্থা নিন

Published: 6th, August 2025 GMT

অল্প বয়সী শিক্ষার্থীদের গাইড বইয়ের প্রতি নির্ভরশীল করে তুলে দেশে এক রমরমা ব্যবসা গড়ে উঠেছে। দরিদ্র অভিভাবকদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এ ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে। ভোলার মতো একটি উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে, একজন মা তাঁর সন্তানের পড়াশোনার খরচ জোগাতে গিয়ে নিজের নাকফুল পর্যন্ত বিক্রি করতে বাধ্য হন, সেখানে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ কতটা নির্লজ্জভাবে সমাজকে গ্রাস করেছে, তা স্পষ্ট হয়।

ভোলায় গাইড বই কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা কেবল আর্থিক বোঝা তৈরি করছে না, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যকেও ব্যাহত করছে। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হজরত আলীর মা শাহিনুর বেগমকে তাঁর প্রয়াত স্বামীর স্মৃতি হিসেবে পাওয়া সামান্য সঞ্চয় থেকে ১ হাজার ৯৫০ টাকা খরচ করে গাইড বই কিনতে হয়েছে। অন্যদিকে হাসিনা বানুকে মেয়ের জন্য গাইড বই কিনতে গিয়ে বিয়ের স্মৃতিচিহ্ন নাকফুল বিক্রি করতে হয়েছে। এ ঘটনাগুলো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার নৈতিক অবক্ষয়ের করুণ প্রতিচ্ছবি।

শিক্ষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, পাঠ্যবই ও শ্রেণিকক্ষের শিক্ষাই যথেষ্ট। গাইড বইয়ের প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। কিছু শিক্ষকের ব্যক্তিগত স্বার্থ ও প্রকাশনা সংস্থাগুলোর যোগসাজশে গাইড বই কেনা শিক্ষার্থীদের জন্য এক অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, প্রকাশনা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে শিক্ষক সমিতি, প্রধান শিক্ষক ও কতিপয় শিক্ষক অভিভাবকদের ওপর গাইড বই কেনার জন্য চাপ দেন। এমনকি পরীক্ষার প্রশ্নও তৈরি হয় গাইড বই অনুসরণ করে। যেসব শিক্ষক এই অনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত নন, তাঁদের প্রশ্নপত্র বাতিল করে দেওয়া হয়। এই চিত্র একদিকে যেমন শিক্ষকদের সততা ও নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মেধার স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মতে, গাইড বই কেনা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তারপরও কেন এ আইন মানা হচ্ছে না? কেন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না? এই প্রশ্নগুলো সামনে চলে আসে। গাইড বইয়ের ব্যবসা বন্ধে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা একধরনের পরোক্ষ সমর্থনকেই ইঙ্গিত করে।

শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। এটি একটি মৌলিক অধিকার। দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য গাইড বইয়ের বাড়তি খরচ একপ্রকার শাস্তি। এই অনৈতিক চক্র ভাঙতে হলে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা। শিক্ষকদের লোভ ও প্রকাশনা সংস্থার আগ্রাসী বাণিজ্যিকীকরণের লাগাম টেনে ধরতেই হবে যেকোনো প্রকারে। স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা পাঠানো হোক। আইন অমান্যকারী ও যোগসাজশকারীদের কোনোভাবেই ছাড় নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

আজ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস

আজ ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তন হয়। পরে ওই বছরের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনার জেরে সেনাবাহিনীতে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান। খন্দকার মোশতাক সরকারকে উৎখাতে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে ৩ নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থান হয়। এরপর গৃহবন্দি করা হয় মুক্তিযুদ্ধের বীরউত্তম সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। দেশ সরকারহীন হয়ে পড়ে।

খন্দকার মোশতাকের কাছ থেকে পদোন্নতি আদায় করে নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন খালেদ মোশাররফ। এরই ধারাবাহিকতায় ৬ নভেম্বর রাতে জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে সৈনিকরা। জাসদ নেতা কর্নেল আবু তাহেরের অনুগত বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা এ সময় জেনারেল জিয়াকে সমর্থন জানিয়ে দলটির অনুসৃত বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করে। তবে জিয়াউর রহমান সে পথে না গিয়ে সরকার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। ৭ নভেম্বরের পর তিনি সামরিক শাসক থেকে রাজনীতিকে পরিণত হন।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে সিপাহী জনতা রাজপথে নেমে এসেছিলো জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।’’

জনগণের সমর্থনের কারণে জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বরের বিপ্লবে মহানায়কে পরিণত হন— বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি ওই বিবিৃতিতে আরও বলেন, ‘‘ সিপাহী-জনতার এই বিপ্লবের সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। ৭ নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্নৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছি।’’

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ