এইচএসসি পরীক্ষায় সমাজকর্ম প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পেতে হলে
Published: 6th, August 2025 GMT
প্রিয়, এইচএসসি পরীক্ষার্থী, সমাজকর্ম প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের এই দুই বিষয়েই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার আগে কদিন ভালো করে পড়ো।
বহুনির্বাচনী অংশে ভালো করতে হলে নির্ধারিত অধ্যায়গুলো মনোযোগ সহকারে রিভিশন দেবে। সমাজকর্ম প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পেতে হলে অবশ্যই তোমাকে বহুনির্বাচনী অংশে ভালো করতে হবে।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে উদ্দীপকটি অবশ্যই ভালোভাবে পড়তে হবে। বিশেষ করে প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতামূলক উত্তর লেখার আগে উদ্দীপকটি কয়েকবার পড়ে নিতে হবে।
উদ্দীপকটি সাধারণত মৌলিক, সম্পূর্ণ নতুন এবং বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে থাকে। তাই সুনির্দিষ্ট ধারণা খুঁজে বের করে পাঠ্যপুস্তকের আলোকে যুক্তি ও তথ্য–প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে সেই ধারণা ব্যাখ্যা করবে। সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতিতে চারটি অংশ (জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা) মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশ্ন।
জ্ঞানমূলক অংশজ্ঞানমূলক অংশের প্রশ্নের নম্বর ১। এ পর্যায়ে প্রশ্নের ধরন হলো কী, কখন, কোথায়, কাকে বলে, সংজ্ঞা দাও—এসব শব্দের মাধ্যমে উত্তর অতি সংক্ষেপে এক বা দুই বাক্যে দেবে। যেমন পেশা কাকে বলে? এর উত্তর: একটি নির্দিষ্ট শাখায় তাত্ত্বিক জ্ঞানার্জন ও ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করে, সে জ্ঞানকে জীবনধারণের উপায় হিসেবে বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করাকে পেশা বলা হয়।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডসহ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমানের, বাবা–মা’র তিন সূত্রেই বাজিমাত৪ ঘণ্টা আগেঅনুধাবনমূলক অংশঅনুধাবনমূলক প্রশ্নের নম্বর ২। এর মধ্যে ১ নম্বর জ্ঞানের জন্য আর ১ নম্বর অনুধাবনের জন্য। অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর দুই প্যারায় লেখার চেষ্টা করবে। প্রথম প্যারায় (জ্ঞানমূলক অংশ) যে বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে লিখবে। দ্বিতীয় প্যারায় অনুধাবনের দিকটি স্পষ্ট করবে।
প্রয়োগমূলক অংশপ্রয়োগমূলক প্রশ্নে মোট নম্বর থাকবে ৩। জ্ঞানে ১ নম্বর, অনুধাবনে ১ নম্বর ও প্রয়োগে ১ নম্বর। তাত্ত্বিক বিষয়টি জ্ঞানের দিক, প্রথম প্যারায় জ্ঞানের অংশের উত্তর লিখবে। প্রসঙ্গটি পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা করাই হলো অনুধাবন, দ্বিতীয় প্যারায় অনুধাবন অংশের উত্তর লিখবে। সব শেষে ওই দিকটি উদ্দীপকে কীভাবে ফুটে উঠেছে, তা বিশ্লেষণ করাই প্রয়োগ। প্রয়োগ অংশে প্রতীক, সারণি ও চিত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দিল সুখবর, অগ্রাধিকারে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া২ ঘণ্টা আগেউচ্চতর দক্ষতামূলক অংশউচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নের মোট নম্বর ৪। উচ্চতর দক্ষতা মানেই একটি সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে উদ্দীপকের আলোকে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তার সপক্ষে তথ্য, তত্ত্ব, যুক্তি ও রেফারেন্সের ভিত্তিতে বিষয়টি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে হবে। তুলনামূলক বিচার-বিবেচনার ভেতর দিয়ে শিক্ষার্থী তার নিজস্ব ও আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে পারছে কি না, তা-ই এই অংশের বিবেচ্য বিষয়।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫: প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ০৪ আগস্ট ২০২৫দরকারি তথ্য—বিভিন্ন আইনের পটভূমি, সমাজকমে৴র মূল্যবোধ, ওয়াক্ফ, সামাজিক নিরাপত্তা, বিধবা বিবাহ, নারীশিক্ষা থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। সমাজকর্ম দ্বিতীয় পত্রে চিকিৎসা সমাজকর্ম, সামাজিক সমস্যা, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে উত্তর দিতে পাঠ্যবইয়ের ওপর ভালো ধারণা থাকতে হবে। সে জন্য পাঠ্যবইটি বুঝে পড়বে। বহুনির্বাচনী অংশে প্রতিটি অধ্যায় থেকেই প্রশ্ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি অধ্যায়ে সমাজবিজ্ঞানীর নাম, সংজ্ঞা, সাল, বৈশিষ্ট্য, পটভূমি প্রভৃতি খুব ভালো করে পড়তে হবে।
* লেখক: মাহমুদ বিন আমিন, প্রভাষক, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ঢাকা
আরও পড়ুনপ্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডসহ ১৪০০০ শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা০৪ আগস্ট ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থীর তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ
সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থী সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল—এই তিন বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তাঁদের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা আবারও নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গত ২৬ জুন শুরু হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ১৮৭ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষার আয়োজনে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা গত সপ্তাহে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
আদেশের পর আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৮৭ শিক্ষার্থী কলেজটির ভুলের কারণে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষা দিতে পারছিলেন না। কলেজটির এই বিষয়গুলোর অনুমতি ছিল না। যে কারণে নিজে আবেদনকারী হয়ে জনস্বার্থে রিটটি করেন। এই ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর ওই তিন বিষয়ের পরীক্ষা নিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এখন ১৮৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষাগুলো দিতে পারবেন।
সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। গত ১৪ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানায়, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যক্রমে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পাঠদানের কোনো অনুমোদন না থাকায় পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ ১৮৬ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন এবং ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে কলেজের অনুমোদনপ্রাপ্ত ভিন্ন তিনটি বিষয়ে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র পেয়েছে এবং তাতে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পরীক্ষাদানের সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও বোর্ডের সঙ্গে তারা কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।
আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৮৭ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের গত ১৪ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবশ্যিক পাঁচটি পত্রের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে কলেজ কর্তৃপক্ষ (আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়) বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৮৬ জন পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করে। ইতিমধ্যে পূর্বনির্ধারিতসংখ্যক প্রশ্নপত্র সব কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়ায় বোর্ডের পক্ষে কিছু করার ছিল না। আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন আরও ৬টি কলেজে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে তাঁদের সংখ্যা মাত্র ২২। অন্যদিকে আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৮৬ জন। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ শতভাগ দায়ী।