ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে জেলেনস্কি বললেন, তাঁরা কিছুই অর্জন করতে পারবেন না
Published: 9th, August 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি বৈঠকে বসবেন। ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলাপ করবেন শীর্ষ এই নেতারা। গতকাল শুক্রবার বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা। তবে গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পরই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপর হন ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুব কাছাকাছি রয়েছে মস্কো ও কিয়েভ।
পরে শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের জানান ট্রাম্প। তিনি এ-ও বলেন, ‘দুই পক্ষের ভালোর জন্য কিছু অঞ্চল হাতবদল করা হতে পারে।’ বর্তমানে ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের বড় অংশ রুশ বাহিনীর দখলে রয়েছে। পুতিন বরাবরই বলে আসছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য এই অঞ্চলগুলোর দাবি ছাড়তে হবে ইউক্রেনের।
একটি বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিনও। বিবৃতিতে রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেছেন, ইউক্রেন সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য বিকল্প বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনার ওপর জোর দেবেন পুতিন ও ট্রাম্প। এটি অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া। তবে এই আলোচনায় দুই পক্ষ সক্রিয়ভাবে এবং আগ্রহের সঙ্গে আলোচনা করবে।
এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনেও ইউক্রেনের নিজেদের ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার শর্তের কথা এসেছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুদ্ধ থামানোর জন্য এমন শর্ত ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। তখন বিষয়টি ‘জল্পনা’ বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা। প্রতিবেদনটি নিয়ে রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেনি ক্রেমলিন।
প্রবল আপত্তি জেলেনস্কির‘কিছু অঞ্চল হাতবদলের’ যে কথা ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, তার কড়া সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আজ শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া নিয়মিত ভিডিও ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, নিজেদের ভূখণ্ড-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে কোনো পদক্ষেপ নেবে না ইউক্রেন। ‘দখলদারদের’ নিজেদের ভূখণ্ড ‘উপহার’ হিসেবে দেবেন না ইউক্রেনীয়রা।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার শুরু থেকেই রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলোর দাবি ছাড়ার বিষয়টি নাকচ করে এসেছেন জেলেনস্কি। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে গতকাল তিনি বলেন, ‘তাঁরা এ থেকে কিছুই অর্জন করবেন না। এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার পরপরই অকার্যকর হয়ে পড়ার মতো। এগুলো কোনো কাজে আসবে না। আমাদের সবার প্রয়োজন সত্যিকার বাস্তবসম্মত শান্তি।’
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে, যদিও এর আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল কিয়েভ। তবে সত্যিই যদি চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার দখল করা চার অঞ্চল এবং ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া ছাড় দিতে হয়, তা হবে জেলেনস্কি ও তাঁর সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই অঞ্চলগুলো ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ২০ শতাংশ।
নিজেদের ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার বিষয়টি ইউক্রেনীয়রা প্রত্যাখ্যান করবেন বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক টাইসন বার্কার। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ইউক্রেনীয়রা যা করতে পারে তা হলো, ভূখণ্ড ছাড়ের বিষয়ে নিজেদের আপত্তি নিয়ে কঠোর অবস্থানে থাকা। একই সঙ্গে সব পক্ষের অংশগ্রহণে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানের পথ নিয়ে নিজেদের শর্তের বিষয়ে অটল থাকা। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য তাদের দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুনট্রাম্প-পুতিন বৈঠক আলাস্কায় কেন, জেলেনস্কি কি থাকছেন৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউক র ন র র ব ষয়ট র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে জেলেনস্কি বললেন, তাঁরা কিছুই অর্জন করতে পারবেন না
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি বৈঠকে বসবেন। ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলাপ করবেন শীর্ষ এই নেতারা। গতকাল শুক্রবার বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা। তবে গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পরই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপর হন ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুব কাছাকাছি রয়েছে মস্কো ও কিয়েভ।
পরে শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের জানান ট্রাম্প। তিনি এ-ও বলেন, ‘দুই পক্ষের ভালোর জন্য কিছু অঞ্চল হাতবদল করা হতে পারে।’ বর্তমানে ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের বড় অংশ রুশ বাহিনীর দখলে রয়েছে। পুতিন বরাবরই বলে আসছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য এই অঞ্চলগুলোর দাবি ছাড়তে হবে ইউক্রেনের।
একটি বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিনও। বিবৃতিতে রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেছেন, ইউক্রেন সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য বিকল্প বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনার ওপর জোর দেবেন পুতিন ও ট্রাম্প। এটি অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া। তবে এই আলোচনায় দুই পক্ষ সক্রিয়ভাবে এবং আগ্রহের সঙ্গে আলোচনা করবে।
এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনেও ইউক্রেনের নিজেদের ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার শর্তের কথা এসেছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুদ্ধ থামানোর জন্য এমন শর্ত ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। তখন বিষয়টি ‘জল্পনা’ বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা। প্রতিবেদনটি নিয়ে রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেনি ক্রেমলিন।
প্রবল আপত্তি জেলেনস্কির‘কিছু অঞ্চল হাতবদলের’ যে কথা ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, তার কড়া সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আজ শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া নিয়মিত ভিডিও ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, নিজেদের ভূখণ্ড-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে কোনো পদক্ষেপ নেবে না ইউক্রেন। ‘দখলদারদের’ নিজেদের ভূখণ্ড ‘উপহার’ হিসেবে দেবেন না ইউক্রেনীয়রা।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার শুরু থেকেই রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলোর দাবি ছাড়ার বিষয়টি নাকচ করে এসেছেন জেলেনস্কি। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে গতকাল তিনি বলেন, ‘তাঁরা এ থেকে কিছুই অর্জন করবেন না। এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার পরপরই অকার্যকর হয়ে পড়ার মতো। এগুলো কোনো কাজে আসবে না। আমাদের সবার প্রয়োজন সত্যিকার বাস্তবসম্মত শান্তি।’
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে, যদিও এর আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল কিয়েভ। তবে সত্যিই যদি চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার দখল করা চার অঞ্চল এবং ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া ছাড় দিতে হয়, তা হবে জেলেনস্কি ও তাঁর সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই অঞ্চলগুলো ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ২০ শতাংশ।
নিজেদের ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার বিষয়টি ইউক্রেনীয়রা প্রত্যাখ্যান করবেন বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক টাইসন বার্কার। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ইউক্রেনীয়রা যা করতে পারে তা হলো, ভূখণ্ড ছাড়ের বিষয়ে নিজেদের আপত্তি নিয়ে কঠোর অবস্থানে থাকা। একই সঙ্গে সব পক্ষের অংশগ্রহণে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানের পথ নিয়ে নিজেদের শর্তের বিষয়ে অটল থাকা। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য তাদের দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুনট্রাম্প-পুতিন বৈঠক আলাস্কায় কেন, জেলেনস্কি কি থাকছেন৭ ঘণ্টা আগে