গাজা উপত্যকায় উড়োজাহাজ থেকে ফেলা ত্রাণবোঝাই বাক্সের নিচে চাপা পড়ে ১৫ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার গাজার নেতজারিম করিডরের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ওই কিশোরের নাম মুহান্নাদ জাকারিয়া ঈদ।

গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় শহর দখল করতে ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা চলার মধ্যে এ ঘটনা ঘটল।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় বলেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় উড়োজাহাজ থেকে ফেলা ত্রাণের বাক্সের আঘাতে কমপক্ষে ২৩ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন এবং ১২৪ জন আহত হয়েছেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, গতকাল গাজার নেতজারিম করিডরের কাছে কিশোর ঈদের চারপাশে কয়েকজন মানুষ জড়ো হয়ে আছেন। কেউ কেউ ছেলেটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন। তার মুখ রক্তাক্ত ছিল। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে আল–জাজিরা।

অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওই কিশোরের ভাই তাকে ঘটনাস্থল থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তার বাবা নুসাইরাতের আল-আওদা হাসপাতালে তার মৃতদেহ আঁকড়ে ধরে আছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ঈদের ভাই বলেন, তাঁর ভাই ত্রাণ নিতে গিয়েছিল। উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণ ফেলা হচ্ছিল। ওই সময় একটি বাক্স সরাসরি তাঁর ভাইয়ের ওপর পড়লে তার মৃত্যু হয়।

ঈদের ভাই আরও বলেন, ‘তারা (যে দেশগুলো সাহায্য পাঠাচ্ছে) সীমান্ত দিয়ে সরাসরি সাহায্য দিতে পারছে না। তারা ওপর থেকে ত্রাণের বোঝা ফেলছে। এতে আমাদের শিশুরা মারা যাচ্ছে।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজায় ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ১১ জন ফিলিস্তিনি অনাহারের কারণে মারা গেছেন। এ নিয়ে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অপুষ্টির কারণে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা ২১২–তে দাঁড়িয়েছে।

জাতিসংঘ বারবার বলেছে, উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণ ফেলাটা বিপজ্জনক। এগুলো কার্যকরও নয় এবং এতে খরচও বেশি। গাজায় স্থলসীমান্ত দিয়ে নিয়মিত মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে দেওয়ার জন্য বারবার ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘ।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় বলেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় উড়োজাহাজ থেকে ফেলা ত্রাণের বাক্সের আঘাতে কমপক্ষে ২৩ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন এবং ১২৪ জন আহত হয়েছেন।

গাজার হাসপাতাল সূত্রগুলো বলেছে, গতকাল গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজায় ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ১১ জন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন। এ নিয়ে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অপুষ্টির কারণে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা ২১২–তে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৯৮টিই শিশু।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন ফ ল স ত ন ইসর য় ল র কমপক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লার সেই বিএনপিকর্মী ইব্রাহিম মারা গেছেন

ফতুল্লার বিএনপি কর্মী ইব্রাহিম (৫২) মারা গেছেন। সে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় মারা যান।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে হাজিগঞ্জ জামে মসজিদে নিহতের নামাজের জানাজা শেষে পাঠানটুলি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত ইব্রাহিম ফতুল্লা থানার ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড হাজীগঞ্জের আব্দুল জলিলের পুত্র। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।

জানা যায়,২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে বিএনপির ডাকা মহা সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের ব্যানারে সে অংশগ্রহণ করে।

সমাবেশের শেষের দিকে মুল মঞ্চের পেছনের দিকে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা,কর্মীও সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ বিএনপি নেতা- কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের কে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

ইব্রাহিম পুলিশের হামলায় মারাত্নক আহত হয়ে রাস্তায় পরে থাকে। সে সময় সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। ঘটনার চারদিন পর তার সহোযোগিরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে খুঁজে পায়। দীর্ঘদিন সহোযোগিরা নিজেদের অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর আল বারাকা নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়। 

পরবর্তীতে ইব্রাহিমকে নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন হলে বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ  বাবুল তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই রোববার রাতে তিনি মারা যান।

ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ পারভেজ মিয়া জানান,নিহত ইব্রাহিম ২০২৩ সালে ২৮ অক্টোবর  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ঘোষিত পল্টন পার্টি অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি ও  ইউনিয়ন যুবদলের সাথে ঢাকায় গিয়েছিলেন । 

সমাবেশ চলাকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন টিপু  ও নিহত ইব্রাহিম এবং তিনি সহ আরো নেতা-কর্মীরা পল্টন পার্টি অফিস সংলগ্ন  চায়না টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।  হঠাৎ পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে করে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে  পরে।

অতর্কিত হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার  পর  প্রায় চার দিন পর  পত্রিকার নিউজে দেখতে পায় ইব্রাহিম নামে একজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সেই সংবাদের পর  তার পরিবারের লোকজন  এবং ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আলী ঢাকা মেডিকেলে খোঁজ নেওয়ার পরে তারা নিশ্চিত হন যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে থাকা চিকিৎসারতি হচ্ছে তাদের নিখোঁজ  ইব্রাহিম।

ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা শেষ করে তাকে বাসায় আনা হয়। বাসায় আনার পরে উনি আবার অসুস্থ হয়ে পরে। ফলে ৮ নং ওয়ার্ডের সকল নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় পুনরায় তাকে মদনপুর আল বারাকা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা  শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পরেন। 

এমতাবস্থায় নাসিক ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক রিপন তাকে দেখতে আসলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ পায়। প্রকাশিত সংবাদের পর বিএনপি নেতা শিল্পপতি  প্রাইম বাবুল ভাই তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নেন। 

বাবুল ভাই নিজে এসে তার দাত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমান ১১ টা ৪০ মিনিটের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেসরকারি সংস্থায় নিয়োগ, বেতন ২,৫০,০০০ টাকা
  • বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি
  • আড়াইহাজারে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান, ৩ ফার্মেসিকে অর্থদন্ড
  • চুয়েটে নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আছে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ
  • পরমাণু শক্তি কমিশনে ৪১ জনের চাকরির সুযোগ, করুন আবেদন
  • ফতুল্লার সেই বিএনপিকর্মী ইব্রাহিম মারা গেছেন
  • অবসর ভেঙে ওয়ানডেতে ফিরলেন ডি কক, তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক দক্ষিণ আফ্রিকার