রাজশাহীতে কয়েলের আগুনে পুড়েছে কৃষকের বাড়ি ও গরু, দেখে প্রতিবেশী নারীর মৃত্যু
Published: 22nd, September 2025 GMT
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় কয়েলের আগুনে দুটি গরুসহ কৃষকের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। গতকাল রোববার রাতে বাগমারার নরদাশ ইউনিয়নের পানিয়া গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের নাম মজিবুর রহমান (৫৭)।
এদিকে পোড়া ঘর ও গরু দেখে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে প্রতিবেশী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ওই নারীর নাম জুলেখা বেগম (৪৮)। তাঁর স্বামী বকুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পোড়া বাড়ি ও গরু দেখে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়িতে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়।
আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মজিবুর রহমানের আধা পাকা বাড়ি ও গোয়াল পুড়ে গেছে। ঘরে থাকা মালপত্র ছাই হয়েছে। গোয়ালে মরে পড়ে আছে দুটি গরু। আরেকটি গরু পোড়া অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। গরুর পাশে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী শাহিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘গরু মরে গেছে, ঘরোত থাকা ধান, কাপড়চোপড় পুড়ে গেছে। বাড়ির বেবাকে এক কাপড়ে আছি।’
মজিবুর রহমান বলেন, তিনি দিনমজুরি ও অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালান; পাশাপাশি গরু পালন করতেন। মশার উপদ্রব থেকে বাঁচাতে প্রতি রাতে গোয়ালে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতেন। গতকাল রাতেও তা–ই করেছিলেন। গভীর রাতে আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মজিবুর রহমান বলেন, ‘এখন আমার কিচু থাকলো না। রাতে বউ–ছাওয়াল লিইয়্যা কোনটে থাকবো?’ তাঁর দাবি, এ ঘটনায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবুর গরিব কৃষক। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে কোনো রকম জীবন যাপন করেন; পাশাপাশি গরু পালন করেন। আগুনে গরু ও বাড়িঘর পুড়ে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এখন খোলা জায়গায় থাকতে হবে।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে। খোঁজখবর নিয়ে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাহানারা ইমামের বই বিক্রি: বাংলা একাডেমির বক্তব্য এবং প্রতিবেদকের ব্যাখ্যা
সংগ্রহশালায় দেওয়া শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই বিক্রি করা নিয়ে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে একটি বক্তব্য দিয়েছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
তাতে দাবি করা হয়েছে, প্রতিবেদনে কিছু ‘আংশিক সত্য’ উপস্থাপন করা হয়েছে; কিছু অংশ এমনভাবে হাইলাইট করা হয়েছে, যাতে পাঠক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়বেন।
৮ নভেম্বর প্রকাশিত ‘জাহানারা ইমামের দেওয়া বই বিক্রি করেছে বাংলা একাডেমি, এখন দাম হাঁকা হচ্ছে লাখ টাকা’ শিরোনামের প্রতিবেদন নিয়ে ৯ নভেম্বর একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম ‘বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগারের জাহানারা ইমাম সংগ্রহের বই–সম্পর্কিত বিতর্ক বিষয়ে বাংলা একাডেমির বক্তব্য’ পাঠান।
‘অনলাইনে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম এবং হাইলাইটস ব্যাপকভাবে টেমপ্লেট আকারে প্রচারিত হয়েছে’ জানিয়ে লিখিত এই বক্তব্যে বলা হয়, এটি বহুজনের মনোযোগের বিষয় হয়ে ওঠার কারণে বাংলা একাডেমি শুধু সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রে বক্তব্য না পাঠিয়ে সাধারণ বিবৃতি আকারে দিয়েছে।
বই বিক্রির ব্যাখ্যায় বাংলা একাডেমির বক্তব্যে বলা হয়েছে, পরিত্যক্ত হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মজুত থাকা কয়েক হাজার বই ও অন্য কাগজপত্র গত ২৫ জুন থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিধি অনুযায়ী নিলামে বিক্রি করা হয়। কারণ, মজুত রাখার ঘরটি সম্পূর্ণ ভর্তি হয়ে গিয়েছিল।
কয়েক বছর আগে থেকে জাহানারা ইমামসহ অন্যদের দেওয়া বইগুলো যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবেই আছে জানিয়ে বাংলা একাডেমি বলেছে, এ বিষয়ে কোনো নতুন কমিটি গঠিত হয়নি বা সংগ্রহশালা পুনর্মূল্যায়নের কোনো ঘটনাও ঘটেনি। অন্তত এক দশক ধরে জমা হওয়া পরিত্যক্ত বইগুলোই কেবল বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে গত এক বছরে নতুন যুক্ত হয়েছে কেবল গত বছরের বইমেলায় প্রাপ্ত মানহীন ও পরিত্যক্ত ঘোষিত বইগুলো।
জাহানারা ইমামকে নিজের সংশপ্তক বইটি উপহার দিয়েছিলেন শহীদুল্লা কায়সার, তা এখন ফেসবুক পেজে বিক্রির তালিকায় উঠেছে