আবারও রেকর্ড দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা
Published: 22nd, September 2025 GMT
বৈশ্বিক বাজারে সোনার দামে অস্থিরতা চলছে। তার প্রভাবে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার সোনার দাম বেড়েছিল। এরপর এক দিন না যেতেই নতুন করে আরেক দফা সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৮৮৯ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে সোনার দামের নতুন রেকর্ড।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) আজ সোমবার রাতে সোনার দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে দর সমন্বয় করা হয়েছে। সোনার নতুন দাম আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে সর্বশেষ গতকাল রোববার থেকে সোনার দাম বেড়ে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৭ টাকায় ওঠে। আর আগামীকাল থেকে নতুন রেকর্ড দামে বিক্রি হবে সোনা।
জুয়েলার্স সমিতির তথ্যানুযায়ী, দেশের বাজারে আগামীকাল থেকে ভালো মানের এক ভরি, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের হলমার্ক করা সোনা কিনতে খরচ করতে হবে ১ লাখ ৯১ লাখ ১৯৬ টাকা। প্রতি ভরি ২১ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২৬ এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৯৭ টাকায় বিক্রি হবে।
এদিকে আজ সোমবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৭ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৮৮৯ টাকা, ২১ ক্যারেটে ১ হাজার ৭৯৬ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটে ১ হাজার ৫৪০ টাকা বাড়ছে। আর সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৩১৮ টাকা বাড়বে।
বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির সঙ্গে সোনার দামের সম্পর্ক রয়েছে। অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সোনার বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। কারণ, অস্থির সময়ে বিভিন্ন দেশ সোনায় বিনিয়োগ করে। ঐতিহাসিকভাবেও দেখা গেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সোনার দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়, অর্থাৎ ২০২০ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১.
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত এপ্রিলের শুরুতে বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সোনার দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। তখন দর ওঠে আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৪০০ ডলার।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২২ ক য র ট আগ ম ক ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান ৫১ নাগরিকের
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জুলাই অভ্যুত্থানের সফলতায় বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস উল্লেখ করে এ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন ৫১ জন নাগরিক।
সোমবার তাঁদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগীতবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে একটি পক্ষের লাগাতার বক্তব্য, বিবৃতি, কর্মসূচি গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। আমরা মনে করি, সংগীতের শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে তাদের বিরোধিতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিপরীত।’
জুলাই আন্দোলনে সব শ্রেণি–পেশা এবং ধর্ম ও মতের মানুষ অংশ নিয়েছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তবে সফল অভ্যুত্থানের পরপরই নানা ধরনের বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস চলছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক বাতিলের দাবি এ বিভাজনকে আরও জটিল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।’
বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, শিশুর নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি মেধা ও মননের বিকাশে সংগীত ও নৃত্যকলার প্রয়োজনও রয়েছে। সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে শিশুরা আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যকে নিজের ভেতরে ধারণ করতে সক্ষম হবে। বিশ্ব সংস্কৃতির পরিসরে বাংলাদেশের হয়ে তারা অংশ নিতে পারবে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গেছে, ইসলামি সভ্যতায় গানের চর্চা ও সাধনার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। গান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলাম তার সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটিয়েছে, যা মানুষকে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করেছে।’
বাংলাদেশ গান, নাচ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখানকার শিশুদের অধিকার রয়েছে তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার পরিণতি সুখকর হবে না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষকের যে দাবি উঠেছে, তা মেনে নিয়েও সংগীত শিক্ষক বহাল রাখা ন্যায়সংগত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে স্থাপন শিশুর বিকাশের পরিবেশ সংকীর্ণ করবে।’
বিবৃতি দেওয়া ৫১ নাগরিকের মধ্যে আছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান রাইন, মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, কথাসাহিত্যিক জিয়া হাশান, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, গাজী তানজিয়া, এহসান মাহমুদ প্রমুখ।