ঢাকার দোহার উপজেলায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে তিনটি ড্রেজার ধ্বংস ও পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলার নারিশা ও মুকসুদপুর ইউনিয়নে এ অভিযান চালানো হয়।

অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসফিক সিবগাত উল্লাহ। অভিযানে সেনাবাহিনীর দোহার ক্যাম্প কমান্ডার মেজর এ কে ওয়াফিজ উদ্দিন আহমেদ ও দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আলী উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, নারিশা ও মুকসুদপুরের ডাকবাংলো এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে তিনটি ড্রেজার জব্দ করা হয়। পাশাপাশি বালু সরবরাহের অসংখ্য পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে জব্দ ড্রেজার তিনটিতে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছেন। এতে পদ্মা রক্ষা বাঁধ ও আশপাশের জমি ধসে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। উপজেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা দিলেও রাতে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নদী থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখে। মাহমুদপুরের মৈনটঘাট থেকে বিলাশপুর পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত স্থানে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এ ছাড়া নারিশা, নয়াবাড়ী ও মুকসুদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায়ও একইভাবে ব্যবসা চলছে। গতকাল সন্ধ্যায় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানের খবর পেয়ে বালু ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যান।

অভিযান শেষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসফিক সিবগাত উল্লাহ বলেন, অনুমতি ছাড়া কৃষিজমি বা নদী-জলাশয় থেকে বালু-মাটি তোলা অবৈধ। জনস্বার্থ ও পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

এদিকে সম্প্রতি অবৈধ বালু ব্যবসায় বাধা দেওয়ার কারণে দোহার উপজেলার নয়াবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ মাস্টারকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লাখ আনসার-ভিডিপি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৯ দিন সারাদেশের ৩১,৫৭৬ পূজামণ্ডপে মোতায়েন থাকবেন দুই লাখ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্য।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আনসার সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এই বিশাল নিরাপত্তা কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য এবং আনসার-ভিডিপি সদস্যদের যথাযথ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ সতর্কতা, আন্তরিকতা এবং জনগণবান্ধব মনোভাবের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

আরো পড়ুন:

ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে সেনা মেতায়েন চায় সনাতনী জোট

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে পাঠানো হলো ৫০০ কেজি চিনিগুঁড়া চাল

বাহিনীর চলমান সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় প্রায় দুই লাখ তরুণকে ইতোমধ্যে গণপ্রতিরক্ষার নতুন ধারায় প্রশিক্ষণ দিয়ে বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নব সংযোজিত ‘এভিএমআইএস’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব সদস্যের রেজিস্ট্রেশন ও হালনাগাদ তথ্য যাচাই করে পূজার নিরাপত্তা দায়িত্ব নির্ধারণ করা হচ্ছে। উৎসবকালীন দায়িত্ব পালনে যথাযথতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বাহিনীতে ‘এসটিডিএম’ সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। এছাড়া, পূজা উৎসবে কুচক্রী মহলের গুজব প্রতিরোধ এবং যেকোনো অশুভ শক্তি মোকাবেলায় ডিউটিরত সদস্যদের জন্য ‘ইনসিডেন্ট রিপোর্ট’ কার্যক্রম চালু হওয়ায় নিরাপত্তা পরিধি আরো শক্তিশালী হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষ ও যোগ্য সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বাহিনী সর্বস্তরে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও দায়বদ্ধতাকে যেকোনো প্রভাবমুক্ত রাখার ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আনসার সদর দপ্তর থেকে আরো জানানো হয়, আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে পূজামণ্ডপগুলোকে নিরাপত্তা ঝুঁকির ভিত্তিতে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আটজন, গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে ছয়জন এবং সাধারণ পূজামণ্ডপে ছয়জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। একইসঙ্গে দেশের ৬৪ জেলায় ৯২টি ব্যাটালিয়ন আনসার স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি টিমে ছয়জন করে সদস্য থাকবেন, যারা নিয়মিত টহলের পাশাপাশি যেকোনো আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবেন।

এবারের নিরাপত্তা কার্যক্রমকে আরো কার্যকর ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে মোতায়েনকৃত সদস্যরা তাদের নির্ধারিত দায়িত্বের পাশাপাশি ‘শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপ’ ব্যবহার করে দুর্ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করবেন। এসব তথ্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঢাকা/এমআর/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ