গকসু নির্বাচনের ইশতেহারে অধিকার আদায়ের প্রতিশ্রুতি
Published: 23rd, September 2025 GMT
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। দীর্ঘ ৭ বছর পর আয়োজিত এই নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। নির্বাচনে মোট ভোটার ৪ হাজার ৭৬১ জন এবং প্রার্থী হয়েছেন ৫৭ জন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণ ভরে উঠেছে লিফলেট আর প্রচারে। প্রার্থীদের ইশতেহারে উঠে আসছে ক্যান্টিনে ভর্তুকি, খাবারের মানোন্নয়ন, ক্লাসরুম ও ল্যাব সংকট নিরসন, আধুনিক মেডিকেল সেন্টার, পরিবহন বৃদ্ধি, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, গবেষণা ও বৃত্তি, ওয়াই-ফাই ও লাইব্রেরি উন্নয়নসহ শিক্ষার্থীবান্ধব নানা প্রতিশ্রুতি।
আরো পড়ুন:
রাত আড়াইটায় হাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
রাকসু নির্বাচন পেছানোর প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ
সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী মো.
রাজিব হোসেন নারী ক্ষমতায়ন ও নিরাপত্তার ভিত্তিতে একটি ছাত্রী হল নির্মাণ, স্বতন্ত্র লিফট, আধুনিক মেডিকেল সেন্টার, বাজেট স্বচ্ছতা, অন্যায্য জরিমানা বাতিল ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ ক্যাম্পাসের অঙ্গীকার করে নাসিম খান নিয়মিত গকসু নির্বাচন, গবেষণা ফান্ড বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক চুক্তি, আধুনিক ক্যান্টিন, টিএসসি, টিচার গ্রেডিং সিস্টেম, অনলাইন প্রশাসনিক সেবা, স্বাস্থ্যবিমা, চাকরি মেলা ও যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রিফাত হোসেন সীমানা প্রাচীর, মাতৃকালীন বিশেষ সুযোগ, শহীদ মিনার নির্মাণ, রিডিং রুম, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ক্লাসরুম-ল্যাব উন্নয়ন ও পরিবহন নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইয়াসিন আল মৃদুল দেওয়ান নিরাপত্তা নিশ্চিতে সীমানা প্রাচীর, মেডিকেল সেন্টার ও মেডিসিন কর্নার, নারী ও আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সুযোগ, ক্রীড়া-সাংস্কৃতিক অঙ্গন শক্তিশালীকরণ এবং গবেষণার মানোন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের ‘দ্বিতীয় ঘর’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন, আধুনিক গবেষণাগার, ডিজিটাল লাইব্রেরি, নিরাপদ আবাসন, আধুনিক ক্যান্টিন, ওয়াই-ফাই ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেন।
আবু সুফিয়ান মুসা দলীয় রাজনীতি ও দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস, র্যাগিং-মুক্ত পরিবেশ, বিদেশে ইন্টার্নশিপ, ক্যান্টিন হাইজিন মনিটরিং, স্বাস্থ্য কার্ড, স্টার্টআপ ফান্ড, সাংস্কৃতিক-স্পোর্টস-টেক ফেস্ট আন্তর্জাতিক মানে আয়োজন ও প্লাস্টিকমুক্ত সবুজ ক্যাম্পাসের ঘোষণা দেন।
শেখ খোদারনূর ইসলাম রনি অভিযোগ বক্স, ক্রীড়া-সংস্কৃতিতে বাজেট, গবেষণা ও উদ্যোক্তা ক্লাব, মেডিকেল সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক, বৃত্তি, অ্যালামনাই রিইউনিয়ন, চাকরিমুখী কোর্স, বিদেশে উচ্চশিক্ষা সহায়তা সেল এবং নারী শিক্ষার্থীদের মাতৃত্বকালীন ভাতা-ছুটির প্রতিশ্রুতি দেন।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী রায়হান মেয়েদের জন্য মাতৃকালীন ছুটি, ছেলে-মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য দ্রুত হল নির্মাণ, মেডিকেল সেন্টার সংস্কার, মহিলা ডাক্তার নিয়োগ ও জব ফেয়ার চালুর অঙ্গীকার করেন।
অন্য সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী আফসানা মিমি নিরাপদ ও আধুনিক ক্যাম্পাস, লাইব্রেরি-ল্যাব উন্নয়ন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, নারী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসুবিধা, হালাল-স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা সেলের প্রতিশ্রুতি দেন।
আরেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী অন্তু দেওয়ান নারী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা, আধুনিক ক্যান্টিন, ক্লাসরুম-ল্যাব উন্নয়ন, সার্বক্ষণিক লাইব্রেরি, গবেষণা-সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের সহায়তা ও শিক্ষাজীবনের সঙ্গে কর্মজীবনের প্রস্তুতির প্রতিশ্রুতি দেন।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী রেদোয়ানুল ইসলাম মানিক বলেন, “গদবাঁধা ইশতেহার নয়, সময় ও প্রয়োজনের তাগিদে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য কাজ করাই হবে আমার কার্যক্রম।”
ভোটাররা বলছেন, নির্বাচনী ইশতেহার যেন শুধু কথায় না থাকে, বরং বাস্তবায়ন যোগ্য হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিজিয়া কেয়া বলেন, “গকসু নির্বাচন আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার প্রতিফলন। আমরা এমন নেতৃত্ব চাই, যারা শুধু নির্বাচনের সময় নয়, বরং সারা বছর শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার ও ওয়ার্কশপের মানোন্নয়নেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা চাই এমন নেতা, যিনি ভেতরের পাশাপাশি বাইরের নানা সমস্যা নিয়েও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবেন এবং আমাদের কণ্ঠস্বর হবেন।”
ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী সৌরভ দাশ গুপ্ত বলেন, “ক্লাসরুমের ঘাটতি, পর্যাপ্ত সিটের অভাব, ক্যান্টিনে খাবারের মান ও দামের অনিয়ম এবং প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে ঘাটতি আমাদের বড় সমস্যা। আমরা চাই নির্দিষ্ট ক্লাসরুম, স্বাস্থ্যসম্মত ও সুলভ মূল্যের খাবার, পর্যাপ্ত ল্যাব সরঞ্জাম ও নিয়মিত প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস।”
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গকস ম ন ন নয়ন ইশত হ র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে আখতার-তাসনিমের ওপর হামলার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিন্দা
যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারার ওপর হামলা এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি আমন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফরে অংশ নেওয়া এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারার ওপর পতিত ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী ও কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও তারা হেনস্তা করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের বিমানবন্দরের ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে মির্জা ফখরুলের প্রতিক্রিয়া৪১ মিনিট আগেবিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেড় দশক ধরে বিরোধী মত দমন, গুম-খুন ও জুলুম-নির্যাতনের ভয়াবহ আওয়ামী দুঃশাসন দেশের ছাত্র-জনতা প্রত্যক্ষ করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগেও অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বিদেশে একাধিকবার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছেন; যা তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেরই ধারাবাহিকতা।
জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতারা বারবার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। অভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারাসহ বিভিন্ন ঘটনায় এই সরকার ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে; যা অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
আরও পড়ুনএটি ব্যক্তি আখতার হোসেনের ওপর আক্রমণ নয়: তাসনিম জারা৪৮ মিনিট আগেঅভ্যুত্থানের যোদ্ধা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পাশাপাশি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ারও আহ্বান জানায়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন সেখানে পৌঁছান। বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয় সময় ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আখতার হোসেনের সঙ্গে হাঁটছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে আসা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা এ সময় তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন। তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন।