উপাচার্যের মেয়ের পোষ্য কোটায় ভর্তি নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা
Published: 23rd, September 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে পোষ্য কোটার মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলমের মেয়েও রয়েছেন। এ খবর জানাজানি হওয়ার পর ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, গত বছর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি তোলা হয়েছিল। তবে তা মেনে নেওয়া হয়নি। এ বছর উপাচার্যের মেয়েকে পোষ্য কোটায় ভর্তি করানোয় নতুন করে বিতর্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কোটায় সব মিলিয়ে ২১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছেন তিনজন। উপাচার্যের মেয়ের পাশাপাশি অন্য দুজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা ও একজন ইলেকট্রিশিয়ানের সন্তান।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গেছে, গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্যের মেয়ে মেধাক্রমে ৩২ হাজারতম অবস্থানে ছিলেন। তিনি ৪০ নম্বর পান। এরপর পোষ্য কোটায় তিনি প্রথমে বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীতে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে জীববিজ্ঞান অনুষদে স্থানান্তরিত হন। চলতি বছর ওই অনুষদে সর্বোচ্চ ৫০৩৫তম মেধাক্রম পর্যন্ত ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল।
আরও পড়ুনঅনশনরত শিক্ষার্থীদের পাশে মশারি টানিয়ে ছিলেন উপাচার্য, তিন দফা দাবিতে কর্মসূচি অব্যাহত০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ বিষয়ে ভর্তি টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সহযোগী অধ্যাপক রাহাত হোসাইন বলেন, ‘নিয়ম মেনেই এই ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো শিক্ষার্থী (পোষ্য) ৩০ নম্বর পাস মার্ক অতিক্রম করলেই নির্ধারিত কোটায় ভর্তি হতে পারেন। উপাচার্যের মেয়ে এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি সুবিধা পাননি।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে মোহাম্মদ তৌফিক আলম বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক। পরবর্তী সময়ে ১০ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁকে চার বছরের জন্য পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে উপাচার্য মোহাম্মদ তৌফিক আলম মঙ্গলবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিয়মের কোনো ব্যত্যয় করিনি। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। ভর্তিসংক্রান্ত সব তথ্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েসাইটে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।’ তাহলে এ নিয়ে বিতর্ক উঠল কেন—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটা আপনারা অনুসন্ধান করে দেখুন, কেন এটা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুনশিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অব্যাহতি১৩ মে ২০২৫বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষার্থীরা সব ধরনের বৈষম্য বিলোপের জন্য আন্দোলন করেছেন। জীবন উৎসর্গ করেছেন আমাদের অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানেরা নানা সুবিধা পায়, অথচ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সন্তানদের সেই সুযোগ থাকে না। এটা স্পষ্টত একটি গুরুতর বৈষম্য। এটা ন্যায়সংগত হতে পারে না। তাঁরা চান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যত দ্রুত সম্ভব এই পোষ্য কোটা বাতিল করা হোক।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী কোটায় ৬ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫ জন, হরিজন ও দলিত কোটায় ৩ জন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটায় ৩ জন, পোষ্য কোটায় ৩ জন এবং বিকেএসপি কোটায় ১ জন ভর্তি হয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য র ম য় ক ট য় ভর ত
এছাড়াও পড়ুন:
রাতের পর সকালেও একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে পাঁচ
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলা সীমান্তের চরপাড়া এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের গুদামে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত শ্রমিকের নাম মোহাম্মদ হারুন ওরফে হারেজ (২৯)। তিনি চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের ছৈয়দাবাদ পর্দার ডেবা এলাকার নুরুল ইসলাম ছেলে। এর আগে গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেকজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে দুর্ঘটনাটিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত বুধবার ভোরে গ্যাস সিলিন্ডারের গুদামটিতে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ সময় আগুনে পুরো গুদাম পুড়ে যায়। দগ্ধ হন ১০ জন। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ওই দিনই অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় চারজনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরে বাকি ছয়জনকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।
মোহাম্মদ হারুনের মৃত্যুর বিষয়টি চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সোলাইমান ফারুকী নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনাটির পর প্রথমে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া চারজনেরই মৃত্যু হয়েছে। পরে নিয়ে যাওয়া ছয়জনের মধ্যে একজন আজ মারা গেছেন। বাকি পাঁচজন সেখানে চিকিৎসাধীন, তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।