ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) এবারের নির্বাচন এতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও উত্তেজনাপূর্ণ হবে, তা ছিল অভাবনীয়। মূলত চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানই সেটি সম্ভব করেছে।

একইভাবে নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের যে ভূমিধস বিজয়, সেটিও ছিল অভাবনীয়, অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিতও। নির্বাচনের দিন ও আগের দিন রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে এবং ফলাফল ঘোষণার পর অনেকের প্রতিক্রিয়া দেখে, তেমনটিই মনে হলো।

ডাকসু নির্বাচনে এবার রেকর্ডসংখ্যক ভোট গ্রহণও ছিল অভাবনীয়। শিবির–সমর্থিত প্যানেলের বিপক্ষে ছাত্রদল, বামপন্থী ও এনসিপি–সমর্থিত সংগঠনের প্যানেলের প্রার্থীদের প্রচারণায় একটি বিষয় লক্ষণীয় ছিল, বেশিসংখ্যক ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উদ্বুদ্ধ করা। তাঁদের ধারণা ছিল, শিবির–সমর্থিত প্যানেলের ভোট ‘ফিক্সড’, মানে তাদের ভোটব্যাংক নির্দিষ্ট। সেটাকে ছাপিয়ে যেতে পারে বেশিসংখ্যক ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়েই।

অবাক করা বিষয় হচ্ছে, শিবিরই বরং এটির সবচেয়ে বেশি সুফলভোগী হয়েছে। প্রাপ্ত ভোটে কয়েকটি পদে তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ব্যবধানকে ‘নিকটতম’ বলা যায় না, দূরবর্তীই বলতে হবে। এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ছাড়া বিভিন্ন দল–সমর্থিত প্রার্থীদের ভোটের যোগফল থেকেও কয়েকটি পদে শিবিরের প্রার্থীরা বেশি ভোট পেয়েছেন। ফলে বিভিন্ন দল–সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় শিবির–সমর্থিত প্রার্থীরা জিতে এসেছেন, সেই যুক্তিও আসলে সব ক্ষেত্রে টেকে না।

যেসব প্রশ্ন সামনে এসেছে

সর্বত্র এখন একটাই আলোচনা, শিবিরের এই অভাবনীয় বিজয়ের কারণ কী? এখানে যেমন শিবিরের পরিকল্পিত সাংগঠনিক প্রস্তুতির বিষয়টি সামনে এসেছে, আবার রেকর্ডসংখ্যক ভোট পড়া নিয়ে কোনো সূক্ষ্ম কারচুপি বা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং হয়েছে কি না, সেই সন্দেহেরও প্রকাশ ঘটেছে। যদিও নির্বাচনের দিন দৃশ্যমান কিছু অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে, যাকে মোটাদাগে কারচুপি বলাটা সংগত হবে না। যদিও ইতোমধ্যে ডাকসুতে শিবিরের প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল ও প্রার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন।

শিবির অপেক্ষাকৃত ভালো করতে যাচ্ছে, বিশেষ করে প্রধান তিন পদের একটিসহ আরও কিছু পদে জিততে যাচ্ছে, সেটি প্রচারণার শুরু থেকে ধারণা করা যাচ্ছিল। কিন্তু প্রধান তিনটি পদই তারা পেতে যাচ্ছে, এটি যখন নির্বাচনের দিন সন্ধ্যার কিছু সময় পর থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে চাউর হতে থাকল, তা অনেকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। সে সময় শিবিরের বিপক্ষে তো অবশ্যই, পক্ষে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে মনে হলো, তাঁদের কাছেও বিষয়টি অবিশ্বাস্য ঠেকছে।

ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী বাছাই বেশ আলোচিত ছিল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ব র সমর থ ত প

এছাড়াও পড়ুন:

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল

দীর্ঘ ৯ বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি পদে মো. শরীফুল আলম এবং মাজহারুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত দুজনই আগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। পরে গণনা শেষে গভীর রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।

ফলাফলে, সভাপতি পদে মো. শরীফুল আলম ১৫২২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রুহুল হোসাইন পেয়েছেন ১৯৭ ভোট। এ পদে বাতিল হয় ১২০ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে মাজহারুল ইসলাম ১১৫৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল পেয়েছেন ৬১১ ভোট। অপর দুই প্রার্থী সাজ্জাদুল হক ভোট পেয়েছেন ৭টি এবং শফিকুল আলম রাজন ৩০ ভোট পেয়েছেন। এ পদে বাতিল হয় ৩৩টি ভোট।

দুই জন সভাপতি পদপ্রার্থী ও চার জন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। জেলার ১৩টি উপজেলার ১৩টি ও ৮টি পৌরসভার ৮টি মিলিয়ে মোট ২১টি ইউনিট কমিটির ২ হাজার ৯০ জন কাউন্সিলর এ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে এ ত্রি-বার্ষীক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন (ভার্চুয়ালি) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে মো. শরীফুল আলমকে সভাপতি ও মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। ওই সময় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত থাকলেও বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়ে যায় সম্মেলন। তিন সপ্তাহ পর কেন্দ্র থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা/রুমন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল