ভারতের রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার থেকে নামার ভিডিওকে সায়মা ওয়াজেদের বলে প্রচার
Published: 22nd, October 2025 GMT
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়—একটি হেলিকপ্টার অবতরণের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এক নারী দ্রুত একটি গাড়িতে উঠছেন।
ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে—‘কলকাতায় আওয়ামী লীগের উচ্চপদস্থ নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে বিশেষ হেলিকপ্টারে কলকাতায় আসছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত থাকবেন শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়। আজ রাত ১০টায় বিস্তারিত জানা যাবে।’
লিংক: এখানে, এখানে এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
এই দাবির সূত্র ধরে ভিডিওটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ভিডিওটি যাচাই করে দেখা গেছে—এটি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কেরালা সফরের ভিডিও, এর প্রেক্ষাপট পুরোপুরি ভিন্ন।
ভিডিওটি InVID টুলে বিশ্লেষণ করে ফ্রেমভিত্তিক ছবি আলাদা করে প্রতিটি কি-ফ্রেম গুগল লেন্স-এ সার্চ করলে দেখা যায়, ‘দুর্ঘটনার কবলে রাষ্ট্রপতি মুর্মুর হেলিকপ্টার! অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন রাষ্ট্রপতি’ শিরোনামে Haldia Live নামে ইউটিউব চ্যানেলে ৩ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের নামার দৃশ্য দাবি করা ৯ সেকেন্ডের দৃশ্যটির হুবহু মিল রয়েছে।
লিংক: এখানে
এ ছাড়া কি–ওয়ার্ড সার্চে দেখা যায়, আলোচিত এ ঘটনার খবর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে উল্লেখ আছে, এটি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হেলিকপ্টার অবতরণের সময় ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার মুহূর্ত।
ভারতীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আজ কেরালা রাজ্যের পাথানামথিট্টা জেলার প্রামাদম স্টেডিয়ামে সরকারি সফরে গিয়েছিলেন।
হেলিকপ্টার অবতরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই হেলিপ্যাডের একটি অংশ দেবে যায়। এতে হেলিকপ্টার সামান্য হেলে পড়ে এবং নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সেটিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন।
লিংক: এখানে, এখানে, এখানে
সংবাদমাধ্যম পিটিআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, হেলিকপ্টারটি অবতরণের কয়েক মুহূর্ত পরই হেলিপ্যাডের মাটি দেবে যায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দৌড়ে গিয়ে হেলিকপ্টারটিকে ঠেলে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নিরাপদে গাড়িতে ওঠেন।
এই ঘটনার খবর বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও এসেছে।
লিংক: এখানে, এখানে, এখানে
অর্থাৎ ভিডিওটিতে যে নারীকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে গাড়িতে উঠতে দেখা যাচ্ছে, তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবতরণ র দ র পদ ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্ঘটনার কবলে ভারতের প্রেসিডেন্ট মুর্মুর হেলিকপ্টার
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে; তবে রাষ্ট্রপতি মুর্মু অক্ষত আছেন। আজ বুধবার দেশটির সর্বদক্ষিণের রাজ্য কেরালার থিরুভানান্থাপুরম জেলায় থিরুভানান্থাপুরম জেলায় ঘটেছে এ ঘটনা।
স্থানীয় সময় সাড়ে ১১টার দিকে কেরালার থিরুভানান্থাপুরম জেলার প্রমোদোম স্টেডিয়ামের নতুন তৈরি হেলিপ্যাডে অবতরণ করে দ্রৌপদী মুর্মুকে বহনকারী ভারতীয় বিমানবাহিনীর এমআই ১৭ চপার হেলিকপ্টারটি।
আরো পড়ুন:
ভূতের রাজ্যে রাশমিকা: বক্স অফিসে শুরুটা কেমন হলো?
খাবার জোগাতেও আমার পরিবারকে লড়াই করতে হয়েছে: সামান্থা
কিন্তু হেলিকপ্টারটি অবতরণ করা মাত্র হেলিপ্যাডের একাংশের কংক্রিট ভেঙে যায়। ফলে চাকা বসে যাওয়ায় খানিক্ষণের জন্য বেসামাল হয়ে যায় হেলিকপ্টারটি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎক্ষণাৎ কাজে নামে পুলিশ ও দমকল। দীর্ঘ চেষ্টায় হাত দিয়ে ঠেলে কপ্টারটি ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার জেরে সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেলিকপ্টারটি।
দ্রৌপদী মুর্মুর অবশ্য কোনো ক্ষতি হয়নি। তিনি নিরাপদেই হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ করেছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টারটির পম্বা জেলার নিলাক্কালে অবতরণ করার কথা ছিল । কিন্তু সেখানে আবহাওয়া খারাপ থাকায়, শেষ মুহূর্তে তা বদলে প্রমাদমের রাজীব গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়া হয় বিকল্প হিসেবে। ফলে, মঙ্গলবার গভীর রাতেই তড়িঘড়ি করে হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়।
জেলার এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কংক্রিটটি পুরোপুরি জমে ওঠেনি। ফলে চাকার নিচে মাটি বসে গিয়ে ছোট গর্ত তৈরি হয়।
স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সম্প্রচারে দেখা যায়, হেলিকপ্টার অবতরণের পর তার চাকা আংশিকভাবে কংক্রিটে বসে গেছে এবং একাধিক পুলিশ, দমকল ও নিরাপত্তাকর্মীরা ঠেলে সেই চাকা গর্ত থেকে বের করে আনছেন।
এই দৃশ্য দেখে বিস্মিত অনেকেই। প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্রপতির মতো উচ্চ নিরাপত্তার ব্যক্তির সফরে এতটা ত্রুটি কীভাবে হল?
সৌভাগ্যবশত, এই ঘটনায় কোনো ব্যক্তি আহত হননি এবং রাষ্ট্রপতির সফরসূচিতেও কোনো বড় প্রভাব পড়েনি। হেলিকপ্টার নামার পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সড়কপথে পাম্বার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাষ্ট্রপতি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেরলে এসে পৌঁছান। আজ সকালে তিনি পৌঁছান পাথানামথিট্টা জেলায়, যেখান থেকে তিনি যাবেন শবরিমালা মন্দির দর্শনে।
যদিও আবহাওয়ার কারণেই এই হেলিপ্যাডে অবতরণ বলে দাবি করেছে প্রশাসন, তবে নিরাপত্তা ও প্রস্তুতির প্রশ্নে গাফিলতি ছিল কিনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে রাতারাতি তৈরি করা একটি কংক্রিট হেলিপ্যাড রাষ্ট্রপতির মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের হেলিকপ্টার কি অবতরণের জন্য আদৌ উপযুক্ত ছিল? এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা ও রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে রিপোর্ট চাওয়া হতে পারে বলেও সূত্রের খবর।
রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা টেলিফোনে যোগাযোগ করেন এবং খোঁজখবর নেন।
ঢাকা/ফিরোজ