হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের বিলাসবহুল বলরুম তৈরিতে অর্থ ঢালছেন কারা
Published: 22nd, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ২৫০ মিলিয়ন (২৫ কোটি) ডলারের হোয়াইট হাউস বলরুমের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তবে এ প্রকল্পের জন্য কোন কোন ধনাঢ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অনুদান বা অর্থ দিচ্ছে, তা নিয়ে রহস্য চলছেই।
গত সোমবার ৯০ হাজার বর্গফুটের (৮,৩৬০ বর্গমিটার) এ বিলাসবহুল বলরুমের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের শুরুতে খননকারী ও নির্মাণকর্মীরা হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের কিছু অংশ ভেঙে দিচ্ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি নিজেই প্রকল্পের বড় অংশের জন্য অর্থ দেবেন। তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন, কিছু অজ্ঞাতদাতা ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) ডলারের বেশি খরচ করতে রাজি হতে পারেন।
এ অর্থায়নপদ্ধতি নিয়ে কিছু আইন বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, এ ধরনের দান সরাসরি রাষ্ট্রীয় কাজ বা প্রশাসনের সুবিধা নেওয়ার বিনিময়ে হতে পারে।
‘আমি এ বিশাল বলরুমকে নৈতিকভাবে এক দুঃস্বপ্ন বলে মনে করি’, বলেন রিচার্ড পেইন্টার। তিনি ২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের চিফ এথিকস লইয়ার ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘এটি হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগকে ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহের একটি উপায়। আমি এটি পছন্দ করি না। এসব করপোরেশন সরকার থেকে কিছু না কিছু পেতে চায়।’
গত ১৫ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে সম্ভাব্য দাতাদের জন্য আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি প্রধান কোম্পানির জ্যেষ্ঠ নির্বাহীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ব্ল্যাকস্টোন, ওপেনএআই, মাইক্রোসফট, কয়েনবেস, প্যালান্টির, লকহিড মার্টিন, অ্যামাজন ও গুগলের কর্মকর্তারা।১৫ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে সম্ভাব্য দাতাদের জন্য আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি প্রধান কোম্পানির জ্যেষ্ঠ নির্বাহীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ব্ল্যাকস্টোন, ওপেনএআই, মাইক্রোসফট, কয়েনবেস, প্যালান্টির, লকহিড মার্টিন, অ্যামাজন ও গুগলের কর্মকর্তারা।
নৈশভোজে আরও উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক জেটস এনএফএল টিমের মালিক উডি জনসন এবং শেরি ও এডওয়ার্ড গ্লেজার। শেরি ও এডওয়ার্ড গ্লেজার এবং তাঁদের ভাইবোনেরা টাম্পা বে বকানিয়ার্স ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিক।
যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির অংশীদার সিবিএস নিউজ দাতাদের একটি প্রতিশ্রুতি ফরম দেখেছে। তাতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, যাঁরা দান করবেন, তাঁরা ‘স্বীকৃতি’ পেতে পারেন। যদিও পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে এ স্বীকৃতি হতে পারে তাঁদের নাম স্থাপত্যের মধ্যে খোদাই করে দেওয়া।
আমি এ বিশাল বলরুমকে নৈতিকভাবে এক দুঃস্বপ্ন বলে মনে করি। এটি হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগকে ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহের একটি উপায়। আমি এটি পছন্দ করি না। এসব করপোরেশন (বলরুম নির্মাণে অর্থদাতা) সরকার থেকে কিছু না কিছু পেতে চায়।রিচার্ড পেইন্টার, ২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের চিফ এথিকস লইয়ারহোয়াইট হাউস আগে জানিয়েছিল যে এই বিশাল বলরুমে ৬৫০ জনের বসার ক্ষমতা থাকবে। তবে এ সপ্তাহে ট্রাম্প বলেছেন, এটি ৯৯৯ জনের জন্য যথেষ্ট হবে।
এখন পর্যন্ত মাত্র একজন দাতার নাম প্রকাশিত হয়েছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ইউটিউব এ প্রকল্পের জন্য ২২ মিলিয়ন (২ কোটি ২০ লাখ) ডলার দেবে। এটি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি মামলার সমাধানের অংশ হিসেবে। মামলাটি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে সহিংসতার ঘটনায় ট্রাম্পের ইউটিউব অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা সংশ্লিষ্ট।
কিন্তু নৈশভোজে উপস্থিত অন্যদের মধ্যে কতজন দান করতে রাজি হয়েছেন বা কত অর্থ দান করেছেন, তা স্পষ্ট নয়। একটি আনুষ্ঠানিক তালিকা এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁরা এক দাতার নাম প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।
হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলেছে, অনুদান আহ্বানে কোনো অসংগতি ছিল না। বলরুমটি ভবিষ্যৎ প্রশাসনও ব্যবহার করবে। তারা বলেছে, সংস্কারকাজের জন্য সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের কোনো অর্থ খরচ হবে না।সিবিএসের সংগৃহীত নথিতে দেখা যায়, দানগুলো ‘ট্রাস্ট ফর দ্য ন্যাশনাল মলের’ মাধ্যমে পরিচালিত হবে। অলাভজনক সংস্থাটি ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করে এবং মল ও হোয়াইট হাউসের প্রকল্পগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করে।
সম্ভাব্য দাতাদের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছেন, অনেকে ‘সত্যিই খুব উদার’ ছিলেন। কিছু দাতা ২৫ মিলিয়ন (২ কোটি ৫০ লাখ) ডলার উপযুক্ত দান কি না, জিজ্ঞেস করেছিলেন। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি বললাম, আমি নেব।’
হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলেছে, অনুদান আহ্বানে কোনো অসংসতি ছিল না। বলরুমটি ভবিষ্যৎ প্রশাসনও ব্যবহার করবে। তারা বলেছে, সংস্কারকাজের জন্য সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের কোনো অর্থ খরচ হবে না।
হোয়াইট হাউসের সাবেক নির্বাহী শেফ ও ক্যাম্প ডেভিডের জেনারেল ম্যানেজার মার্টিন মঙ্গিয়েলো বিবিসিকে বলেছেন, বলরুমের জন্য দেওয়া অর্থ ‘শেষ পর্যন্ত নিজের খরচ মেটাবে ও খরচ বাঁচাবে।’ অর্থাৎ, নতুন বলরুম থাকলে ভবিষ্যতে বড় অনুষ্ঠান বা টেন্ট ভাড়া দেওয়ার খরচ বাঁচবে। মঙ্গিয়েলো সাতটি প্রশাসনের অধীন কাজ করেছেন।
মঙ্গিয়েলো আরও বলেন, অনুষ্ঠানের জন্য মাঝেমধ্যে হোয়াইট হাউসের বাইরে টেন্ট বসানো হয়। তিনি এটিকে ‘বিব্রতকর’ হিসেবে বর্ণনা করেন। এ ধরনের টেন্টের খরচ প্রায় ১ মিলিয়ন (১০ লাখ) ডলার বা এর বেশি হয় এবং বড় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে অন্য অতিরিক্ত খরচ যুক্ত হয়।
ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ভাঙা হচ্ছে হোয়াইট হাউস কমপ্লেক্সের ভবনের সামনের অংশ। এখানেই ফার্স্ট লেডির কার্যালয়, একটি থিয়েটার ও বিদেশি অতিথিদের স্বাগত জানানোর জন্য ভিজিটর এন্ট্রান্স ছিল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ব যবহ র কর প রকল প র অন ষ ঠ ন ল বলর ম র জন য বল ছ ন প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে ইলিশ কেনাবেচার অপরাধে ১২ জনের কারাদণ্ড
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলায় মেঘনা নদীতে যৌথ অভিযানে ইলিশ মাছ কেনাবেচার সময় গ্রেপ্তার ১২ জনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ৩০০ কেজি ইলিশ ও ১০ লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়।
বুধবার (২২ অক্টোবর) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসন, মৎস্য অফিস, সেনাবাহিনীর সদর আর্মি ক্যাম্প, সদর থানা পুলিশ ও নৌপুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান চালায়।
আরো পড়ুন:
মেঘনায় গ্রেপ্তার ২৮ জেলেকে জেল-জরিমানা
টাঙ্গাইলে ২ ব্যবসায়ীকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা
ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধি ও মা ইলিশ শিকার বন্ধে গত ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন দেশের নদী-সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এ সময় ইলিশ ধরা, পরিবহন, বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।
জেলা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল হাশেম জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণে এ দিন ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের চর বেহেরপাড়া থেকে ইস্মানিরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ইলিশ কেনাবেচা করায় ১২ ক্রেতা ও বিক্রেতাকে আটক, ইলিশ ও জাল জব্দ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক তাদের ৭ দিন করে কারাদণ্ড দেন।
তিনি আরো জানান, জব্দকৃত ইলিশ স্থানীয় কয়েকটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। জব্দ করা জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে।
অভিযানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন তানজিমুল হাসান, সদরের চরআব্দুল্লাহ নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাবুব আলম প্রমুখ।
ঢাকা/রতন/বকুল