দুর্ঘটনার কবলে ভারতের প্রেসিডেন্ট মুর্মুর হেলিকপ্টার
Published: 22nd, October 2025 GMT
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে; তবে রাষ্ট্রপতি মুর্মু অক্ষত আছেন। আজ বুধবার দেশটির সর্বদক্ষিণের রাজ্য কেরালার থিরুভানান্থাপুরম জেলায় থিরুভানান্থাপুরম জেলায় ঘটেছে এ ঘটনা।
স্থানীয় সময় সাড়ে ১১টার দিকে কেরালার থিরুভানান্থাপুরম জেলার প্রমোদোম স্টেডিয়ামের নতুন তৈরি হেলিপ্যাডে অবতরণ করে দ্রৌপদী মুর্মুকে বহনকারী ভারতীয় বিমানবাহিনীর এমআই ১৭ চপার হেলিকপ্টারটি।
আরো পড়ুন:
ভূতের রাজ্যে রাশমিকা: বক্স অফিসে শুরুটা কেমন হলো?
খাবার জোগাতেও আমার পরিবারকে লড়াই করতে হয়েছে: সামান্থা
কিন্তু হেলিকপ্টারটি অবতরণ করা মাত্র হেলিপ্যাডের একাংশের কংক্রিট ভেঙে যায়। ফলে চাকা বসে যাওয়ায় খানিক্ষণের জন্য বেসামাল হয়ে যায় হেলিকপ্টারটি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎক্ষণাৎ কাজে নামে পুলিশ ও দমকল। দীর্ঘ চেষ্টায় হাত দিয়ে ঠেলে কপ্টারটি ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার জেরে সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেলিকপ্টারটি।
দ্রৌপদী মুর্মুর অবশ্য কোনো ক্ষতি হয়নি। তিনি নিরাপদেই হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ করেছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টারটির পম্বা জেলার নিলাক্কালে অবতরণ করার কথা ছিল । কিন্তু সেখানে আবহাওয়া খারাপ থাকায়, শেষ মুহূর্তে তা বদলে প্রমাদমের রাজীব গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়া হয় বিকল্প হিসেবে। ফলে, মঙ্গলবার গভীর রাতেই তড়িঘড়ি করে হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়।
জেলার এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কংক্রিটটি পুরোপুরি জমে ওঠেনি। ফলে চাকার নিচে মাটি বসে গিয়ে ছোট গর্ত তৈরি হয়।
স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সম্প্রচারে দেখা যায়, হেলিকপ্টার অবতরণের পর তার চাকা আংশিকভাবে কংক্রিটে বসে গেছে এবং একাধিক পুলিশ, দমকল ও নিরাপত্তাকর্মীরা ঠেলে সেই চাকা গর্ত থেকে বের করে আনছেন।
এই দৃশ্য দেখে বিস্মিত অনেকেই। প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্রপতির মতো উচ্চ নিরাপত্তার ব্যক্তির সফরে এতটা ত্রুটি কীভাবে হল?
সৌভাগ্যবশত, এই ঘটনায় কোনো ব্যক্তি আহত হননি এবং রাষ্ট্রপতির সফরসূচিতেও কোনো বড় প্রভাব পড়েনি। হেলিকপ্টার নামার পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সড়কপথে পাম্বার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাষ্ট্রপতি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেরলে এসে পৌঁছান। আজ সকালে তিনি পৌঁছান পাথানামথিট্টা জেলায়, যেখান থেকে তিনি যাবেন শবরিমালা মন্দির দর্শনে।
যদিও আবহাওয়ার কারণেই এই হেলিপ্যাডে অবতরণ বলে দাবি করেছে প্রশাসন, তবে নিরাপত্তা ও প্রস্তুতির প্রশ্নে গাফিলতি ছিল কিনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে রাতারাতি তৈরি করা একটি কংক্রিট হেলিপ্যাড রাষ্ট্রপতির মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের হেলিকপ্টার কি অবতরণের জন্য আদৌ উপযুক্ত ছিল? এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা ও রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে রিপোর্ট চাওয়া হতে পারে বলেও সূত্রের খবর।
রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা টেলিফোনে যোগাযোগ করেন এবং খোঁজখবর নেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ষ ট রপত র দ র ঘটন র দ র পদ
এছাড়াও পড়ুন:
নাসার চন্দ্রযান তৈরিতে মাস্কের প্রতিষ্ঠানের দেরি, অন্য প্রতিষ্ঠানের উন্মুক্ত হচ্ছে চুক্তি
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আগামী চন্দ্রাভিযানের জন্য চন্দ্রযান তৈরির কথা ছিল ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বিলম্বের কারণে নাসা এ– সংক্রান্ত চুক্তিটি নতুন দরদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে। গতকাল সোমবার সংস্থাটি এ ঘোষণা দিয়েছে।
নাসার এই সিদ্ধান্তের ফলে জেফ বেজোসের মালিকানাধীন ব্লু অরিজিনের মতো মহাকাশ সংস্থা অর্ধশতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের মতো মহাকাশচারীদের চাঁদে অবতরণের জন্য চন্দ্রযান তৈরির সুযোগ পেতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনচন্দ্র অভিযানে দেরি করবে নাসা০৭ ডিসেম্বর ২০২৪নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শন ডাফি ফক্স নিউজের ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি এই চুক্তিটি আবার উন্মুক্ত করার প্রক্রিয়ায় আছি। আমার ধারণা, ব্লু অরিজিনের মতো কোম্পানিগুলো এতে অংশ নেবে। হয়তো অন্যরাও আসবে।’
২০৩০ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে পাঠানোর নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে চীন। এমন পরিস্থিতিতে নাসার আর্টেমিস চন্দ্র অভিযান কর্মসূচি দ্রুত এগিয়ে নিতে এবং স্পেসএক্সকে স্টারশিপ চন্দ্রযান তৈরিতে অগ্রগতির জন্য উৎসাহিত করতে সংস্থাটির অভ্যন্তরে কয়েক মাস ধরে চাপ বাড়ছিল। এই চাপের মধ্যেই নতুন করে চন্দ্রযান নির্মাণের চুক্তি উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিলেন শন ডাফি।
নাসার চন্দ্র অভিযান সংক্রান্ত কৌশলে এটি অনেক বড় পরিবর্তন। দুই বছরের মধ্যেই নির্ধারিত সময়ে চাঁদে অবতরণের লক্ষ্য সামনে রেখে কারা চন্দ্রযান তৈরি করবে, তা নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে। ব্লু অরিজিন এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে লকহিড মার্টিন জানিয়েছে, তারা একটি দল গঠন করে নাসার প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।
আরও পড়ুনইলন মাস্কের স্পেসএক্স স্টারশিপের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন১৪ অক্টোবর ২০২৫২০২১ সালে একটি চুক্তির অধীন স্টারশিপ চন্দ্রযান তৈরির জন্য স্পেসএক্সকে বেছে নিয়েছিল নাসা। ওই চুক্তির বর্তমান মূল্য ৪৪০ কোটি ডলার। লক্ষ্য ছিল ২০২৭ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে পাঠানো। তবে নাসার উপদেষ্টারা মনে করছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কারণে এ সময়সীমা কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে পারে।
স্পেসএক্সের চাঁদে অবতরণ যান তৈরির বিষয়ে নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শন ডাফি বলেন, তাঁরা অসাধারণ সব কাজ করছে; কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা থেকে পিছিয়ে আছে।
শন ডাফি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চান, ২০২৯ সালে হোয়াইট হাউসে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যেন এই অভিযান সম্পন্ন হয়।
তবে নাসার এ ঘোষণায় কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি বলেন, মহাকাশশিল্পের অন্য কোম্পানির তুলনায় স্পেসএক্স বজ্রগতিতে এগোচ্ছে। স্টারশিপই শেষ পর্যন্ত পুরো চন্দ্র অভিযান সম্পন্ন করবে।
আরও পড়ুনচন্দ্র মিশনের জন্য নতুন ১০ নভোচারীর নাম ঘোষণা করল নাসা২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫