সিলেট সীমান্তে চোরাকারবারিদের হামলা ঠেকাতে বিজিবির গুলি, যুবক নিহত
Published: 22nd, October 2025 GMT
সিলেটের জৈন্তাপুরে চোরাকারবারিদের হামলা ঠেকাতে গুলি চালিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে চারাকাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের আক্রমণে একজন বিজিবি সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে বিজিবি।
নিহত আলমাস উদ্দিন (৩০) জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের নয়াখেল পূর্ব গ্রামের শরিফ উদ্দিনের ছেলে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, জৈন্তাপুর সীমান্ত এলাকায় চোরাই পণ্য ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বিজিবি। বুধবার সকালে বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছিলেন। বেলা ১১টার দিকে চারিকাটা ইউনিয়ন দিয়ে চোরাই পণ্যে ভর্তি পিকআপ প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে বিজিবির টহল দল পিকআপটিকে ধাওয়া করে। এতে চোরাচালনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা চালান। এ সময় চোরাকারবারিদের হামলা প্রতিহত করতে বিজিবি সদস্যরা গুলি ছোড়ে। এ সময় এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। পরে গুলিবিদ্ধ যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
সিলেটের জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, বিজিবির গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। নিহতের মরদেহ জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। পুলিশ নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
এ ঘটনার পর বুধবার বিকেলে বিজিবি-১৯ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চোরাকারবারিদের ক্রমাগত আক্রমণ থেকে সরকারি সম্পদ (অস্ত্র ও গোলাবারুদ) ও টহল দলের সদস্যদের জানমাল রক্ষার্থে বিজিবি সদস্যরা নিরুপায় হয়ে ৪-৫টি ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারীদের আক্রমণে একজন বিজিবি সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ র ক রব র দ র টহল দ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা অনুষ্ঠান ‘সবকিছুর আগে ভালো মানুষ হতে হবে’
প্রধান অতিথি হয়ে আসা কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ কুমার বড়ুয়াসহ অনুষ্ঠানের মঞ্চে বসা অন্তত আটজন বক্তাসহ আরও ছয়জন বক্তব্য দিলেন। ১৪ বক্তার সবারই মূল উপদেশ-আগে ভালো মানুষ হতে হবে। শুধু ভালো লেখাপড়া বা ভালো ছাত্রছাত্রী হলেই চলবে না, মেধাবী হলেই চলবে না, সবাইকে দেশপ্রেমিক হতে হবে। মানবিক মানুষ হতে হবে। মাদক, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম ব্যাচে ভর্তি হওয়া স্নাতক প্রথম বর্ষের প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের স্পোর্টস সেন্টারে এ অনুষ্ঠান হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মো. আশরাফুল মুনিম খান এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক সামিয়া জাহান ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ছহীহ শাফি। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ট্রেজারার অধ্যাপক আনিছা পারভীন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
প্রধান অতিথি দিলীপ কুমার বড়ুয়া তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে উচ্চমূল্যবোধ তৈরি ও নিজেকে প্রজ্বলিত করা। শুধু ভালো শিক্ষার্থী বা ফলাফল করলেই হবে না। তোমাদের সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে। দেশকে ভালোবাসতে হবে। সর্বোপরি একজন ভালো মানুষ হতে হবে।’
নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আশরাফুল মুনিম খান বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে একটি আধুনিক ও গবেষণানির্ভর আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক ও মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। এই বিশালত্বের মধ্যে ভালো-মন্দ সবই আছে। তোমরা ভালোকে গ্রহণ কর। নিজেকে শুদ্ধ, মার্জিত, রুচিশীল ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন সর্বোপরি একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।’
২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শেখ হাসিনার নাম বাদ দিয়ে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। শহরের রাজুরবাজার এলাকায় ৪৯৮ দশমিক ৪৫ একর জমিতে স্থাপিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। একনেকে ২ হাজার ৬৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাজুরবাজার এলাকায় টিটিসিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছিল। সম্প্রতি নিজস্ব ক্যাম্পাসে দুটি ভবন উদ্বোধন হয়। বর্তমানে তিনটি অনুষদে চারটি বিভাগ চালু আছে। এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৩৭ জন, শিক্ষক ৩০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংখ্যা ৯০ জন।