নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে রণাঙ্গনের যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছিলেন।

উনি সব সময় বলেছিলেন এবং মনেপ্রানে বিশ্বাস করতেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে কোন শব্দ নাই । সবাই এদেশের জনগণ তারা আমাদের ভাই। তাদের বিপদ-আপদে সব সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীদের থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

আর আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন এদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলিম সবাই ভাই ভাই, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’।

‎গতকাল রাতে মদনগঞ্জ নমুনা বাজার হরিজন পল্লীতে শ্রী শ্রী শ্যামা পূজার পরিদর্শন এসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল এসব কথাগুলো বলেন।

‎তিনি বলেন, কারন আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সবার সবান অধিকার আছে বাংলাদেশে বাস করার। দেশের সকল শ্রেণীর জনগণকে নিয়ে আমাদের নেতা তারেক রহমান সুন্দর একটি আগামীর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। যে স্বপ্নতে আপনারা কখনোই কষ্ট পাবেন না।

সেখানে আপনারা আমরা সবাই মিলেমিশে একসাথে বসবাস করবো। কারণ আমরা হিন্দু ভাই-বোনদের পাশে আছি। বিগত দুর্গাপূজায় আমাদের নেতাকর্মীরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ মোতাবেক আপনাদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতে থাকবো। আজকে এই শ্যামা পূজা আপনারা আমাকে দাওয়াত করায় আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

‎তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক আমার যতটুকু অধিকার আছে বাংলাদেশের ভোগ করার ঠিক ততটুকু অধিকার আপনাদেরও আছে। কারণ আপনারা জানেন বিগত সময় একটি ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় ছিল। আপনারা দেখেছেন তারা সবসময় বলেছিল হিন্দু সম্প্রদায়রা তাদের আপনজন। কিন্তু বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি হিন্দুরা নির্যাতন হয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা।

আপনারা দেখেছেন কুমিল্লাতে মন্দিরে হামলা হয়েছিল এমপি বাহারের নেতৃত্বে আর ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িগুলো লুটপাট করা হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। শুধু তাই না রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্ন জায়গায় যে হামলা হয়েছিল তা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা করেছিল। এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি হিন্দু সম্প্রদায় জাগা সম্পত্তি দখল করেছিল আওয়ামী লীগের লোকজন।

বিএনপির নেতাকর্মীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আপনাদের যেকোন প্রয়োজন আপনারা আমাদেরকে ডাকবেন আমরা ভাই হিসাবে আপনাদের পাশে থাকবো। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা কর্মীরা বেঁচে থাকতে আপনাদের বিন্দু ক্ষতিও হবে না। আমরা যেমন আপনাদের পাশে এখনো আছি আগামী তো থাকবো আপনার সুন্দরভাবে আপনাদের সকল পূজা-পড়বন ও ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন।

‎পরিদর্শনকালে পূজা মন্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজলসহ নেতাকর্মীদেরকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তারা। এবং হরিজন পল্লীতে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজলকে পাওয়ায় তারা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

‎এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন রিপন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির ১ম সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ, ‎মদনগঞ্জ নমুনা বাজার হরিজন সমাজ সেবা সংঘের সভাপতি প্রতাপ বাবু, সাধারণ সম্পাদক বাদল রায় বানু, সহ- সভাপতি বাবু, পূজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি  রাজেশ সাধারণ সম্পাদক শুভ চন্দ্র প্রমুখ।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ র ন ত কর ম আপন দ র প ব এনপ র কর ম র আম দ র হয় ছ ল কম ট র আপন র রহম ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ডা. জুবাইদার আগমন: ভিউয়ের প্রতিযোগিতা ও সাংবাদিকতার নৈতিক সংকট

সাংবাদিকদের বলা হয় ‘জাতির বিবেক’আর সাংবাদিকতাকে বলে ‘ফোর্থ পিলার অব স্টেট’। সমাজ ও রাষ্ট্রের দর্পণ হিসেবে কাজ করাই যার মূল লক্ষ্য; কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের একটি অংশের আচরণ সাধারণ মানুষের মনে গভীর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

নিউজের চেয়েও ভিউজের দিকে মনোযোগ বাড়াতে গিয়ে সাংবাদিকতাকে হাসির খোরাক বানিয়েছে কিছু অত্যুৎসাহী সংবাদমাধ্যম। অবাক করা বিষয় হলো এই তালিকায় শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমও রয়েছে।

যার সর্বশেষ উদাহরণ পাওয়া গেল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বাংলাদেশে আগমনে। তাঁর লন্ডন থেকে ঢাকায় আগমন এবং তৎপরবর্তী ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে কিছু সংবাদমাধ্যম যে অতি উৎসাহ ও অপরিণামদর্শী আচরণ প্রদর্শন করেছে, তা সাংবাদিকতার নীতিনৈতিকতার সংজ্ঞাকেই প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

কৌতূহল মেটানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা

ডা. জুবাইদা রহমান তাঁর অসুস্থ শাশুড়ি, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দেশে ফিরেছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় এই মুহুর্তের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। ফলে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং জিয়া পরিবারের সদস্য হিসেবে তাঁর দেশে ফেরা সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে; কিন্তু সমস্যাটা সংবাদ প্রকাশে নয়, সংবাদ পরিবেশনের ধরন ও বাড়াবাড়ি নিয়ে। কিছু সংবাদমাধ্যম এটি করেছে, যা নিয়ে সচেতন নাগরিক সমাজেও সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

ডা. জুবাইদার লন্ডনে বিমানে ওঠা থেকে শুরু করে ঢাকার বিমানবন্দরে অবতরণ, ইমিগ্রেশন পার হওয়া, ভিআইপি গেট দিয়ে বের হওয়া, কোন গাড়িতে উঠলেন, কোন পথ দিয়ে হাসপাতালে গেলেন, কোন ফ্লাইওভার ব্যবহার করলেন, কখন এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছালেন—প্রতিটি মুহূর্তের এমন পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ কি আসলেই জনগুরুত্বপূর্ণ সংবাদ? নাকি এটি নিছকই কৌতূহল মেটানোর এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা?

একটি গাড়ি কোন ফ্লাইওভার দিয়ে যাচ্ছে, তা জানা জাতির জন্য কতটা জরুরি, তা গবেষণার বিষয়। এই ধরনের লাইভ ট্র্যাকিং বা ‘ধাওয়া করা সাংবাদিকতা’ কেবল হাস্যকরই নয়; বরং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। সাংবাদিকতা যখন ‘গোয়েন্দাগিরি বা ‘পাপারাজ্জি’ সংস্কৃতির স্তরে নেমে আসে, তখন তথ্যের চেয়ে সস্তা বিনোদনই মুখ্য হয়ে ওঠে।

ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ

ঘটনার এখানেই শেষ নয়, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশযাত্রার সম্ভাব্য সফরসঙ্গীদের তালিকা প্রকাশের নামে কিছু সংবাদমাধ্যম নজিরবিহীন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গীদের নাম, পাসপোর্টের নম্বর এবং মুঠোফোনের নম্বরের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এর জন্য বিএনপির দায়িত্বশীল মহল দায় এড়াতে পারে না। এ তথ্যগুলো ব্যবহার করে যে কেউ সাইবার অপরাধ বা জালিয়াতির আশ্রয় নিতে পারে। কিন্তু খবরের জৌলুশ বাড়াতে গিয়ে এমন সংবদেনশীল ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করেছে কিছু সংবাদমাধ্যম।

সাংবাদিকতার নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে, জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট না হলে কারও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। কারও পাসপোর্ট নম্বর বা ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বর প্রকাশ করা কি জনস্বার্থের অন্তর্ভুক্ত? এটি সরাসরি ডেটা প্রাইভেসি বা ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা সব খবর বা তথ্যই কি প্রকাশ করা পেশাদারির মধ্যে পড়ে?

হাসপাতালের পরিবেশ বিঘ্ন

ডা. জুবাইদা রহমান যখন এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান, তখন সেখানকার দৃশ্য ছিল আরও করুণ। শত শত ক্যামেরা, ইউটিউবার ও মূলধারার মিডিয়াকর্মীদের ভিড় হাসপাতালের প্রবেশপথকে কার্যত এক জনসভায় পরিণত করেছিল। হাসপাতালের মতো স্পর্শকাতর জায়গা, যেখানে নীরবতা ও শৃঙ্খলা কাম্য, সেখানে সংবাদমাধ্যমের এই হুলুস্থুল আচরণ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্টাফ, অন্যান্য রোগী ও তাঁদের স্বজনদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়েছে।

হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের পথ আটকে, অন্যান্য রোগীর স্বজনদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়ে ডা. জুবাইদার গাড়ির পেছনে দৌড়ানোর দৃশ্য দেখে মনে হয়েছে, এটি কোনো সংবাদ সংগ্রহ নয় বরং কোনো অ্যাকশন সিনেমার শুটিং চলছে। যেসব সাংবাদিক এমনটা করছেন তাঁরা কি ভুলে গেছেন, হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীরা থাকেন? তাঁদের এই হট্টগোল মুমূর্ষু রোগী ও হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্মে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে? ‘ব্রেকিং নিউজ’ দেওয়ার নেশায় মানবিক বোধটুকু বিসর্জন দেওয়া কোন ধরণের সাংবাদিকতা!

ডা. জুবাইদার ঘটনাই একমাত্র উদাহরণ নয়, ভিউয়ের নেশায় মত্ত হয়ে আমাদের অনেক সংবাদমাধ্যম এমন অত্যুৎসাহী লাইভ, ব্রেকিং ও এক্সক্লুসিভ দেওয়াকে রুটিনে পরিণত করেছে।

কেন এমন আচরণ

প্রশ্ন হলো, অনেক সাংবাদিক কেন এমন আচরণ করছেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে বর্তমান সময়ের সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘রিচ বাড়ানো’ বা ভিউ–বাণিজ্যের মধ্যে। এখন খবরের মান যাচাই করা হয় সত্যতা বা গভীরতা দিয়ে নয়; বরং কত দ্রুত সেটি ফেসবুকে ভাইরাল হলো এবং কত বেশি ভিউ পেল, তার ওপর ভিত্তি করে।

অনলাইন পোর্টাল এবং কিছু টেলিভিশন চ্যানেল টিআরপি ও ভিউ বাড়ানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। মানুষের আবেগ, কৌতূহল এবং ব্যক্তিগত বিষয়কে পুঁজি করে তারা চটকদার শিরোনাম তৈরি করছে। জুবাইদা রহমানের গাড়ির পেছনে দৌড়ানোর ভিডিও হয়তো ইউটিউবে লাখ লাখ ভিউ এনে দিচ্ছে, বিজ্ঞাপন থেকে আয় বাড়াচ্ছে; কিন্তু এতে সাংবাদিকতার মর্যাদা ধুলা মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যখন সাংবাদিকতা বাণিজ্যের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে, তখন পেশার নীতি–নৈতিকতার বালাই থাকে না। সাংবাদিকেরা তখন আর ‘ওয়াচডগ’ থাকেন না, হয়ে ওঠেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর।

দেশে কি সংবাদের সত্যিই অভাব? উত্তর হলো ‘না’। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনীতি, ডেঙ্গু পরিস্থিতি, পরীক্ষা বন্ধ রেখে শিক্ষকদের আন্দোলন, অর্থনৈতিক সংকট, ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মতো অসংখ্য জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় যখন মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে, তখন মিডিয়ার একটি বড় অংশ ব্যস্ত একজন ব্যক্তির গাড়ির রুটম্যাপ তৈরিতে। এটি কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মূল সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর কৌশল? নাকি এটি কেবলই মেধা ও মননশীলতার সংকট?

মিডিয়া যখন জনগণের কথা না বলে চটকদার বিষয় নিয়ে মেতে থাকে, তখন তারা জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়। ডা. জুবাইদা রহমানের আগমন অবশ্যই একটি ঘটনা; কিন্তু সেটিই একমাত্র বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যু হতে পারে না। তাই এখনই সময় এই অপসাংবাদিকতার লাগাম টেনে ধরার। ‘জাতির বিবেক’খ্যাত সাংবাদিকদের আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখা প্রয়োজন। মাইক্রোফোন বা ক্যামেরা হাতে নিলেই যা খুশি তা করা যায় না, এই বোধোদয় জরুরি। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন পক্ষের কিছু করণীয় রয়েছে।

প্রথমত, সাংবাদিকদেরই বুঝতে হবে পাপারাজ্জি আর সাংবাদিকতা এক নয়। সাংবাদিকতা মানে দায়িত্বশীলতা। সংবাদমাধ্যমগুলোকে তাদের কর্মীদের নিয়মিত নীতিনৈতিকতা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তাবিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সম্পাদক ও বার্তাকক্ষের নীতিনির্ধারকদের আরও কঠোর হতে হবে। ভিউ বাড়ানোর জন্য যেকোনো সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করার আগে সম্পাদকীয় নীতি অনুসারে যাচাইপ্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে।

এ ছাড়া সরকারের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে, প্রয়োজনে ক্যাম্পেইন করা যেতে পারে। তবে এ আইন যেন গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করে বরং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ঢাল হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি হাসপাতাল বা স্পর্শকাতর এলাকায় মিডিয়ার আচরণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন।

গণমাধ্যমকর্মী ও সরকারের পাশাপাশি পাঠকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। চটকদার ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারী সংবাদ বর্জন করার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভিউ না পেলে তখন মিডিয়াও তাদের পলিসি বদলাতে বাধ্য হবে।

ডা. জুবাইদা রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে আমাদের কিছু সংবাদমাধ্যমের যে আচরণ দেখা গেল, তা আমাদের সাংবাদিকতার রুগ্‌ণ দশাটিই প্রকট করে তুলেছে। সংবাদমাধ্যমগুলো যদি এখনই নিজেদের সংশোধন না করে, তবে তারা কেবল হাসির খোরাকই হবে না; বরং সমাজের চোখে অবিশ্বাস আর বিরক্তির প্রতীক হয়ে উঠবে। আমরা চাই না আমাদের সাংবাদিকেরা সত্যের পেছনে দৌড়াক। তাঁরা যেন তথ্যের ফেরিওয়ালা হন, গুজবের নয়। দায়িত্বশীল সাংবাদিকতাই পারে এই পেশার হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনতে।

ইয়াসির সিলমী সভাপতি, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। ই-মেইল: [email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনা আমাদের আসন ও টাকা অফার করেছিল: নুরুল হক নুর
  • নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ ভিন্ন সুরে কথা বলছে: জামায়াতের আমির
  • দাদাগিরি আর বরদাশত করা হবে না: জামায়াত আমির
  • ডা. জুবাইদার আগমন: ভিউয়ের প্রতিযোগিতা ও সাংবাদিকতার নৈতিক সংকট
  • খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মাসদাইর কবরস্থান মসজিদে মাসুদুজ্জামানের দোয়া
  • ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষণের মান বৃদ্ধির চিন্তা করছে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • দুর্ভিক্ষের সময় খলিফা উমর (রা.)-এর মানবিক নেতৃত্ব
  • বগুড়া-৪ আসনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট চাইলেন তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি
  • প্রথম আলো বাংলাদেশের মানুষের বিজয়ের সঙ্গী
  • বাংলাদেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে জোটকেন্দ্রিক আলোচনা চলতে থাকবে: সারজিস আলম