সাতক্ষীরার শ্যামনগরে জলবায়ু সংকট মোকাবেলা ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠনের আয়োজনে বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশ বিদ্যা শিখন কেন্দ্রে ‘জলবায়ু সংকট, এগ্রোইকোলজি ও উপকূলের স্থানীয় অভিযোজন কৌশল’ বিষয়ক এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

আরো পড়ুন:

জলবায়ু ও জ্বালানি রূপান্তরে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদার করা জরুরি

জলবায়ু পরিবর্তনে বদলাচ্ছে রোগের চিত্র, বাড়ছে বিরল সংক্রমণ 

প্রশিক্ষণের শুরুতে অংশগ্রহণকারীরা ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশ বিদ্যা শিখন কেন্দ্র পরিদর্শনের মাধ্যমে অভিযোজন চর্চার নানা কৌশল সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন।

এ সময় শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠনের সভানেত্রী অল্পনা রানী জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক তৈরি ও ব্যবহার বিধি সম্পর্কে আলোচনা করেন। এছাড়া পানির সংকট ও জলবায়ু সহনশীল কার্যকর উপায় হিসেবে স্যালাইন পদ্ধতি, ক্যারেট বা ঝুঁড়িতে চারা তৈরি, ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অল্পনা রানী বলেন, “উপকূলীয় অঞ্চল দুর্যোগ প্রবণ ও জলবায়ু সংকটাপন্ন এলাকা। লবণাক্ততা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলাবদ্ধতা, পানির সংকট ইত্যাদি মোকাবিলা করে সারা বছর ফসল চাষের জন্য পরিকল্পিতভাবে কৃষি কাজ করতে হবে।”

তিনি বলেন, “বাজারের খাবার একদিকে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে, অন্যদিকে অর্থ ব্যয় বৃদ্ধি করছে। এজন্য বাড়ির পতিত জায়গার উপযুক্ত ব্যবহার করে ও জৈব সার এবং বালাইনাশক দিয়ে ফসল উৎপাদন করতে পারলে বাজার নির্ভরতা অনেকাংশে কমবে।”

কর্মশালায় মথুরাপুর কৃষিপ্রতিবেশ বিদ্যা শিখন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক সরমা রানী নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে উপকূলে চাষাবাদের জন্য কার্যকর টাওয়ার, জলপট্টি ও প্রাকৃতিক মালচিং, হলুদ কার্ড, নীল কার্ড ও ফেরোমন টোপ ব্যবহারের কৌশল হাতে কলমে শেখান।

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব বাছাড় বস্তায় আদা, রসুন, পেয়াজসহ অন্যান্য সবজি চাষে মাটি প্রস্তুত প্রণালী, বেড পদ্ধতিতে সবজি চাষ এবং জৈব উপায়ে বীজ শোধন প্রক্রিয়া, সমন্বিত ফসল চাষ ও মিশ্র চাষাবাদ পদ্ধতি তুলে ধরেন এবং উপকূলীয় ফসল চক্রের বর্ণনা দেন। 

কর্মশালায় বারসিক কর্মকর্তা বরষা গাইনের সঞ্চালনায় ও ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশ বিদ্যা শিখন কেন্দ্রের প্রতিনিধি অল্পনা রানী মিস্ত্রির সভাপতিত্বে অন্যদের মাঝে অংশ নেন, বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদারসহ ২৫ জন কৃষক, কৃষাণী ও যুব উদ্যোক্তারা।

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জলব য ব যবহ র জলব য় উপক ল

এছাড়াও পড়ুন:

শিগগির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে চান না ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে শিগগিরই সরাসরি কোনো বৈঠক হচ্ছে না। গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিন রাতেই পাল্টাপাল্টি ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এতে ইউক্রেনে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন।

পুতিনের সঙ্গে সোমবার ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। ওই ফোনালাপে হাঙ্গেরিতে দুজনের মধ্যে বৈঠকের বিষয়ে ঐকমত্য হয়। ক্রেমলিন থেকে জানানো হয় যে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। মূলত রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে এই বৈঠকের কথা ছিল। এর আগে আলাস্কায়ও সরাসরি বৈঠক করেছিলেন দুই নেতা।

ফোনালাপের পরদিন হোয়াইট হাউস জানায়, পুতিনের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের। কারণ, তিনি ব্যর্থ কোনো বৈঠক করতে চান না। এ বিষয়ে মস্কোর মতও একই। তবে এমন বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, বৈঠকের কোনো দিন নির্ধারণ হয়নি। আর প্রস্তুতির জন্য সময় প্রয়োজন।

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে শিগগিরই বৈঠকের বিষয়টি নাকচ করা হলেও, মস্কোর দিক থেকেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি রাশিয়ার পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। রয়টার্সকে তিনি বলেন, বৈঠকের প্রস্তুতি এখনো নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বড় কোনো বাধা দেখতে পাচ্ছেন না। এটি একটি কঠিন প্রক্রিয়া। তবে এটাই কিন্তু কূটনীতিকদের কাজ।

বৈঠক বিলম্বিত হওয়ার খবর এমন সময় এল, যখন ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তির জন্য নিজেদের পুরোনো শর্তগুলোর ওপর আবার জোর দিচ্ছে মস্কো। শর্তগুলোর একটি হলো ইউক্রেনের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলজুড়ে থাকা পুরো দনবাস এলাকা রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দেওয়া। যদিও যুদ্ধক্ষেত্রে সম্মুখসারি বরাবর সংঘাত থামানোর যে প্রস্তাব ট্রাম্প দিয়েছেন, তারও বিরুদ্ধে যায় এসব শর্তগুলো।

এদিকে ট্রাম্প–পুতিন বৈঠকের পেছানোর খবর আসার পর মঙ্গলবার রাতে পাল্টাপাল্টি ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা আজ বুধবার জানিয়েছেন, রাশিয়ার হামলায় রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। হামলায় অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ