চাঁদপুর শহরের প্রতাপসাহা রোড এলাকার একটি বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে স্বামী ছিল ফ্যানের সাথে রশি বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত, আর মেঝেতে পড়েছিল স্ত্রীর লাশ। দুজনের মৃত্যুর কারণ ‘রহস্যজনক’ বলছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মরদেহগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকুল চাকমা।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই কালাম জানান, মৃত শিউলি আক্তার ২ সন্তানের জননী। তিনি শহরের ওয়ারল্যাস বাজারের আবু তাহেরের মেয়ে। প্রতাপসাহা রোডে তিনি প্রবাসী স্বামী ইউসুফ মৃধাকে ‘ফাঁকি দিয়ে’ সবুজ নামে এক যুবকের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। 

শিউলি আক্তারের মা খুরশিদা বেগম বলেন, ‘‘দুটি ছেলে সন্তান হওয়ার পর শিউলি আক্তার আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে ঢাকা সাইনবোর্ড ওয়েস্টটেন্ড হেলথ ফার্মা ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে চাকরি নেয়। সে সময় তার একই কোম্পানিতে চাকরি করা সবুজের সঙ্গে পরিচয় হলে সখ্যতা গড়ে উঠে। এক সময় প্রবাসী স্বামীকে ছেড়ে গোপনে সবুজকে দ্বিতীয় বিয়ে করে শিউলি। তারা দুজন চাকরি ছেড়ে চাঁদপুর চলে এসে আলাদাভাবে বাসা ভাড়া নেয়। শিউলি আমাদের কাছে ছিল। পরে সোমবার ১২টায় দ্বিতীয় স্বামী সবুজ ফোন করে শিউলিকে প্রতাপসাহা রোড শাহজাহানের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়াটিয়া বাসায় ডেকে আনে। শিউলির ফোন বন্ধ পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে আমি নাতিকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় এসে দরজা বন্ধ দেখতে পাই। ঘটনাটি পুলিশকে জানানোর পর ঘটনাস্থলে এসে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।’’

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি বাহার মিয়া বলেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রীর দুজনের মৃতদেহ ফ্ল্যাট বাসা থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা বাড়ির মালিক শাহজাহান ও নিহত শিউলি আক্তারের মা খুরশিদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি। তবে জেনেছি নিহত দুজনেই পূর্বে বিয়ে করেছেন। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হবে।’’ 

ঢাকা/অমরেশ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ