গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়েছে। এর মধ্যে গাজা সিটি স্কুলে হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, গাজার উপত্যকার অন্তত দুই–তৃতীয়াংশ জায়গায় এখন আর কোনো ‘নিরাপদ’ অঞ্চল নেই।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের নির্বিচার ও নৃশংস হামলার জেরে গাজার হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ও আশ্রয়শিবির ছেড়ে পালাচ্ছেন। এতে গাজায় আবার বিপুলসংখ্যক মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নতুন করে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষণা করা রাফাহ শহরের দিকে ইসরায়েলি বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। তারা এই শহর দখল করতে চায় বলে খবরে জানানো হয়।

বিপুলসংখ্যক গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়া রাফাহ দখলের ঘোষণা দেওয়ার এক দিন পর ইসরায়েলি বাহিনী উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরের দিকে অঞ্চল অগ্রসর হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও আশ্রয়শিবির থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার গাজাবাসীর শেষ আশ্রয়স্থল ছিল রাফাহ।

মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের নৃশংস ও নির্বিচার হামলায় ১১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা শহরের উত্তরের শহরতলী শেজায়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে বিমান হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গতকাল বিকেলের দিকে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলায় নারী, শিশুসহ ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।

তবে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, ফিলিস্তিনি ‘সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্য করে সেখানে হামলা চালানো হয়েছে।

গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বিত লাহিয়ায় খাবারের জন্য ভিড় করছে মরিয়া ফিলিস্তিনি শিশুরা। ৩ এপ্রিল, বিত লাহিয়া.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ