পর্তুগিজ কোচ হোর্হে জেসুসের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলাল। দুই পক্ষ সমঝোতা করে চুক্তি বাতিল করার কথা উল্লেখ করেছে আল হিলাল কর্তৃপক্ষ। 

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আল হিলাল গত ২৯ এপ্রিলের ম্যাচে আরেক সৌদি ক্লাব আল আহলির বিপক্ষে ৩-১ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে। এরপর আলোচনা করে জেসুস দায়িত্ব ছাড়েন বলে ব্রাজিলের সংবাদ মাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে। 

যদিও আল হিলালের সামনে এখনো পাঁচটি লিগ ম্যাচ বাকি আছে। যা ২৬ মে শেষ হবে। ওই পাঁচ ম্যাচে সৌদি আরবের সাবেক ফুটবলার ও কোচ মোহাম্মদ আল-শালহুব দায়িত্ব পালন করবেন। 

আল হিলাল বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘আল হিলালের বোর্ড ও পর্তুগিজ কোচ জেসুস সমঝোতার মাধ্যমে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। আল হিলালের টেকনিক্যাল স্টাফরা সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখায় ক্লাব তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। বোর্ড শালহুবকে নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ 

ব্রাজিলের কোচের পদ থেকে ডরিভাল জুনিয়রকে ছাঁটাই করার পর থেকেই নতুন কোচ হিসেবে হোর্হে জেসুসের নাম আসছিল। জোর আলোচনায় ছিলেন কার্লো আনচেলত্তি। তবে ইতালিয়ান কোচ আনচেলত্তিকে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় জেসুস নতুন করে সেলেসাওদের কোচ হওয়ার জন্য ফেবারিট হন। 

ফুটবল দলবদল বিষয়ক সাংবাদিক ফ্যাবরিজিও রোমানো দাবি করেছেন, ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) এখনো কার্লো আনচেলত্তির আশা ছাড়েনি। দুই পক্ষ নাকি চুক্তির বিষয়ে সম্মতই আছে। তবে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে সমঝোতা করে আনচেলত্তি কীভাবে বার্নাব্যু ছাড়েন তা দেখার অপেক্ষায় আছে সিবিএফ।

এর মধ্যে হোর্হে জেসুস হুট করে চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় হাওয়া বদলের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। লিগ মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই সাবেক বেনফিকা, ফ্লামেঙ্গো কোচ জেসুস চাকরি ছাড়ায় তিনিই ব্রাজিল দলের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রাজিলের নতুন কোচ হওয়ার ক্ষেত্রে জেসুসের প্লাস পয়েন্ট হলো- তিনি ব্রাজিলের লিগে কোচিং করানোয় ব্রাজিলের ফুটবল সম্পর্কে ধারণা রাখেন। ব্রাজিল ও পর্তুগালের ভাষা একই হওয়াও একটি কারণ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল আল হ ল ল র নত ন ক ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য

দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।

আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।

আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।

কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ