ছবি: প্রথম আলো
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যে কান সম্পর্কে জড়ানোর আগে...
পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটে এসেছেন। মফস্বল শহরে সাধারণত সবারই চেনাশোনা থাকে সবাইকে। তাই নতুন ভাড়াটেদের সঙ্গে পরিচয় হতে অদ্রির খুব ইচ্ছা হলো। তারা পাশাপাশি থাকবেন; একটা সম্পর্ক তো তৈরি হওয়া দরকার। অদ্রির হাজব্যান্ড চাকরি করেন। আর অদ্রি হাউসওয়াইফ। তাই দিনমান সংসারের টুকিটাকি কাজ আর টিভি দেখেই সময় কাটান। নতুন প্রতিবেশীদের সঙ্গে পরিচয় হতে অদ্রির কেমন একটা সংকোচ কাজ করছিল। কীভাবে শুরু করবেন তিনি? কোথা থেকে শুরু করবেন? ওরা তাকে পাত্তা দেবে তো? নাকি ঝামেলা মনে করবেন? এমন হাজারো চিন্তা এসে অদ্রির মাথায় ভিড় করে।
ঘটনা-২ : সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারেন আপন সাহেব। তার অফিসে নতুন কলিগ এসেছেন। তাও আবার সুন্দরী। বেশ চটপটেও। আপন স্বাভাবিকভাবে অফিসের কাজ করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু বারবারই তার দৃষ্টি চলে যায় নতুন কলিগের দিকে।
ঘটনা-৩ : তমাল, মিকু, সাকিব, আফরোজা আর অরণিরা একসঙ্গে বিকেলে প্রায়ই আড্ডা দেন। তাদের সঙ্গে নতুন যোগ দিতে এলেন মিকুর গার্লফ্রেন্ড সুহা। কিন্তু আফরোজা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেন না। কারণ মিকু এতদিন এ কথাটা কাউকেই বলেননি যে তার গার্লফ্রেন্ড আছে। আর আফরোজার সঙ্গেও মিকু এর আগে ডেট করেছেন। ফলে এখানে একটা কনফ্লিক্ট সৃষ্টি হলো খুব সহজেই।
সম্পর্ক আসলে যা : একের অধিক মানুষের সঙ্গে পরিচয়, কথা বলা, শেয়ারিং যখন রেগুলার হয় তখনই আমরা বলতে পারি তাদের মাঝে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সম্পর্কটা হতে পারে প্রতিবেশী, ক্লাসফ্রেন্ড, বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড, স্বামী-স্ত্রী ইত্যাদি। শুরুতে সবার মাঝেই একটা দেয়াল থাকে। স্বতঃস্ফূর্ততা, প্রাঞ্জলতা, কোমলতা, দরদ- এসব ব্যাপার যখন একটা সম্পর্কে থাকে তখন সেই সম্পর্কটা হয় সুন্দর এবং সাবলীল।
সম্পর্কের বোঝা : না, সম্পর্ক কখনও বোঝা হওয়া উচিত নয়। তার আগেই বোঝাপড়া করে নেওয়া উচিত। আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে আপনি কখনোই বোঝা মনে করবেন না। যদি করেন তাহলে সেই সম্পর্কে না যাওয়াই শ্রেয়। প্রতিবেশী আপনার ফ্ল্যাটে এসে যদি সমস্যা করে তবে ব্যাপারটা না লুকিয়ে সত্য কথাটা যতটা সম্ভব ভদ্রভাবে বলার চেষ্টা করুন। এতে আপনার সন্তানের পড়ালেখা, মনোযোগ সবদিক থেকেই ভালো হবে।
সম্পর্কে আড়াল : হ্যাঁ, এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। সবসময় আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে সবকিছু নিয়ে নিট অ্যান্ড ক্লিন থাকুন। কোনোকিছু লুকানোর চেষ্টা করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে।
সম্পর্কে হীনম্মন্যতা : যার সঙ্গে নতুন সম্পর্কে যাবেন তার আর আপনার স্ট্যটাস যেন প্রায় সমান সমান হয়। অবশ্য সম্পর্কে যেহেতু স্বার্থপরতা থাকে না, সুতরাং আপনার এই হীনম্মন্যতায় না ভোগাই বুদ্ধিমানের কাজ। তারপরও যদি ভুগেন তাহলে ওই রকম সম্পর্কে না যাওয়াই ভালো।
শুরুটা যেভাবে : কারও সঙ্গে পরিচিত হতে চাইলে আগে নিজের পরিচয়টা দেওয়াই শোভনীয়। তবে নিজেকে হাইলাইটস করে আমি ‘অমুক-তমুক’ অত কিছু বলতে যাবেন না। শুধুই নিজের নাম বলুন এবং কোথায় থাকেন, কী করেন দুটি বিষয় অ্যাড করতে পারেন। দ্রুত নয়, ধীরে জানতে চেষ্টা করুন।
সবিশেষ : কারও সঙ্গে একদিনের জন্য পরিচয় হলেও এমনভাবে কথা বলুন যেন আজীবন তিনি আপনাকে মনে রাখেন। আপনার গল্প অন্যকে বলতে বাধ্য হন।
আপনি চাইলেই সেটা সম্ভব। নিজের ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলুন। তবে ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে ‘ভাব’ ধরবেন না। মনে রাখতে হবে, অতি সন্ন্যাসী গাজন নষ্ট বলেও একটা কথা আছে! আপনার সম্পর্ক হোক সুন্দর!