নীলফামারীর স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুলিশ লাইন্স একাডেমিতে নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্রে অন্তত ১০টি ভুল ধরা পড়েছে। এর আগে ইংরেজি প্রশ্নপত্রেও এমন ভুল দেখা গিয়েছিল। এই ঘটনা শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

প্রশ্নপত্রে ধরা পড়া ভুলগুলোর মধ্যে রয়েছে বানান, ব্যাকরণ, বিরামচিহ্ন এবং নির্দেশনার অস্পষ্টতা। চিহ্নিত ভুলগুলোর কয়েকটি হলো: 'শ্রেণী', 'কর্মধারায়', 'কোটি (কোনটি)', 'ব্যাঞ্জনবর্নের', 'রুপতত্ত্বে', 'বর্ন', 'কষ্ঠ বর্ণ', 'বিশ্লেষন', 'ব্যসবাক্য', 'উচ্চরিত', এবং 'উদাহারণ'। 

এছাড়া কিছু প্রশ্নে দ্বৈত নির্দেশনা, ভাঙা বাক্য এবং অপ্রাসঙ্গিক সাহিত্যিক উদ্ধৃতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাংলা শিক্ষক জানান, ভুলের ধরন দেখে মনে হয়েছে প্রশ্নটি প্রাথমিকভাবে কেউ খসড়া করেছিল, পরে সেটিই চূড়ান্ত করেছে। যাচাই হয়নি।

অভিভাবকদের মধ্যে এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, একই প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ও বাংলায় ধারাবাহিকভাবে ভুল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন হচ্ছে, এটা কি কাকতালীয়? 

অভিভাবক আশরাফ আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা প্রতি মাসে সন্তানদের জন্য ৭০০-৮৫০ টাকা বেতন দিচ্ছি। অথচ শিক্ষার মান তো দূরের কথা, প্রশ্ন তৈরিতে সামান্য মনোযোগও নেই।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ লাইন্স একাডেমির অধ্যক্ষ তফায়েল আহম্মেদ বলেন, “প্রশ্নপত্রটি আমি দেখেছি, তাতে ভুল রয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। যিনি প্রশ্নটি তৈরি করেছিলেন, তাকে শোকজ করা হয়েছে। তবে প্রশ্ন তৈরিতে সরাসরি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের তেমন ভুল ছিল না, মূলত টাইপিংয়ের সময় কিছু ভুল হয়েছে, যা যাচাই না করেই ছাপানো হয়েছে।”

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করে দেখছি। যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে।”

শিক্ষানুরাগীরা মনে করছেন, একটি সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা জেলাজুড়ে শিক্ষার মান নিয়ে শঙ্কা তৈরি করেছে। তাদের মতে, যথাযথ তদারকি ও জবাবদিহিতা ছাড়া এসব ভুলের পুনরাবৃত্তি আটকানো সম্ভব নয়।

এছাড়াও, বিদ্যালয়টি থেকে ৫২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাস করেছে ৪৮ জন। অথচ বিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে ৪৮ জন শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে ১০০ শতাংশ পাশের হার দেখানো হয়েছে, যা তথ্যের বিকৃতি। 

গোপন সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে অধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন। এটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনারই ইঙ্গিত দেয়। এই ঘটনাগুলো পুলিশ লাইন্স একাডেমির শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকেই তুলে ধরছে, যা দ্রুত সমাধানের দাবি রাখে।

ঢাকা/সিথুন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আলকারাজের হ্যাটট্রিক নাকি সিনারের প্রতিশোধ

ইয়ানিক সিনারের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না নোভাক জকোভিচ। ২৪টি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী ৩৮ বছর বয়সী সার্বিয়ান এ তারকা সেমিফাইনালে শীর্ষবাছাই সিনারের কাছে ৬-৩, ৬-৩, ৬-৪ গেমে হেরে যান। প্রথম সেমিতে যুক্তরাষ্ট্রের টেলর ফ্রিটজকে হারান কার্লোস আলকারাজ। অর্থাৎ ফ্রেঞ্চ ওপেনের মতো উইম্বলডনের ফাইনালেও আলকারাজ বনাম সিনারের লড়াই দেখা যাবে। ফরাসি ওপেনে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট বাঁচিয়ে জিতেছিলেন আলকারাজ। সেই প্রতিশোধ কী আজ নিতে পারবেন সিনার? নাকি উইম্বলডনে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতবেন স্প্যানিশ সেনসেশন?

সিনারের ফাইনালে আসায় কিছুটা হলেও ভাগ্যের অবদান রয়েছে। গ্রিগর দিমিত্রভের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে এ ইতালিয়ান তারকা প্রথম দুই সেট হেরেছিলেন। ২-২ গেমে এগিয়ে চলা তৃতীয় সেটে হঠাৎই বুকের ব্যথায় কোর্টে পড়ে যান দুরন্ত ছন্দে খেলতে থাকা দিমিত্রভ। তিনি ম্যাচ ছেড়ে না দিলে জকোভিচের বিপক্ষে সিনার খেলতে নামতে পারতেন কিনা সন্দেহ আছে। তবে সেমিতে ২ ঘণ্টার কম সময়ে জকোভিচকে সরাসরি তিন সেটে হারিয়ে দেন তিনি। 

ফাইনালে আলকারাজের বিপক্ষে দারুণ লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সিনার, ‘আমার মনে হয়, ওই হার যদি মাথায় থাকত, তাহলে মাত্র কদিনের ব্যবধানে আরেকটি ফাইনালে খেলতে পারতাম না। আর কার্লোসের সঙ্গে আরও একবার কোর্ট শেয়ার করতে পারব বলে আমি খুব খুশি। আমি জানি, ভীষণ কঠিন লড়াই হবে।’ 

তিনটি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী সিনার এই প্রথম উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছেন। পরিসংখ্যান অবশ্য আলকারাজের পক্ষে। দু’জনের মুখোমুখি হওয়া ১২ ম্যাচের আটটিতে জিতেছেন আলকারাজ, এর মধ্যে সর্বশেষ পাঁচ লড়াইয়ে সবকটিতে হেসেছেন স্প্যানিশ তারকা। তাই ২৩ বছর বয়সী এ ইতালিয়ান প্রতিপক্ষ আলকারাজকে ফেভারিট মানছেন, ‘গত দুবার সে এখানে শিরোপা জিতেছে। আবারও সে ফাইনালে উঠেছে। ঘাসের কোর্টে তাঁকে হারানো বেশ কঠিন। তবে আমি সানন্দে চ্যালেঞ্জটি নিচ্ছি।’

আলকারাজও বেশ সমীহ করছেন সিনারকে। এমনকি ৩৫ দিন আগে রোমাঞ্চকরভাবে জেতা ফ্রেঞ্চ ওপেন এখানে কোনো কাজে আসবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এ স্প্যানিয়ার্ড, ‘আমি নিশ্চিত ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনাল থেকে সে অনেক কিছু শিখেছে। সে এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। জকোর বিপক্ষে পারফরম্যান্সেই বোঝা যায় সে দারুণ ছন্দে রয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ