বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, এখন থেকে মার্কিন ডলারের দাম ঠিক করবে ‘বাজার’। তিনি অবশ্য আশা করেছেন, ডলারের দাম এখনকার দামের আশপাশেই থাকবে। আসলেই কি তা–ই?

২০২২ সালের কথা। তখন ডলারের দর ছিল ৮৬ টাকা। সেই ডলারের দর এখন ১২২ টাকা। অর্থাৎ তিন বছরে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটেছে ৪১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ডলারের দাম বেড়ে গেছে প্রায় ৪২ শতাংশ। অনেকেই সে সময় ডলার কিনে মজুত করেছিলেন। তাঁরা এখন বিপুল সম্পদের মালিক।

অনেকেই ভাবছেন, আবারও কি ডলারের দর লাফ দেবে। ডলার কিনে রাখলেই–বা কী লাভ। বাংলাদেশ কি শ্রীলঙ্কার মতো হবে, ২০২২ সালে যেখানে বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার এক সপ্তাহের মধ্যে ডলারের দর বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ৮০ শতাংশ। বাংলাদেশে কী হবে—এটাই বড় প্রশ্ন।

অর্থনীতির গতি এখন শ্লথ। বিনিয়োগে চরম মন্দা। দেশি বিনিয়োগ যেমন নেই, বিদেশি বিনিয়োগও আসছে না। আমদানিতে তেমন চাঞ্চল্য নেই। শঙ্কার মধ্যেও রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি আছে। গত ১৫ বছরে বৈধ-অবৈধ পথে আয় করা বিপুল সম্পদ ইতিমধ্যে পাচার করেছেন, তাঁরা দেশও ছেড়েছেন।

নতুন করে যাঁরা অবৈধ আয় করছেন, তাঁরা এখনো পাচার করা শুরু করেননি। সে কারণে হুন্ডির চাহিদা আপাতত নেই। আপাতত ডলারের চাহিদাও তেমন একটা নেই। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা হলেও ডলারের দাম এখন বড় লাফ দেবে না। সুতরাং মন্দা অর্থনীতির সুফল হয়তো এখন পাবে বাংলাদেশ।

এর আগেও বাংলাদেশ বিভিন্ন সময়ে বিনিময় হারের ক্ষেত্রে নানা ধরনের পরিবর্তন এনেছে। এর প্রভাবও ছিল নানা ধরনের। যেমন–

২২ জানুয়ারি ১৯৭২

১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি সদ্য গঠিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এ এন হামিদুল্লাহ এক বার্তা সংস্থাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেটাই ছিল বিনিময় হার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দেওয়া প্রথম বক্তব্য। তিনি বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ স্টার্লিং এলাকায় যোগ দেবে। ১ পাউন্ডের সঙ্গে বিনিময়ের মাত্রা হবে ১৮ দশমিক ৯৬৭৭ টাকা। ভারত ও বাংলাদেশের মুদ্রার মান সমান হবে।’

পাকিস্তান আমলেও মধ্যবর্তী মুদ্রা ছিল ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং। স্বাধীনতার পরে সেটা আর পরিবর্তন করা হয়নি। বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতিবেশী ভারতের মুদ্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। যদিও পাউন্ডের দর ছিল পাকিস্তান আমলের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ বাংলাদেশ শুরুতেই একলাফে টাকার অবমূল্যায়ন করেছিল ৩৩ শতাংশ।

তখন অবশ্য আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রা ছিল ডলার। ১৯৭২ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে পাউন্ডের বিনিময় হার ডলারের সঙ্গে ভাসমান বা ফ্লোটিং করা হয়। তখন দেশে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৭ দশমিক ২৭০২৭ টাকা। ব্রিটিশ মুদ্রা পাউন্ড স্টার্লিংয়ের সঙ্গে বিনিময় হারকে সম্পর্কিত করাকেই বলা হয় ‘পেগ’।

১৭ মে ১৯৭৫

দেশে বিনিময় হারে প্রথম বড় পরিবর্তন আনা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৭ মে। ওই দিন টাকার অবমূল্যায়ন করা হয় ৫৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ফলে পাউন্ডের দর দাঁড়ায় ৩০ টাকা, যা আগে ছিল ১৮ দশমিক ৯৬৭৭ টাকা। যদিও খোলাবাজারে পাউন্ডের দর ছিল প্রায় দ্বিগুণ। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ অবমূল্যায়ন।

সে সময় আনুষ্ঠানিক মুদ্রা বিনিময় হারের পাশাপাশি বাজারভিত্তিক সেকেন্ডারি বিনিময় মুদ্রাবাজার চালুর অনুমতি দেওয়া হয়। এতে কার্ব মার্কেটের উদ্ভব ঘটে। সেই কার্ব মার্কেটে পাউন্ডের দাম ছিল আনুষ্ঠানিক দরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

বাংলাদেশ ব্যাংক.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প উন ড র দ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

লোপেজ বললেন, ‘বিচ্ছেদ জীবনের সেরা ঘটনা’

তাঁদের জীবনের গল্প সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই। তুমুল প্রেম, বাগ্‌দানের পর সবাই যখন বিয়ের অপেক্ষায়; তখন হঠাৎই আসে বিচ্ছেদের ঘোষণা। এরপর দীর্ঘ সময় গড়িয়েছে, দুজনই ভিন্ন সম্পর্কে থিতু হয়েছেন। তবে নিয়তি বোধ হয় চেয়েছিল তাঁদের পুনর্মিলন, শেষ পর্যন্ত সেটাও হয়। কিন্তু দুই বছর গড়াতেই সম্পর্ক ভাঙে, সম্পর্কের দ্বিতীয় সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি হলিউডের তারকা দম্পতি বেন অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজ। বিচ্ছেদের পর বছর পার হয়েছে কিন্তু এ বিষয়ে দুই তারকার কেউই তেমন কথা বলেননি। এবার সিবিএস নিউজ সানডে মর্নিং অনুষ্ঠানে এসে বিচ্ছেদ নিয়ে প্রথমবার সবিস্তার কথা বললেন লোপেজ।

একনজরে বেন-লোপেজের সম্পর্ক
প্রথম পরিচয়: ১৯৯৮ সালে, ‘আর্মাগেডন’ ছবির প্রিমিয়ারে।
প্রেম: ২০০২ সালে, ‘গিগলি’ সিনেমার সেটে।
প্রথম বাগ্‌দান: ২০০২ সালে, ২০০৩ সালে বিয়ে করার ঘোষণা।
প্রথম বিচ্ছেদ: ২০০৪ সালে বাগ্‌দান ভেঙে দিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা।
পুনর্মিলন: ২০২১ সালে আবার প্রেম শুরু করেন বেন ও লোপেজ।
দ্বিতীয় বাগ্‌দান: ২০২২ সালে এপ্রিলে দ্বিতীয়বার বাগ্‌দান সারেন।
অবশেষে বিয়ে: ২০২২ সালের ১৬ জুলাই বিয়ে করেন এই তারকা জুটি।
বিচ্ছেদের আবেদন: ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট বিচ্ছেদের আবেদন করেন লোপেজ।

২৮ সেপ্টেম্বর প্রচারিত অনুষ্ঠানে লোপেজ বলেন, বেনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর পর তাঁর উপলব্ধি ছিল, এটা তাঁর জীবনের ঘটে যাওয়া সেরা ঘটনা। বিচ্ছেদকে ‘সেরা ঘটনা’ বলার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে এই গায়িকা-অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা আমাকে বদলে দিয়েছে। এটা আমাকে এমনভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে, যেটা আমার জন্য দরকার ছিল।’

অ্যাফ্লেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা
২০২৪ সালের আগস্টে লোপেজ বিচ্ছেদের আবেদন করেন; চূড়ান্ত হয় ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে। ডিভোর্সের সময়ে লোপেজ শুটিং করছিলেন নতুন ছবি ‘কিস অব দ্য স্পাইডার ওমেন’-এর। এ সিনেমায় তাঁর সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন দিয়েগো লুনা ও টোনাটিউ। এটি ১৯৯৩ সালের ব্রডওয়ে মিউজিক্যাল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি, যা মানুয়েল পুইগের ১৯৭৬ সালের উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই গল্প আগেও ১৯৮৫ সালে সিনেমার পর্দায় এসেছে, যেখানে অভিনয় করেছিলেন উইলিয়াম হার্ট, রাউল জুলিয়া ও সোনিয়া ব্রাগা। নতুন সংস্করণে জেনিফার লোপেজ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যা তাঁর প্রথম মিউজিক্যাল চলচ্চিত্রও বটে।

বেন অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজ। রয়টার্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহর ও গ্রামে সাবানের চাহিদার ভিন্নতা
  • তিন বছর ধরে অবৈধভাবে বগুড়ায় কঙ্গোর নাগরিক, জিম্মি-প্রতারণার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
  • লোপেজ বললেন, ‘বিচ্ছেদ জীবনের সেরা ঘটনা’
  • ‘বিশেষ বিবেচনায়’ হলে থাকেন শিবির সভাপতি, হয়েছেন ভিপি প্রার্থী
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগে ২৫ শিক্ষার্থীর সাজা