চীনের মফকম বৃত্তি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, আইইএলটিএসে প্রয়োজন ৬
Published: 20th, May 2025 GMT
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের চীন সরকারসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা ধরনের আকর্ষণীয় স্কলারশিপ প্রদান করে। চীনের মিনিস্ট্রি অব ফিন্যান্সের অর্থায়নে তেমনই একটি স্কলারশিপ আছে। এর কেতাবি নাম মফকম স্কলারশিপ। বাংলাদেশিরাও এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে আবেদনের সময়সীমায় ভিন্নতা রয়েছে।
চীন এই মুহূর্তে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। দেশটির পড়ালেখার মানও বিখ্যাত। এ স্কলারশিপের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বের অন্যতম সেরা ইউনিভার্সিটির তালিকার প্রথম দিকেই আছে। এ স্কলারশিপ পেলে সম্পূর্ণ টিউশন ফি, বই ও ট্রেনিংসামগ্রীর জন্য ভাতাসহ যাবতীয় খরচ মেলে। এই স্কলারশিপের আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে চীনের ২৭টি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অথবা দুই বছর মেয়াদি স্নাতকোত্তর ও তিন বছর মেয়াদি পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নের সুযোগ দিচ্ছে চীন সরকার।
আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এরপর আবেদনের প্রিন্ট কপি, পাসপোর্টের মেইন পেজের কপিসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের সফট কপি ও হার্ড কপি (দুই সেট) আয়োজক সংস্থায় প্রেরণের জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে পাঠাতে হবে।
সুযোগ–সুবিধা
*সম্পূর্ণ টিউশন ফি পাবেন আবেদনকারী।
*স্নাতকোত্তরের জন্য বছরে ৩৬ হাজার ইউয়ান ভাতা মিলবে।
*পিএইচডিতে ৪৮ হাজার ইউয়ান ভাতা।
*স্থানান্তর ভাতা হিসেবে এককালীন তিন হাজার ইউয়ান।
*বিনা মূল্যে ক্যাম্পাসে আবাসনের সুবিধা।
*বই ও ট্রেনিংসামগ্রীর ভাতা।
*গবেষণার সহায়তা মিলবে।
*মেডিকেল ইনস্যুরেন্স প্রদান করবে।
*চীনে যাতায়াতের বিমান টিকিট প্রদান করবে (এক বছরের বেশি সময়ের কোর্স হলে প্রতিবছর একবার ভ্রমণের জন্য যাতায়াতের বিমান টিকিট)।
আবেদনের যোগ্যতা
*সরকারি কর্মচারী।
*রিসার্চ ফেলো ও ব্যবস্থাপনা খাতে তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা।
*ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করা অভিজ্ঞ প্রফেশনালরা।
*বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
*বয়স ৪৫ বছরের কম হতে হবে।
*আইইএলটিএস স্কোর ৬ থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
*পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
*পাসপোর্টের কপি।
*আবেদনকারীর জীবনবৃত্তান্ত বা একাডেমিক সিভি।
*স্টেটমেন্ট, গবেষণা প্রস্তাবনা ও ক্যারিয়ার ভাবনা।
*দুটি রিকমেন্ডেশন লেটার।
*ইংরেজি ভাষাদক্ষতার প্রমাণপত্র (আইইএলটিএস)।
*ফরেন মেডিকেল সার্টিফিকেট।
*বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনপত্র।
*স্কলারশিপের জন্য পূরণ করা আবেদনপত্র।
আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫আবেদনের প্রক্রিয়া
স্কলারশিপের জন্য দুভাবে আবেদন করা যায়। সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। আবার সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। দূতাবাসের স্কলারশিপ থাকে নির্দিষ্ট ও প্রতিযোগিতামূলক। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু অনলাইনে আবেদন করলেই হয়, আবার কোথাও অনলাইনে আবেদনের সঙ্গে হার্ড কপিও পাঠাতে হয়। স্কলারশিপের আবেদনসংক্রান্ত সব বিষয় ওয়েব পেজে উল্লেখ থাকে।
*বৃত্তির আবেদনসহ বিস্তারিত তথ্যের জন্য ঢুঁ মারতে পারেন
আরও পড়ুনথাইল্যান্ডের এআইটি স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, জেনে নিন সব তথ্য০৪ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা
জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।
হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
আবেদনে যোগ্যতার শর্ত
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—
—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।
—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।
—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।
বয়সসীমা—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।
—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।
—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।
—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।
বৃত্তির সুবিধা
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:
১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।
২। মাসিক ভাতা।
—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।
—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।
—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।
—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।
—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।
—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।
—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।