এবার এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত কুয়েট শিক্ষকদের
Published: 20th, May 2025 GMT
শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো একাত্মতা জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ।
বুধবার সাধারণ সভা করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনে জড়ো হন। এরপর আধা ঘণ্টা তারা উপাচার্যের কক্ষে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শিক্ষকরা দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের বারান্দায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এ কর্মসূচি শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, আমরা ২ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাইনি। তিনি দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছেন। আমরা উপাচার্যের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না। এর দায়ভার উপাচার্যকেই নিতে হবে। তিনি কবে ক্যাম্পাসে ফিরবেন শিক্ষকরা কেউ তা জানেন না।
ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছি বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে হবে। তা না হলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। এটা যদি এমন হয় যে উপাচার্যের একক সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ক্লাসে ফিরতে পারব না, তাহলে আমাদের ১ দফা দাবি জানাতে হবে। উপাচার্য দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা এই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর দুপুর ১টায় সাধারণ সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, উপাচার্য বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন না করলে তার অপসারণের এক দফা দাবিতে ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামবেন।
এদিকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ সেখানে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, নতুন করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। আগের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে তারা একমত। তবে নিরাপরাধ কেউ যেন সাজা না পায়। তারা দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে চান।
তবে গত ৩ মাস ধরে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা গত ২ দিন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। তারা আপাতত চুপচাপ রয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। এ অবস্থায় সেশনজট বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। শুরু হয়নি নতুন ব্যাচের ক্লাসও। ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১৬ দিনেও ক্লাসে ফেরেনি শিক্ষকরা। এছাড়া ১৮ মে থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকেও বিরত রয়েছেন শিক্ষকরা।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপ চ র য র শ ক ষকদ র শ ক ষকর
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল