যুক্তরাজ্যের দৌড়বিদ উইলিয়াম গুডজ মাত্র ৩৫ দিন দৌড়ে অস্ট্রেলিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গেছেন বলে দাবি করেছেন।

উইলিয়ামের বয়স ৩১ বছর। ১৫ এপ্রিল তিনি পার্থের কোটসলো সৈকত থেকে দৌড় শুরু করেন। গতকাল সোমবার বিকেলে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী বন্ডি সৈকতে পৌঁছে তিনি তাঁর দৌড় শেষ করেন। এই ৩৫ দিনে তিনি ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পথ দৌড়েছেন।

উইলিয়ামের দল বলেছে, তিনি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দৌড়াতেন, যা প্রায় দুটি পুরো ম্যারাথন ও একটি হাফ ম্যারাথনের সমান।

উইলিয়াম ইংল্যান্ডের বেডফোর্ডশায়ারের বাসিন্দা। ২০১৮ সালে ক্যানসারে মা আমান্ডার মৃত্যুর পর ম্যারাথন দৌড়ানো শুরু করেন তিনি। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় ম্যারাথন দৌড়ে তিনি তহবিল সংগ্রহ করেন। ক্যানসার নিয়ে কাজ করে এমন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ওই অর্থ দান করেন তিনি।

উইলিয়াম দাবি করেছেন, এবার ৩৫ দিনে আড়াআড়িভাবে অস্ট্রেলিয়ার এক মাথা থেকে আরেক মাথা দৌড়ে তিনি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। অবশ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ এখনো তাঁর দাবি যাচাই-বাছাই করে তাঁকে স্বীকৃতি দেয়নি।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বর্তমানে এই রেকর্ডের মালিক ক্রিস টার্নবুল। তিনি ২০২৩ সালে ৩৯ দিনের কিছু বেশি সময়ে আড়াআড়িভাবে অস্ট্রেলিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে দৌড়েছিলেন।

এর আগের বছর অস্ট্রেলিয়ার ইলেকট্রিশিয়ান নেড ব্রকম্যান একই পথ ৪৭ দিনে দৌড়ে অতিক্রম করেছিলেন। তিনি দাতব্য কাজের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে দৌড়েছিলেন এবং বড় অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন।

নিজের দৌড় শেষ করার ২৪ ঘণ্টা পর উইলিয়াম বিবিসিকে বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছি, তার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল এটা।’

এই দৌড়ের সময় পথে উইলিয়ামকে ধুলাঝড়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে, তাঁর পায়ের আঙুলের বেশ কয়েকটি নখ উপড়ে গেছে, কয়েকবার আহতও হয়েছেন। তাঁর পায়ের পাতার চামড়া ও কোষে ক্ষয় ও সংক্রমণ হয়েছিল, হাড়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়েছিল। এসব কারণে দৃষ্টিবিভ্রমেও আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।

উইলিয়াম বিবিসিকে বলেন, বিশেষ করে প্রথম ৯ দিন ছিল খুবই কঠিন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু ছিল দারুণ চ্যালেঞ্জিং।

তবে শেষ পর্যন্ত দৌড় শেষ করতে পারার কারণে নিজেকে তাঁর আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ একজন মানুষ মনে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এই নাগরিক।

উইলিয়াম বলেন, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে পূর্ব–দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল নাল্লাবর মরুভূমি তাঁর জন্য খুবই কঠিন ও কঠোর ছিল।

তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দৌড় শেষ হওয়ার পর উইলিয়াম বলেছেন, তিনি এখন ‘বেশ স্বস্তি’ অনুভব করছেন।

ফিনিশ লাইন অতিক্রম করার ঠিক পরেই এই দৌড়বিদ তাঁর প্রয়াত মায়ের স্মৃতিতে একটি ফুলের তোড়া রেখে আসেন বিখ্যাত বন্ডি সমুদ্র উপকূলে।

মায়ের কথা বলতে গিয়ে গার্ডিয়ান অস্ট্রেলিয়াকে উইলিয়াম বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। তিনি আমার সবকিছুর জন্য গর্বিত হতেন, আবার চিন্তিতও থাকতেন।’

এই দৌড়বিদ বলেন, তাঁর মা যে সাহসিকতার সঙ্গে ক্যানসারের সঙ্গে লড়েছিলেন, সেই স্মৃতি ছিল তাঁর দৌড়ের পথে এক অনুপ্রেরণা, যা তাঁকে নিজের কষ্টকে ছাপিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

যুক্তরাজ্যের দৌড়বিদ উইলিয়াম গুডজ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইল য় ম ব শ ষ কর র কর ড ৩৫ দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করলে ভারত

ঢাকা ভিত্তিক ‘পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের’ সঙ্গে সহযোগিতামূলক চুক্তি বাতিল করেছে ভারতের আহমেদাবাদ ভিত্তিক ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন (এনআইডি)। 

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এনআইডি জানিয়েছে, ‘জাতীয় অগ্রাধিকার এবং ভাবাবেগের স্বার্থে’ তারা ঢাকা ভিত্তিক পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে। 

বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েক বছর আগে এনআইডি এবং পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট উভয়ই পারস্পরিক উপযোগী শিক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য একটি সহযোগিতামূলক চুক্তি করে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে জাতীয় অগ্রাধিকারের সর্বোচ্চ স্বার্থে এবং জাতীয় ভাবাবেগের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সেই চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। নৈতিক কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এনআইডি সেই সহযোগিতামূলক চুক্তির সমাপ্তি প্রক্রিয়া করেছে।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় ডিজাইন ইনস্টিটিউটগুলোর মধ্যে অন্যতম এনআইডি। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিকভাবে শিল্প, যোগাযোগ, টেক্সটাইল এবং আইটি ইন্টিগ্রেটেড ডিজাইনের জন্য সেরা শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে প্রশংসিত। এটি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক একটি বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা সংস্থা হিসেবেও স্বীকৃত।

অন্যদিকে ১৯৯৮ সালে শুরু হওয়া ‘পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট’ নামক প্রতিষ্ঠানটি ধীরে ধীরে একটি পূর্ণাঙ্গ ফটোগ্রাফি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ফটোগ্রাফির পাশাপাশি, চলচ্চিত্র এবং মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার ওপর বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ