৩৫ দিন দৌড়ে অস্ট্রেলিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গেলেন তিনি
Published: 20th, May 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের দৌড়বিদ উইলিয়াম গুডজ মাত্র ৩৫ দিন দৌড়ে অস্ট্রেলিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গেছেন বলে দাবি করেছেন।
উইলিয়ামের বয়স ৩১ বছর। ১৫ এপ্রিল তিনি পার্থের কোটসলো সৈকত থেকে দৌড় শুরু করেন। গতকাল সোমবার বিকেলে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী বন্ডি সৈকতে পৌঁছে তিনি তাঁর দৌড় শেষ করেন। এই ৩৫ দিনে তিনি ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পথ দৌড়েছেন।
উইলিয়ামের দল বলেছে, তিনি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দৌড়াতেন, যা প্রায় দুটি পুরো ম্যারাথন ও একটি হাফ ম্যারাথনের সমান।
উইলিয়াম ইংল্যান্ডের বেডফোর্ডশায়ারের বাসিন্দা। ২০১৮ সালে ক্যানসারে মা আমান্ডার মৃত্যুর পর ম্যারাথন দৌড়ানো শুরু করেন তিনি। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় ম্যারাথন দৌড়ে তিনি তহবিল সংগ্রহ করেন। ক্যানসার নিয়ে কাজ করে এমন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ওই অর্থ দান করেন তিনি।
উইলিয়াম দাবি করেছেন, এবার ৩৫ দিনে আড়াআড়িভাবে অস্ট্রেলিয়ার এক মাথা থেকে আরেক মাথা দৌড়ে তিনি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। অবশ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ এখনো তাঁর দাবি যাচাই-বাছাই করে তাঁকে স্বীকৃতি দেয়নি।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বর্তমানে এই রেকর্ডের মালিক ক্রিস টার্নবুল। তিনি ২০২৩ সালে ৩৯ দিনের কিছু বেশি সময়ে আড়াআড়িভাবে অস্ট্রেলিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে দৌড়েছিলেন।
এর আগের বছর অস্ট্রেলিয়ার ইলেকট্রিশিয়ান নেড ব্রকম্যান একই পথ ৪৭ দিনে দৌড়ে অতিক্রম করেছিলেন। তিনি দাতব্য কাজের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে দৌড়েছিলেন এবং বড় অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন।
নিজের দৌড় শেষ করার ২৪ ঘণ্টা পর উইলিয়াম বিবিসিকে বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছি, তার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল এটা।’
এই দৌড়ের সময় পথে উইলিয়ামকে ধুলাঝড়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে, তাঁর পায়ের আঙুলের বেশ কয়েকটি নখ উপড়ে গেছে, কয়েকবার আহতও হয়েছেন। তাঁর পায়ের পাতার চামড়া ও কোষে ক্ষয় ও সংক্রমণ হয়েছিল, হাড়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়েছিল। এসব কারণে দৃষ্টিবিভ্রমেও আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।
উইলিয়াম বিবিসিকে বলেন, বিশেষ করে প্রথম ৯ দিন ছিল খুবই কঠিন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু ছিল দারুণ চ্যালেঞ্জিং।
তবে শেষ পর্যন্ত দৌড় শেষ করতে পারার কারণে নিজেকে তাঁর আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ একজন মানুষ মনে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এই নাগরিক।
উইলিয়াম বলেন, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে পূর্ব–দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল নাল্লাবর মরুভূমি তাঁর জন্য খুবই কঠিন ও কঠোর ছিল।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দৌড় শেষ হওয়ার পর উইলিয়াম বলেছেন, তিনি এখন ‘বেশ স্বস্তি’ অনুভব করছেন।
ফিনিশ লাইন অতিক্রম করার ঠিক পরেই এই দৌড়বিদ তাঁর প্রয়াত মায়ের স্মৃতিতে একটি ফুলের তোড়া রেখে আসেন বিখ্যাত বন্ডি সমুদ্র উপকূলে।
মায়ের কথা বলতে গিয়ে গার্ডিয়ান অস্ট্রেলিয়াকে উইলিয়াম বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। তিনি আমার সবকিছুর জন্য গর্বিত হতেন, আবার চিন্তিতও থাকতেন।’
এই দৌড়বিদ বলেন, তাঁর মা যে সাহসিকতার সঙ্গে ক্যানসারের সঙ্গে লড়েছিলেন, সেই স্মৃতি ছিল তাঁর দৌড়ের পথে এক অনুপ্রেরণা, যা তাঁকে নিজের কষ্টকে ছাপিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
যুক্তরাজ্যের দৌড়বিদ উইলিয়াম গুডজ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উইল য় ম ব শ ষ কর র কর ড ৩৫ দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়, আমাদের সম্পদ সীমিত: শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, আমরা গত ১৫ বছরে নিজেদের যুক্তিসঙ্গত বিষয়গুলোকে নিয়ে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে পারিনি। তাই সবাই মনে করছে রাজনৈতিক সরকার আসার আগেই তাদের দাবি দাওয়া পূরণ করে নিতে হবে। কিন্তু পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব না। আমাদের সম্পদ সীমিত। তাই সময় নিয়ে হলেও পরিবর্তনগুলো রাজনৈতিক সরকারকেই করতে হবে।
রোববার সিনেট ভবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, অবশ্যই তোমরা বিশাল কিছু অর্জন করেছ। কিন্তু তোমাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণ-শ্রমজীবী মানুষ তারাও এই অর্জনে ভূমিকা রেখেছে। তাদের সমর্থন ছাড়া তোমরা এটা করতে পারতে না। তোমাদের এই সংগ্রামে বিভিন্ন সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী এগিয়ে এসেছিল।
উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, শিক্ষকের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। তোমাদের হতাশা থাকতে পারে, তোমাদের কিছু দাবি দাওয়া থাকতে পারে কিন্তু তার জন্য জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা যাবে না।
শিক্ষক রাজনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষকদের যে ভূমিকা হবার কথা ছিল সেই ভূমিকা থেকে আমরা বিচ্যুত হয়েছি। আমাদের শিক্ষকদের যে মূল দায়িত্ব সেই দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হবে। আমাদের অবশ্যই রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকবে, রাজনৈতিক দলের সমর্থন থাকবে। কিন্তু এ রাজনৈতিক দলের নেতিবাচক প্রভাবগুলো আমরা আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ফেলতে পারি না।
প্রধান আলোচক অধ্যাপক এ কে এম আজহারুল ইসলাম বলেন, ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে জীবনের ৬২ বছর আমার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেটেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৫৩ সালের এইদিনে যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল আজকের দিন হলো সেই সম্ভাবনার মহীরূপ। আজকের এই দিনে আমরা সেলিব্রেশন করবো ঠিকই, একইসঙ্গে জ্ঞানও আহরণ করব। ঠিক যেসব কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি হয়েছিল, সে বিষয়ে জানবো এবং সেই জ্ঞানকে আমরা ছড়িয়ে দেবো।
আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান প্রমুখ।